
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়াতে ভারতের চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রতিবেশী দেশটিতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতেরও আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সংস্থা বাসসের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের এ অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যে কোনো চেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি।’ বাংলাদেশ সরকার মুসলিমদের ওপর হামলা ও তাদের জানমালের নিরাপত্তাহানির ঘটনায় নিন্দা জানায়। শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।’
পশ্চিমবঙ্গে ওয়াক্ফ (সংশোধিত) আইন বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলাকালে গত ১১ এপ্রিল মুর্শিদাবাদে ব্যাপক সহিংসতা হয়। এতে তিনজন নিহত ও দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওয়াক্ফ সংশোধিত আইন বাতিলের দাবিতে উত্তাল হয় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এলাকা। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি চলে। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো, যানবাহন ও বাইক ভাঙচুরের মতো একাধিক ঘটনায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে শাজুর মোড় ও ধুলিয়ান-সংলগ্ন এলাকায়। কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যম সহিংসতায় ‘বাংলাদেশি’দের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে। এসব প্রতিবেদনে বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ততার দাবিই নাকচ করল বাংলাদেশ।
গত বুধবার বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, মুর্শিদাবাদের ওই সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ‘বাংলাদেশি দুষ্কৃতকারী’ জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি সহিংসতার জন্য তিনি ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকেও দায়ী করেন। পশ্চিমবঙ্গের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সঙ্গে কলকাতায় এক পূর্বনির্ধারিত বৈঠকে মমতা এসব কথা বলেন।
বিবিসি বাংলা বলছে, মমতা ওই সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত দাঙ্গা’ বলে অভিহিত এবং বিজেপিকে নিশানা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বুধবারের বক্তৃতার বেশির ভাগই ছিল হিন্দিতে। মনে হচ্ছিল, অ-বাংলাভাষী মুসলমানরাই তার ভাষণের প্রধান লক্ষ্য।