
যারা ইসলামের নামে আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে তাদের কড়া সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (জেইউআই) আমির মাওলানা ফজলুর রহমান।
তিনি বলেছেন, ধর্মীয় আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেওয়া জিহাদ নয়, বরং সংকীর্ণমনা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম।
সোমবার (১০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
রবিবার আকোরা খাট্টাকের দারুল উলুম হাক্কানিয়ায় নিহত মাওলানা হামিদুল হকের পরিবারের প্রতি শোক জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘যে লোক আমার উস্তাদ ও একজন ধর্মীয় আলেমকে হত্যা করেছে, সে মুজাহিদ নয়, বরং খুনি। আমার উস্তাদকে শহীদ বলা হবে, আর তার হত্যাকারীকে মুজাহিদ—এটা সম্ভব নয়।’
মাওলানা হামিদুল হক জেইউআই-এস-এর প্রধান ছিলেন, গত সপ্তাহে রমজানের প্রাক্কালে তার মাদরাসায় এক আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন।
তিনি মরহুম মাওলানা সামিউল হকের পুত্র, যিনি আফগান ও পাকিস্তানি তালেবানদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অনেক আফগান তালেবান তার মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করেছেন।
ফজলুর রহমান বলেন, ‘কিছু মানুষ জিহাদের নামে জান্নাতের পথ খুঁজছে, অথচ একজন ধর্মীয় আলেমের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা সংকীর্ণতার পরিচায়ক, এটি কখনোই জিহাদ নয়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, কিছু চরমপন্থি এমনকি মসজিদেও হামলা চালাচ্ছে এবং সম্প্রতি বেলুচিস্তানে এক ধর্মীয় আলেম নামাজরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন।
‘কীভাবে একজন মুসলমান বা একজন ধর্মীয় আলেমের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা সম্ভব? ইসলাম বলে, একজন মানুষের হত্যা পুরো মানবতার হত্যার সমতুল্য। ইসলামের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার করা জিহাদ নয়, বরং সন্ত্রাসবাদ।’
হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চরমপন্থি মতাদর্শগুলো ঝড়ের মতো আসে এবং একসময় তা কেটে যায়। ‘এই মাদ্রাসা, মসজিদ এবং ওলামারা টিকে থাকবে, কিন্তু শত্রুরা লজ্জিত হবে।’
ফজলুর রহমান বলেন, মাওলানা হামিদুল হকের ওপর হামলা আসলে তার ঘর, তার মাদরাসা এবং তার জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রের ওপর হামলা। ‘মাওলানা সামিউল হকের শাহাদাতের শোক এখনও তাজা, তার মধ্যেই এই নির্মম হামলা আমাকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে। আমি তখন উমরাহ করছিলাম, যখন এই দুঃসংবাদ পেলাম। যে শোক অনুভব করেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’
মাওলানা ফজলুর রহমান জানান, দারুল উলুম হাক্কানিয়ায় একটি অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছিলেন। ‘আমি যখন রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি, তখন তাদের জিজ্ঞেস করি—এই অভিযানের পরিকল্পনা সত্য কিনা। আমি স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি, যদি এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে। জেইউআই-এফ অস্ত্রভিত্তিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, কিন্তু দারুল উলুম হাক্কানিয়ার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে তার জবাব দেওয়া হবে।