
মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবার যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা নমনীয় অবস্থান দেখাতে শুরু করেছে। ইরানের ওপর দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল রপ্তানি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সম্ভাবনার কথা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটি যেন ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্গঠনে এগিয়ে যেতে পারে, সেই লক্ষ্যেই এমন বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ট্রাম্প ইরান বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। এক সাংবাদিক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমরা চাই ইরান আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক, আর এর জন্য তাদের অর্থের প্রয়োজন।” যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনো ‘সর্বোচ্চ চাপের’ নীতি বজায় রাখছে, তবুও ইরানের পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে তিনি নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করার ইঙ্গিত দেন।
এ বিষয়ে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—ইরান-ইসরায়েল সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির পর চীনের ভূমিকা। এর আগের দিন ট্রাম্প বলেছিলেন, চীন চাইলে ইরানের কাছ থেকে তেল কিনতে পারে। তবে পরে হোয়াইট হাউস এ মন্তব্য পরিষ্কার করে জানায় যে, যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে না। এটি ছিল একধরনের কৌশলগত বার্তা মাত্র।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই ইরানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি চীনা রিফাইনারি (পরিশোধনাগার) ও বন্দরকে লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তারপরও চীন ইরানের অন্যতম শীর্ষ তেল ক্রেতা হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছে এবং শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে এসেছে।
মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ সিএনবিসি-কে বলেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য ছিল চীনের প্রতি একটি ইতিবাচক বার্তা—“আমরা চাই একসঙ্গে কাজ করতে, আমরা তোমাদের অর্থনীতি আঘাত করতে চাই না।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আশা করি, এটি ইরানিদের জন্যও একটি বার্তা হবে।”
চীনের মতো গুরুত্বপূর্ণ শক্তি বরাবরই বলে আসছে যে, ইরানের তেল নিষেধাজ্ঞা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত করছে এবং সাধারণ মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স