Image description

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড. শূচিতা শরমিনের অপসারণ দাবিতে এবার তার বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৭ মে) দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে তাতে ফুল গুঁজে দেয়।

আগের দিন মঙ্গলবার উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দপ্তরগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। ভিসি অপসারণ না হলে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ এবং পানির সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে ২২ দফা দাবি পূরণে ব্যর্থতা, চিকিৎসার অভাবে মারা যাওয়া শিক্ষার্থীকে অর্থ সহায়তা না দেওয়া, ক্যাম্পাসে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা এবং বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উপাচার্যের অপসারণের দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তার পদত্যাগের এক দফা দাবি নিয়ে ডাকা তৃতীয় দিনের মতো বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিচতলায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনকারীরা। এসময় ভিসি বিরোধী বিভিন্ন প্রতিবাদী গানের পাশাপাশি তার অপসারণ চেয়ে বক্তব্য ও বিক্ষোভ করেন তারা।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় শুভ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আজমাইন শুভ এবং আইন বিভাগের শহিদুল ইসলাম শাহেদ।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বৈরাচারের দোসর অদক্ষ এই উপাচার্য অতীতে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই দাবি এবং প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এর ফলে কোনো ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তন ঘটেনি।

তারা বলেন, নানা সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা পাচ্ছে না। সেদিকে উপাচার্যের নজর নেই। উলটো তিনি স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসন করে যাচ্ছেন। তাই তাকে অপসারণ করে শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। নয়তো তিনি দ্রুত পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চলে যাবেন। তা না হলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

এদিকে, অবস্থান কর্মসূচি শেষে দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে মিছিল নিয়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। তবে এসময় উপাচার্য বাসভবনে ছিলেন না।

এর আগে ৪ দফা দাবি আদায়ে পক্ষকালের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে চাকরিচ্যুত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা মুচলেকা দিয়ে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানান বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য। সিন্ডিকেট সভার পর দিনই সংবাদ সম্মেলন করে ভিসির অপসারণের এক দফা ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা।