
আগামী ৫ জুলাই, শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। কারণ, একই দিনে পালিত হতে যাচ্ছে দুই ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন—উল্টোরথ ও মহররম। এমন দিনে রাজ্যের সম্প্রীতি বজায় রাখতে কোনোভাবেই গাফিলতি চলবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গতকাল বুধবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সচিবালয় নবান্নে জরুরি প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের শীর্ষ আমলা, মন্ত্রী, পুলিশ প্রশাসনসহ ইসকনের প্রতিনিধি রাধারমণ দাস উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘এক বিন্দুও ঢিলেমি চলবে না। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে হবে।’
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া কোনো বেসরকারি ড্রোন আকাশে উঠতে পারবে না। উপকূলীয় পর্যটন কেন্দ্র দিঘায় ব্যারিকেড বসানো হয়েছে, সাধারণ মানুষকে রাখা হবে সেগুলোর বাইরে। তবে দর্শনার্থীদের কাছে পৌঁছে যাবে রথের দড়ি। ভিড় সামলাতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, পদদলিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি যাতে না হয় সেদিকে প্রশাসনের কড়া নজর।
জগন্নাথ মন্দির থেকে রথযাত্রা শুরু হবে ৫ জুলাই। তার আগেই মন্ত্রী পুলক রায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও ইন্দ্রনীল সেন সেখানে পৌঁছে যাবেন বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে তারকেশ্বরের শ্রাবণী মেলা ও অন্যান্য ধর্মীয় জমায়েতেও কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু ধর্মীয় নয়, সাধারণ নাগরিক নিরাপত্তাকেও গুরুত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে হাওড়ায় গাছ পড়ে দুই সিটি করপোরেশন কর্মীর মৃত্যু নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। কেএমডিএ—এর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘এভাবে অব্যবস্থাপনা চলতে পারে না। সব দপ্তরকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’
সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে ৫ জুলাই কেবল ধর্মীয় আয়োজনের দিন নয়, বরং এদিন রাজ্যের সম্প্রীতি, সহনশীলতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার বড় পরীক্ষা। রাজ্য সরকার সতর্ক রয়েছে, এবার রাজ্যবাসীরও চোখ থাকবে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার দিকে।