Image description

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার একদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে শাসন পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তার বক্তব্যে উঠে এসেছে ‘এমআইজিএ’ অর্থাৎ মেক ইরান গ্রেট এগেইন। এটি ট্রাম্পের রাজনৈতিক মন্ত্র এমএজিএ-র অর্থাৎ মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইনের প্রতিরূপ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘শাসন পরিবর্তন শব্দটি এখন আর রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়, কিন্তু যদি বর্তমান ইরানি শাসন ইরানকে মহান করতে না পারে, তাহলে শাসন পরিবর্তন কেন হবে না??? এমআইজিএ!!!’

এর একদিন আগে মার্কিন বাহিনী ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের বাংকার-বাস্টার বোমা ফেলে ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ব্যাপক আঘাত হানে। এ হামলার জবাবে তেহরান ঘোষণা করে, তারা যেকোনো মূল্যে আত্মরক্ষা করবে।

এরপর ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলতে থাকে। ইরানে একটি বিস্ফোরণে ছয় সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়, আর তেল আবিবে ইরানি হামলায় বহু মানুষ আহত হয় এবং ভবন ধ্বংস হয়।

এদিকে, মার্কিন প্রশাসন তাদের কূটনীতিকদের পরিবারকে লেবানন ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

 

ট্রাম্প টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে হামলাকে সেনাবাহিনীর বিশাল সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দাবি করেন, ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে। তবে মার্কিন প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা কিছুটা সংযত ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানায়।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ জানায়, হামলার পর কোনো তেজস্ক্রিয়তা বৃদ্ধি হয়নি।

এদিকে, ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই প্রণালী দিয়েই বিশ্বব্যাপী প্রায় এক-চতুর্থাংশ তেল সরবরাহ হয়। এটি বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করে না, তারা কেবল শক্তির ভাষা বোঝে। প্রতিশোধ ছাড়া কোনো কূটনৈতিক আলোচনা হবে না।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি সরিয়ে ফেলার লক্ষ্য প্রায় পূরণ।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী  পিট হেগসেথ স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘এই অভিযান শাসন পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে ছিল না, বরং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা ছিল মূল লক্ষ্য।’