
দীর্ঘ এক যুগ পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে দলটি আবারও নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেল এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ ফিরে পেল।
রোববার (১ জুন) দেশের সর্বোচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের ২০১৩ সালের হাইকোর্টের রায় বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি দেশি-বিদেশি নানা সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়েছে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমও এ রায়কে কেন্দ্র করে খবর প্রকাশ করেছে।
পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টের আদেশে বাতিল করা হয়। তবে সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দলটি ওই আদেশের পুনর্বিবেচনার আবেদন করে এবং অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেয়।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এই রায় এমন সময় এলো যখন গত ২৭ মে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলায় দেয়া মৃত্যুদণ্ড বাতিল করেছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগে ২০১৪ সালে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছিল।
ডনের ভাষ্যমতে, জামায়াতে ইসলামীর পাকিস্তানপন্থি অবস্থান এখনো বাংলাদেশে অনেকের মধ্যে তীব্র বিতর্ক ও ক্ষোভের জন্ম দেয়। দলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবেও পরিচিত ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকারের সময় জামায়াত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এবং দলটির বহু শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার ও বিচার কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়।
এছাড়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি আওয়ামী লীগকেও সাময়িক নিষিদ্ধ করেছে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।
১ জুন সেই মামলার শুনানি সরাসরি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সম্প্রচারিত হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা উসকানি, সহায়তা, ষড়যন্ত্র এবং প্রতিরোধে ব্যর্থতাসহ কমপক্ষে ৫টি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।