Image description

ইসরায়েলে হামলা করে বেসামরিক নাগরিক হত্যা ও অপহরণের ঘটনায় ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস দমনের নামে গাজায় অভিযান শুরু করেন দখলদারদের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু সেই অভিযান রূপ নেয় একতরফা গণহত্যার যুদ্ধে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় প্রতিদিন বোমা পড়ছে এবং নারী-শিশু নির্বিশেষে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর চলতি বছরের শুরুতে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু হামাস ও ইসরায়েলের দরকষাকষিতে সেই যুদ্ধবিরতি টিকতে পারেনি। মার্চের মাঝামাঝিতে ইসরায়েল আগের চেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে গাজায় হামলা শুরু করে।

একনজরে দেখে নিন যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ পরবর্তী টাইমলাইন-

২ মার্চ: হামাস জানুয়ারিতে সম্মত যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত পরিবর্তনের ইসরায়েলের প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করে। গোষ্ঠীটি কিছু অভিযোগ তুলে জানিয়ে দেয়, তারা দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী নয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় সমস্ত সাহায্য প্রবেশ নিষিদ্ধ করে।

১৫ মার্চ: হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা পুনরায় শুরু করার হুমকি দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে বড় ধরনের হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ৫৩ জন নিহত হয়।

১৮ মার্চ: ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গাজায় বোমাবর্ষণ করে। আগের চেয়ে ভয়াবহ সেই হামলায় এক দিনে ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়। যাদের মধ্যে অনেকেই শিশু।

১৯ মার্চ-২৪ এপ্রিল: গাজার প্রায় সব এলাকায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ চলতে থাকে। আহতদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠে উপত্যকা। নতুন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা পরিচালিত হাসপাতাল ও স্কুলে বিমান হামলা হয়।

২৫ এপ্রিল: বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানায়, গাজায় তাদের খাদ্য মজুত সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেছে।

৩ মে: গাজার কর্তৃপক্ষ জানায়, ইসরায়েলের সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপের পর থেকে কমপক্ষে ৫৭ জন ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছে।

৪ মে: হুতিদের একটি মিসাইল ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে আঘাত হানে।

৫ মে: নেতানিয়াহু গাজার যুদ্ধ সম্প্রসারণের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, গাজার ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়া হবে এবং সামরিক বাহিনী কয়েক হাজার রিজার্ভ সৈন্য ডাকার পরিকল্পনা করছে।

৭ মে: ওমান যুক্তরাষ্ট্র-হুতি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। ইসরায়েল ইয়েমেনের সানা বিমানবন্দরে হামলা চালায়।

৯ মে: যুক্তরাষ্ট্র জানায়, গাজায় সাহায্য বিতরণের জন্য একটি নতুন সংস্থা ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। গাজাবাসী সহায়তাই এ সংস্থার একমাত্র উদ্দেশ্য বলে ঘোষণা করা হয়।

১১ মে: হামাস জানায়, যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা মার্কিন-ইসরায়েলি বন্দি এদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেবে।

১২ মে: মার্কিন-ইসরায়েলি বন্দি এদান আলেকজান্ডারের মুক্তির অপেক্ষা। হামাস জানায়, বন্দি মুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা সরাসরি আলোচনায় বসবে। এদিকে দিনের শুরুতে গাজায় নতুন করে বিমান হামলা শুরু ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬১ হাজার ৭০০ জনে। তাদের মতে, ধ্বংস্তূপের নিচে আরও হাজারো মানুষের লাশ চাপা পড়ে থাকতে পারে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৫৪ জন। অব্যাহত অবরোধ ও বিদ্যুৎ-পানি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় বেঁচে থাকা মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।