Image description

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি স্পষ্ট করেছেন, হুতিদের কোনো ধরনের আক্রমণকে সরাসরি ইরানের হামলা হিসেবে গণ্য করা হবে। এমনকি হুতিদের ছোড়া প্রতিটি গুলিকে ইরানের অস্ত্রভান্ডার থেকে আসা গুলি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এই হুঁশিয়ারির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 

সোমবার (১৮ মার্চ) ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এই হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, “ইয়েমেনের দাঙ্গাবাজ ও গুন্ডাদের শত শত আক্রমণের মূলে রয়েছে ইরান। প্রকৃতপক্ষে তারা ইরানেরই তৈরি। ইয়েমেনের জনগণ তাদের ঘৃণা করে। ভবিষ্যতে তাদের যেকোনো আক্রমণ শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।” ট্রাম্পের এই বক্তব্য ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনাকে উসকে দিয়েছে।

 

ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে ইরানকে কড়া বার্তা পাঠিয়েছে। চলতি মাসের গোড়ার দিকে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠান। এতে স্পষ্ট করে বলা হয়, ইরান যদি পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। যদিও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, চিঠির বিষয়বস্তু ট্রাম্পের আগের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি ছাড়া কিছু নয়।

 

এদিকে, ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির আগের দুই দিন ধরে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার রাতে এবং রবিবার পরিচালিত হামলায় পাঁচ শিশুসহ অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। ওয়াশিংটনের দাবি, নিহতদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন হুতি সদস্য রয়েছেন। রবিবার রাতে বন্দর নগরী হুদাইদাতেও মার্কিন বাহিনীর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাগুলো হুতিদের শক্তি দুর্বল করতে পরিচালিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

হুতিরাও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরিতে হামলা চালানোর দাবি করেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারে জানিয়েছেন, “ওই রণতরি লক্ষ্য করে ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়া হয়েছে, যা মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে ইয়েমেনের পানিসীমা ছাড়তে বাধ্য করেছে।” তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই হামলার দাবি অস্বীকার করা হয়েছে।

 

এই উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুতি বিদ্রোহীদের ইরানের ছায়াযুদ্ধের অংশ হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এই সংঘাত আরও বড় আকার নিতে পারে। বিশ্ব নেতাদের উচিত কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর উদ্যোগ নেওয়া, যাতে এই সংঘর্ষ আরও ভয়াবহ রূপ না নেয়। তথ্যসূত্র : বিবিসি