
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং এই কর্মসূচি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পারমাণবিক সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি। ইরানের আধা সরকারি সংবাদমাধ্যম মেহের নিউজের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মোহাম্মদ ইসলামি বলেন, ‘উৎপাদন ও সেবাদান প্রক্রিয়ায় যেন কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে, সেই পরিকল্পনাই নেওয়া হয়েছে।’ এই বক্তব্য এমন সময় এল, যখন ইসরায়েল দাবি করেছে—ইরান ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েল বলেছে, তাদের সাম্প্রতিক বিস্তৃত হামলা ছিল ইরানের শীর্ষ সামরিক নেতা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে। তারা বলছে, ইরান যদি এসব অবকাঠামো ঠিক রাখে, তাহলে তা ইসরায়েলকে ধ্বংস করার ঘোষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাবে।
ইরান বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তবে তারা এমন মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যার কোনো শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নেই। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশে বাধা দিয়েছে এবং নিজেদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিও সম্প্রসারণ করেছে। ইসরায়েল বলছে, ইরান ইতিমধ্যে অস্ত্রায়নের দিকে পদক্ষেপ নিয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধে ইরান এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় ১ হাজার ড্রোন ইসরায়েলের দিকে ছুড়েছে। ইরানের এসব ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে ২৮ জন নিহত হয়েছে এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ ও হাসপাতালগুলো।
এ ছাড়া, ইরানের ছোড়া কিছু ক্ষেপণাস্ত্র অ্যাপার্টমেন্ট ভবন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি হাসপাতালেও আঘাত হেনেছে, যার ফলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অপরদিকে, ইসরায়েলও ইরানের সামরিক-বেসামরিক বিপুল পরিমাণ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় অন্তত কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত হাজার খানেক মানুষ। এ ছাড়া, ইরানের বেসামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।