Image description

ব্যাচের সহপাঠীরা স্নাতক শেষে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। কিন্তু এক বিষয়ে ফেল থাকায় রয়ে গেছেন মেহেদী হাসান (২২)। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসাও নিচ্ছিলেন। এই দুশ্চিন্তার কারণেই কী আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান?

গতকাল শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর ফুদকিপাড়া এলাকার এবেলা ছাত্রাবাসের ৯ তলার একটি কক্ষ থেকে মেহেদী হাসানের মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ ঝুলছিল। আজ শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মেহেদীর মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বিকেলে মেহেদীর মরদেহ নিয়ে বড় ভাই রংপুরের উদ্দেশে অ্যাম্বুলেন্সে রওনা হন।

নিহত রুয়েট শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। মেহেদীর বাবার নাম নূর ইসলাম। তাদের বাড়ি রংপুর শহরের কোতোয়ালি থানার বনানীপাড়া মহল্লায়।

জানা গেছে, মেহেদী রাজশাহী নগরীর ফুদকিপাড়ার পদ্মাপাড়ে এবেলা নামের একটি ছাত্রাবাসে থাকতেন। মেহেদী যে রুমে থাকতেন, সেটি দুই সিটের। কিন্তু তার কোনো রুমমেট ছিল না। রুমে একাই ছিলেন মেহেদী। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে মেহেদীর মা তাকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। এভাবে সারাদিন গড়িয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে তিনি ছাত্রাবাসের অন্য এক ছাত্রকে ফোন করে মেহেদীর বিষয়ে জানতে চান। তখন শিক্ষার্থীরা দেখেন মেহেদীর রুম ভেতর থেকে লাগানো। এরপর তারা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মেহেদীর মরদেহ দেখেন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে মরদেহ উদ্ধার করে রামেক হাপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।

রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, মেহেদীর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষ করে রুয়েট থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু মেহেদীর এক বিষয়ে ফেল থাকার কারণে যেতে পারেননি। এটা নিয়ে তার দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। এ ছাড়া মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। দুশ্চিন্তার কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি পরিষ্কার না। তবে আমাদের ধারণা হতে পারে। অন্য কারণও থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ। 

তিনি আরও বলেন, বাড়ি থেকে মেহেদীর বড় ভাই রাজশাহীতে এসেছিলেন মরদেহ নিতে। দুপুরে রামেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মেহেদীর বড়ভাইয়ের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। গ্রামের বাড়িতে তার মরদেহ দাফন হবে বলে শুনেছি।

মেহেদী আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, রাতে খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে।