
ইরান-ইসরাইলের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। ইরানের দাবি, ইসরাইলি দুই যুদ্ধবিমান আকাশসীমায় গুলি করে ভূপাতিত করেছে তারা। পাল্টা হামলায় প্রাথমিকভাবে ইসরাইলে ১০০ ড্রোন ছুড়েছে ইরান। ড্রোনগুলো আকাশসীমা অতিক্রম করে ইসরাইলের দিকে ছুটে গেছে।
এর আগে শুক্রবার ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানে কয়েকটি ধাপে হামলা চালায় ইসরাইল। এর জবাবে ইসরাইলের তেল আবিব ও জেরুজালেমের সামরিক স্থাপনা এবং বিমান ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়েছে ইরান। এতে ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানায় ইসরাইলের জাতীয় অ্যাম্বুলেন্স সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম।
সংস্থাটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই মুহূর্ত পর্যন্ত তেল আবিব এলাকায় হামলার তথ্য পাওয়া ৭টি স্থানে আমাদের দল পাঠানো হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র এফি ডেফরিন এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, রাতে আরও হামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি ইসরায়েলি সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময় রাত আড়াইটার দিকে বিবিসি ও আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। তেল আবিবের আকাশে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখা গেছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সামরিক ঘাঁটি থেকে সাইরেন বাজানো হচ্ছে। জনগণকে সুরক্ষিত স্থানে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে, সেগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে কাজ করছে। পাশাপাশি সর্বসাধারণকে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের পক্ষ থেকে ইসরাইলকে জবাব দেওয়া শুরু হয়েছে। ইসরাইলকে লক্ষ্য করে কয়েক শ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার ভোরে তেহরানে কয়েকটি ধাপে হামলা করে ইসরাইল। এতে ইরানের সেনাপ্রধান, রেভ্যলুশনারি গার্ডের প্রধানসহ কমপক্ষে ৬ জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। এ ছাড়া অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরায়েলকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ও ঊর্ধ্বতন সামরিক নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, এই গল্পের শেষ ইরানের হাতেই লেখা হবে। ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করা মানে সিংহের লেজ নিয়ে খেলা করা। এরপরই ইরান এ হামলার সমুচিত জবাব দেওয়ার কথা জানায়।