
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ নতুন করে মাথাচাড়া দিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ বিমান হামলার পর, ইরান জানিয়ে দিয়েছে তারা আর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-র সঙ্গে পূর্বের মতো সহযোগিতা চালিয়ে যেতে পারবে না। মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পরিদর্শকদের নিরাপত্তা ঝুঁকি।
সম্প্রতি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের একাধিক পরমাণু স্থাপনায় লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। এর মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ফোর্ডো, নাটানজ এবং ইসফাহান স্থাপনা হামলার পর IAEA অনুরোধ করে, তারা এই স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে চায়।
কিন্তু সোমবার (৩০ জুন) ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এসমাইল বাঘাই জানান “বর্তমান পরিস্থিতিতে IAEA-র পরিদর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই, আমরা ‘স্বাভাবিক’ সহযোগিতা স্থগিত করছি।”
IAEA এখন আর জানতে পারবে না
- ইরান কীভাবে বা কতটা পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে
- ইরানের পরমাণু প্রকল্প শান্তিপূর্ণ, না কি সামরিক উদ্দেশ্যপ্রসূত তা যাচাই করা কঠিন হয়ে উঠবে
- পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (NPT)-তে ইরানের প্রতিশ্রুতি কার্যত প্রশ্নের মুখে পড়ল
IAEA-র প্রতিক্রিয়া:সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন“ইরানের সঙ্গে স্বচ্ছ যোগাযোগ ও প্রবেশাধিকার অত্যন্ত জরুরি। যেহেতু পরমাণু স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত, তাই তদারকি না থাকলে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে পড়বে।” তিনি আরও জানান, স্যাটেলাইট চিত্রে স্থাপনাগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রমাণ মিলেছে, যদিও এখনও তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মত:
- আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন,
- এটি শুধু ইরান-IAEA সম্পর্কের সংকট নয়,
- বরং পুরো বিশ্বের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ওপর এক বড় ধাক্কা।
- ইরান যদি পরিদর্শন বন্ধ রেখেই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন চালিয়ে যায়, তবে তা মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা আরও উসকে দিতে পারে।
ইরান-আমেরিকা সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে।IAEA-র পরিদর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া এবং সহযোগিতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক কূটনীতির জন্য এক গভীর সংকেত।বিশ্ববাসীর নজর এখন ইরানের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর প্রতিক্রিয়ার দিকে।