
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আটক ইসরাইলি বন্দিদের মুক্ত করার ক্ষেত্রে ইসরাইলের সামরিক চাপ কোনো কাজে আসছে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলের সেনা কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল নোয়াম টিবন।
রোববার আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল নোয়াম টিবন; যিনি কিনা গাজায় আটক এক ইসরাইলি বন্দির ভাইও। তিনি বলেন, এটা জোর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ যে চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো সকল জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা।
তিনি আরও বলেন, দেড় বছর ধরে আমাদের বলা হয়েছিল যে কেবল সামরিক চাপই জিম্মিদের ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেও ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলায় ৪১ জন জিম্মি নিহত হয়।
তিনি আরও যোগ করেন, এই চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ ছিল, জিম্মিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা। কিন্তু নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক কারণ, জোটের স্বার্থ এবং বাজেটগত বিবেচনার কারণে এটি বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেন।
গত ২৫ মার্চ ইসরাইলি নেসেট (সংসদ) ৬২০ বিলিয়ন শেকেল ($১৬৭.৩২ বিলিয়ন) মূল্যের রাষ্ট্রীয় বাজেট ৬৬-৫২ ভোটে পাস করে।
বাজেট অনুমোদনের আগে, ইসরাইলি সরকার অতি-ডানপন্থি রাজনীতিবিদ ইতামার বেন-গভিরের নেতৃত্বে ওতজমা ইয়েহুদিত পার্টির মন্ত্রীদের পুনর্বহাল করতে সম্মত হয়, যিনি হামাসের সঙ্গে গাজা যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তির প্রতিবাদে জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেছিলেন।
টিবন জোর দিয়ে বলেন, হামাস চুক্তির অধীনে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে এবং প্রথম পর্যায়ে বন্দিদের মুক্তিও দিয়েছে। এখন যদি ইসরাইল জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে চায়, তাহলে চুক্তিই একমাত্র পথ।
তেল আবিবের হিসাব অনুযায়ী গাজায় ৫৯ জন ইসরাইলি জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি মানবাধিকার এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ৯ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরাইলে বন্দি রয়েছে। যাদের অধিকাংশই নির্যাতন, অনাহার এবং চিকিৎসায় অবহেলার শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলের সামরিক হামলায় গাজায় ৫০ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে। ছিটমহলে যুদ্ধের জন্য ইসরাইল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে।