Image description

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মাত্র ৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের সংঘর্ষে আধুনিক যুদ্ধনীতির নিয়ম নতুন করে লিখিয়েছে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। এই যুদ্ধে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান।

 

ভারত গত ২০ বছরে ৭০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সংগ্রহ করেছে এবং তাদের বিমানবাহিনী ৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে উন্নত প্ল্যাটফর্ম (যুদ্ধবিমান ও প্রযুক্তি) সংগ্রহ করেছে। তা সত্ত্বেও পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী তিনটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এগুলো হলো কৌশলগত নির্ভুলতা, প্রযুক্তিগত আধিপত্য ও সুনিয়ন্ত্রিত প্রতিরোধ সক্ষমতা।

এই ৮৭ ঘণ্টার সংঘর্ষ শুধুই একটি যুদ্ধ জয় নয়, বরং এটি তিনটি ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সামরিক অবস্থানের বৈশ্বিক স্বীকৃতি। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের সামরিক নীতি, অস্ত্র সংগ্রহ কৌশল এবং ২১ শতকের যুদ্ধপ্রযুক্তির সফল সংযুক্তি।

অন্যদিকে এই যুদ্ধে ভারতের অবস্থা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। স্বল্পমেয়াদি এই সংঘর্ষ ভারতের বিমানবাহিনীতে এক গভীর আস্থার সংকট সৃষ্টি করেছে। ১৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের রাফালে বিমান কেনাকে ভারতের পক্ষ থেকে ‘আকাশে শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক’ হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও এতে পাঁচটি গুরুতর দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এগুলো হলো ত্রুটিপূর্ণ আকাশ যুদ্ধনীতি, অপর্যাপ্ত অপারেশনাল প্রস্তুতি, বাস্তবসম্মত প্রশিক্ষণের অভাব, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত অস্ত্র ক্রয়ের সিদ্ধান্ত এবং বাস্তব যুদ্ধে পরীক্ষিত ক্ষমতার চেয়ে মর্যাদাকেন্দ্রিক প্ল্যাটফর্মকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো, উচ্চমূল্যসম্পন্ন লক্ষ্যবস্তু যেমন রাফালে যুদ্ধবিমান শনাক্ত, অনুসরণ ও ধ্বংস করার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সক্ষমতা প্রমাণ করে যে, তাদের পুরো ‘কিল চেইন’, অর্থাৎ রাডার, ডেটা লিংক, ইসিএম (ইলেকট্রনিক কাউন্টারমেজার) ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ- এগুলো সমন্বিত ও কার্যকরভাবে কাজ করছে।

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী এখন আর প্ল্যাটফর্ম-কেন্দ্রিক নয়; বরং একটি ‘সিস্টেম-কেন্দ্রিক’ যুদ্ধ মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের সামরিক বাহিনী এখনো হার্ডওয়্যারের মর্যাদাকেন্দ্রিক আধিপত্য (প্রতীকী শক্তির প্রদর্শন, কিন্তু কার্যকর যুদ্ধ ক্ষমতা নয়) অর্জনের চেষ্টায় আটকে আছে, যার পেছনে প্রয়োজনীয় সহায়ক পরিকাঠামোর ঘাটতি রয়ে গেছে।

পাকিস্তান বিমানবাহিনীর জে-১০সি যুদ্ধবিমানগুলোর সামনের সারিতে মোতায়েন এবং তাতে পিএল-১৫ নামক ‘বিয়ন্ড-ভিজ্যুয়াল-রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল লাগানো হয়েছিল, যার ফলে আকাশযুদ্ধে দৃষ্টিসীমার বাইরেও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে পাকিস্তান। এসব কিছুর সমন্বয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের সফলতা একদিকে যেমন ভারতের বিমান সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা উন্মোচন করেছে, অন্যদিকে এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের দাপট, স্বল্প-ব্যয় ও নেটওয়ার্কভিত্তিক যুদ্ধনীতিকে বৈধতা দিয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় এই বিমানযুদ্ধে পাকিস্তান ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামেও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। তারা কোরাল ইসিএম সিস্টেম দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করে ভারতের রাডার সিস্টেমগুলোতে বিঘ্ন ঘটায়, বিভ্রান্ত করে ও নিস্ক্রিয় করে দেয় যা পাকিস্তানের সামগ্রিক সামরিক কৌশলের আরেকটি সুস্পষ্ট সাফল্যের প্রমাণ।

বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ডজনখানেক ভারতীয় ড্রোন নিস্ক্রিয় করা, যার মধ্যে ছিল অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট আর্টিলারি, স্বল্পপাল্লার ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ইলেকট্রনিক কাউন্টারমেজার। এটি প্রমাণ করেছে যে, পাকিস্তান শুধু ড্রোন ঝাঁকের ভবিষ্যৎ অনুধাবন করেই থেমে থাকেনি, বরং তারা পরবর্তী প্রজন্মের হুমকি মোকাবিলায় একটি বহুস্তরবিশিষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করেছে।

সবশেষে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু এড়িয়ে পাকিস্তানের পরিমিত জবাবদিহি দেখিয়েছে যে, তাদের কৌশল ছিল ‘নিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা বৃদ্ধি’। এই পন্থা আন্তর্জাতিক সমর্থন ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ভারতকে নৈতিক উচ্চভূমি দখল করতে দেয়নি।

এই ৮৭ ঘণ্টার মাধ্যমে পাকিস্তান শুধু একটি যুদ্ধই জেতেনি, বরং তারা যুদ্ধক্ষেত্রের প্রচলিত ধ্যান-ধারণা ভেঙে দিয়েছে, আঞ্চলিক প্রতিরোধনীতিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে এবং প্রমাণ করেছে যে, সঠিক কৌশলগত চিন্তা ও সমন্বয় একটি বিশাল বাহিনীকেও হার মানাতে পারে।

এই ৮৭ ঘণ্টার যুদ্ধকে স্মরণ করা হবে কেবল ভারতের ক্ষতির জন্য নয়, বরং পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী যা অর্জন করেছে, তার জন্য। পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক নীতির বৈশ্বিক স্বীকৃতির জন্য যা ছিল নির্ভুলতা, সংহতি ও কৌশলগত পরিপক্বতার ওপর ভিত্তি করে অর্জিত।