
তবে চলমান উত্তেজনার কারণে সোমবার ইস্তাম্বুলে আলোচনাটি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়েছে। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জনিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত না থাকায় মস্কোতে আলোচনার সূচনালগ্নেই ক্ষোভ দেখা দেয়। রাশিয়ার প্রভাবশালী যুদ্ধবিষয়ক ব্লগাররা কিয়েভের বিরুদ্ধে ‘ভয়াবহ প্রতিশোধমূলক হামলা’ চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
কারণ ইউক্রেন রোববার একাধিক ড্রোন দিয়ে সাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রুশ দূরপাল্লার বোমারু ঘাঁটিতে চলমান যুদ্ধের অন্যতম ‘উচ্চাভিলাষী’ হামলা চালায়।
এদিকে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বিলাসবহুল বসফরাস তীরবর্তী চিরাগান প্রাসাদে মুখোমুখি বসা রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের বলেন, ‘সমগ্র বিশ্বের দৃষ্টি এখন এ সংলাপের দিকে নিবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, আপনারা বাস্তবিক অগ্রগতি অর্জন করবেন, যা শান্তির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে’।
তিনি জানান, এ আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে অস্ত্রবিরতির শর্তাবলী মূল্যায়ন করা, রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সম্ভাব্য সাক্ষাতের বিষয়ে আলোচনা এবং বন্দি বিনিময়ের নতুন সুযোগ খুঁজে দেখা।
রয়টার্স জানিয়েছে, এবারের সংলাপে দুই পক্ষই তাদের নিজস্ব ও বিপরীতধর্মী ‘শান্তি রূপরেখা’ ও অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব উপস্থাপন করতে যাচ্ছে। যদিও এ মুহূর্তে তীব্র মতপার্থক্য রয়ে গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—যদি অগ্রগতি না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতার ভূমিকা থেকে সরে আসতে পারে।
এদিকে আলোচনার বিষয়ে রাশিয়ার প্রধান প্রতিনিধি ভ্লাদিমির মেদিনস্কি জানান, আলোচনা শুরুর আগে রাশিয়া ইউক্রেনের পক্ষ থেকে একটি খসড়া শান্তিচুক্তি প্রস্তাব পেয়েছে। রাশিয়াও নিজেদের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। যার মধ্যে একটি অস্ত্রবিরতির খসড়াও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাসটেম উমেরভ। তার দলের একাধিক সদস্য সামরিক পোশাক পরেই আলোচনায় অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে আনাদোলু।
এর আগে, গত ১৬ মে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার আলোচনা কোনো শান্তি কিংবা অস্ত্রবিরতির ইঙ্গিত না দিলেও যুদ্ধের বৃহত্তম বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হয়। ওই সময় উভয় পক্ষই ১,০০০ বন্দিকে মুক্তি দেয়। তবে উভয়ের অবস্থান তখনো ছিল একে অপরের বিপরীত মেরুতে।
বিশ্লেষকদের মতে, সোমবারের নতুন আলোচনার ভবিষ্যৎও এখন অনিশ্চিত। বিশেষ করে এমন এক প্রেক্ষাপটে, যেখানে যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তেজনা আবারও চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।