সম্প্রতি তুরস্ক ড্রোন নির্মাণে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাদের তৈরিকৃত বায়রাক্তার টিবি ২ এবং আকিনজি ড্রোন পুরো পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এমনকি খোদ যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনগুলোও তুরস্কের ড্রোনের তুলনায় দুর্বল। যদিও সার্বিকভাবে তারা যুক্তরাষ্ট্রের থেকে পিছিয়ে রয়েছে।
তুরস্ক সামরিক শক্তিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে এবং বর্তমানে গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্সের (জিএফপি) তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছে। তবে, সামরিক শক্তির দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এখনও শীর্ষস্থানে রয়েছে। তুরস্কের সামরিক বাহিনীতে প্রায় ৮ লাখ ৯০ হাজার সদস্য রয়েছে, যার মধ্যে ৪ লাখ ২৫ হাজার সক্রিয় সৈন্য। দেশটির বার্ষিক প্রতিরক্ষা বাজেট প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট এবং সামরিক প্রযুক্তি উভয়ই তুরস্কের তুলনায় অনেক বেশি। সুতরাং, সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে তুরস্ক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সক্ষমতার সাথে তুলনা করলে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
এরদোয়ানের এই অবদানের পিছনে যার নাম সবার আগে আসে তিনি হচ্ছেন সেলজুক বায়রাক্তার। সেলজুক বায়রাকতার একজন তুর্কি প্রকৌশলী, পাইলট এবং ব্যবসায়ী, যিনি তুরস্কের প্রথম স্বনির্মিত সশস্ত্র ড্রোন 'বায়রাকতার টিবি২' এবং প্রথম মানববিহীন যুদ্ধবিমান 'বায়রাকতার কিজিলেলমা'র নকশাকারক হিসেবে পরিচিত। তিনি বায়কার টেকনোলজি কোম্পানির চিফ টেকনোলজি অফিসার এবং তুর্কি টেকনোলজি টিম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
১৯৭৯ সালে ইস্তাম্বুলের সারইয়ের জেলায় জন্মগ্রহণ করা সেলজুক বায়রাকতার ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ইলেকট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরে তিনি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পে তার অবদানের জন্য তিনি বিশেষভাবে প্রশংসিত। তার নেতৃত্বে বায়কার কোম্পানি 'বায়রাকতার টিবি২' ড্রোন তৈরি করে, যা বিভিন্ন দেশে সামরিক কার্যক্রমে ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্যক্তিগত জীবনে, সেলজুক বায়রাকতার তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের কন্যা সুমেইয়ে এরদোয়ানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। তার উদ্ভাবনী কাজ তুরস্কের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুরস্কের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতিফলন ঘটিয়েছে।
