
সুদানে নতুন করে কলেরার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবে দেশটির রাজধানী খার্তুমে দুই দিনের ব্যবধানে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৭০ জন। এই প্রাণঘাতী রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, আর তাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও মৌলিক পরিষেবার অভাবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
খার্তুম রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, বুধবার একদিনেই নতুন করে ৯৪২ জন কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২৫ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। তার আগের দিন, মঙ্গলবার, ১ হাজার ১৭৭ জন আক্রান্ত হন এবং ৪৫ জনের মৃত্যু হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুদানে দীর্ঘদিন ধরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংঘাত এবং নাগরিক অকার্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। খার্তুমসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানি, স্যানিটেশন এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত না থাকায় কলেরার মতো পানিবাহিত রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
খার্তুমের একটি স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. লায়লা মোহাম্মদ বলেন, “আমরা প্রতিদিন অসংখ্য রোগী সামলাচ্ছি, যাদের মধ্যে অনেকেই শিশু ও বয়স্ক। অধিকাংশের অবস্থা গুরুতর। পর্যাপ্ত স্যালাইন, অ্যান্টিবায়োটিক ও পরিচ্ছন্ন পানি না থাকায় রোগী সামলানো দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে।”
জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে এই প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সাহায্যের আশ্বাস দিলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি দ্রুত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তবে এ প্রাদুর্ভাব আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এবং মৃতের সংখ্যা কয়েক গুণে বেড়ে যেতে পারে।
সুদানের জনগণ এখন মানবিক সহায়তা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার অপেক্ষায় রয়েছে। রোগের বিস্তার ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে পানি বিশুদ্ধকরণ ব্যবস্থা, স্যানিটেশন, ওষুধ সরবরাহ এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো অত্যন্ত জরুরি।
শীর্ষনিউজ