Image description
 

ফিলিস্তিনি শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা ও পশ্চিমতীরে ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪,৭৮৪ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ২৪,৭৬৬ জন। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা (WAFA) এ তথ্য জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানায়, শুধুমাত্র গাজা উপত্যকাতেই নিহত হয়েছে ১৪,৬৪৯ জন শিক্ষার্থী এবং আহত হয়েছে কমপক্ষে ২৩,৯৩৬ জন। অপরদিকে পশ্চিমতীরে ১৩৫ জন শিক্ষার্থী নিহত এবং ৮৩০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী ৭২৪ জন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।

শিক্ষা খাতের ক্ষতির পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রণালয় জানায়, গাজা ও পশ্চিমতীর জুড়ে ৮৮০ জন শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন এবং প্রায় ৪,২৪৭ জন আহত হয়েছেন। পশ্চিমতীরে ১৯৩ জনের বেশি শিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসনের কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ইসরায়েলি হামলায় ইতোমধ্যে ৩৫২টি সরকারি বিদ্যালয় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ১১১টি বিদ্যালয় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। একইসঙ্গে ৯১টি সরকারি ও ৮৯টি জাতিসংঘের (UNRWA) পরিচালিত বিদ্যালয়ে বোমা বর্ষণ ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

মহানগর শিক্ষার ক্ষেত্রেও চিত্র ভয়াবহ। হামলায় ২০টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয় ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। পশ্চিমতীরের ১৪৬টি স্কুল ও ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সেগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। বিশেষ করে জেনিন, তুলকারেম ও তুবাসের একাধিক বিদ্যালয়ের দেয়াল ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

এছাড়া ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জেরুজালেমে জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলগুলো আগামী ৮ মে বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গাজার ৭ লাখ ৮৮ হাজার শিক্ষার্থী ইসরায়েলি আগ্রাসনের শুরুর পর থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিচ্ছিন্ন। এই দীর্ঘ শিক্ষাবিচ্ছিন্নতার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক ট্রমা ও স্বাস্থ্যজনিত জটিলতা দেখা দিয়েছে


প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েল সীমান্তে আকস্মিক হামলা চালিয়ে বহু ইসরায়েলি নাগরিককে হত্যা ও প্রায় ২৪০ জনকে অপহরণ করে, যাদের মধ্যে নারী, শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠরাও ছিলেন। এরপরই ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় পূর্ণ অবরোধ জারি করে এবং ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে। জানুয়ারি ২০২৫-এ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির পর ১৮ মার্চ ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারা দাবি করে, হামাস মার্কিন মধ্যস্থতায় দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তারা আবার আক্রমণে নামে, যার উদ্দেশ্য ছিল অপহৃত ইসরায়েলিদের মুক্ত করা। তবে হামাস পাল্টা অভিযোগে বলেছে, এই সহিংসতার জন্য মূল দায় ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওপরই বর্তায়।