
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল-ইরান উত্তেজনার মধ্যে ইরানে পারমাণবিক নয় এমন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের অভিযোগকে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম পিটিভি নিউজ এই তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এআরওয়াই নিউজ।
ইসলামাবাদের কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সূত্রগুলো এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্রপাগান্ডার অংশ’ বলে অভিহিত করেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সংক্রান্ত খবর ছড়িয়ে পড়লেও পাকিস্তানি কর্মকর্তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, এসব প্রতিবেদনের কোনও সত্যতা নেই।
বিশেষ করে একটি ভুয়া বিবৃতির প্রসঙ্গ টেনে পাকিস্তান জানিয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে পাকিস্তান নাকি ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া’র হুমকি দিয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, পাকিস্তান সামরিকভাবে ইরানের সঙ্গে এই সংঘাতে জড়াচ্ছে—এমন ধারণাও সম্পূর্ণ মনগড়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অভিযোগগুলো মূলত একটি পরিকল্পিত ভুয়া প্রচারণা, যা বিদেশি ও ভারতীয় গণমাধ্যম এবং তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো পাকিস্তানকে কালিমালিপ্ত করা এবং কৃত্রিমভাবে সংঘাতের মধ্যে টেনে আনা।
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহল যখন উত্তেজনা কমাতে আহ্বান জানাচ্ছে, তখন পাকিস্তান এই অবস্থান থেকে সরেনি।
যদিও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, তবে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা মহলের অনানুষ্ঠানিক সূত্র দ্রুততার সঙ্গে এই গুজব ও অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে আলাপ করেন। আলাপের সময় তিনি ইরানের জনগণ ও সরকারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং ইসরাইলের ‘অবাঞ্ছিত ও অন্যায়’ আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইরানের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ড অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলাকে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন।