ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার বিচার ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে দুই শিক্ষার্থীকে শোকজ করেছে কর্তৃপক্ষ। শোকজকৃত শিক্ষার্থীরা হলেন জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার ইবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম এবং ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাঈল হোসেন রাহাত। সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে তাদের এই শোকজ নোটিশ প্রদান করেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান।
নোটিশে বলা হয়, গত ২৬ অক্টোবর এক মিছিল শেষে শহিদ সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যা বিষয়ে তারা উল্লেখ করেন, হত্যাকারীর বিষয়ে প্রশাসন অবগত থাকার পরও ক্যাম্পাসের পরিবেশ অস্থিতিশীল হবে বলে তাদেরকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দিচ্ছে না। তাদের এ বক্তব্যে ক্যাম্পাসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাদের এ বক্তবের উৎস ও কারণ আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টরের কার্যালয়ে প্রদান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে গত ২৬ অক্টোবর সাজিদ হত্যার ১০০তম দিন উপলক্ষে ‘প্রতীকী কফিন মিছিল’ করে শিক্ষার্থীরা। মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ওই দুই ছাত্রনেতা এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বক্তব্যে শামীম বলেন, আমরা জানতে পেরেছি সিআইডি খুনি পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। কিন্তু ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হবে তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ধরতে দিচ্ছে না। একই সমাবেশে একই কথা বলেন ইসমাইল হোসেন রাহাতও।
অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে শাখা ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, আমি পূর্বের বক্তার (শামিম) বক্তব্য কোড করেছি। আমার কাছে সোর্স জানা নাই। সন্দেহভাজনের ব্যাপার থেকে আলাপটা দিয়েছি।
এদিকে জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া ইবি শাখা সেক্রেটারি মো. শামীম বলেন, আপনারা অনেকে বিভিন্ন পেইজের পোস্টে গুঞ্জন দেখতে পাচ্ছেন। এমতাবস্থায় হয়তো আমি বলে ফেলেছি যে, আমি জানতে পেরেছি। এটা আমার স্লিপ অব টাং হয়েছে, এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। কেউ যদি আমার বক্তব্য কোট করে তাহলে সেটা দূরদর্শিতার অভাব এবং এটা তার (রাহাত) উচিত হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে আল কুরআন বিভাগের ছাত্র সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ১৮ জুলাই সকালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে ৩ আগস্ট ভিসেরা রিপোর্টে শ্বাসরোধে সাজিদের হত্যা হয়েছে বলে জানানো হয়। এই ঘটনার পর থেকে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতসহ সাজিদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীসহ ক্রিয়াশীল সব ছাত্রসংগঠন।
এ ঘটনার তদন্তে কাজ করে যাচ্ছে সিআইডি। তদন্তের স্বার্থে সিআইডি কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট যে কাউকে যেকোনো সময় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।