ইরানে ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর অভিযান ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এ সহযোগিতা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ)-কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের শীর্ষ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া।বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এক বিবৃতিতে ডেভিড বার্নিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, “অপারেশন রাইজিং লায়ন-ভূমিকা পালনের জন্য আমি আমাদের প্রধান অংশীদার সিআইএকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই অভিযানের পরিকল্পনা প্রণয়ন থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সবক্ষেত্রেই সিআইএ আমাদের সহযোগিতা করেছে।”
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া জানান, ইরানের বিরুদ্ধে পরিচালিত ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এ যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ অপারেশনাল সহায়তা দিয়েছে। ৬ জুন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) জানায়, ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদের মাত্রা এতটাই বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা দিয়ে সহজেই পারমাণবিক অস্ত্র বানানো সম্ভব। এর মাত্র এক সপ্তাহ পর ১৩ জুন রাতেই ইসরায়েল ইরানে এই বিমান অভিযান শুরু করে। জাতিসংঘের ওই সতর্কতা বিবেচনায় রেখেই এই পদক্ষেপ বলে জানান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানের ঠিক কয়েক ঘণ্টা পরই ইরানও জবাব দেয় ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’ শুরু করে। দুই দেশের এই পাল্টাপাল্টি হামলা গত ১২ দিনে ভয়াবহ রক্তপাত ডেকে এনেছে। ইরানে নিহত হয়েছেন অন্তত ৬ শতাধিক মানুষ, যার মধ্যে রয়েছেন একাধিক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা এবং ১০ জনের বেশি পরমাণু বিজ্ঞানী। একই সময়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলেও বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যদিও ইসরায়েল এখনও তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি।
এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়ে ২৩ জুন রাত ১২টার দিকে, যখন তারা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। তার পরদিন ২৪ জুন ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কাতার ও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালায়। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২৪ জুন সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে মোসাদপ্রধান ডেভিড বার্নিয়া সিআইএ’র ভূমিকাকে বিশেষভাবে স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, “ইরানের যে হুমকি গত কয়েক দশক ধরে আমাদের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে রেখেছিল, সিআইএ-এর সহায়তায় তা অনেকটাই কাটানো গেছে।” তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতেও ইরানের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি থাকবে এবং যেকোনো সম্ভাব্য হুমকির ক্ষেত্রে আগেভাগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তথ্যসূত্র: আরটি, এএফপি
