
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভিসি অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দুই আবাসিক হলের প্রভোস্ট ও এক গবেষণা সেন্টারের পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। ভিসি পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ১১ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করেন ৷ পরে দুপুর ২টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনে গিয়ে শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দেন ৷ এসময় ভিসি ড. শূচিতা তার বাসভবনে ছিলেন না।
গত ১ মে থেকে ভিসি ঢাকার গেস্ট হাউজে অফিস করছেন। যদিও ইউজিসি থেকে এ বিষয়ে নিষেধ রয়েছে।
বুধবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট ড. আবদুল আলিম বছির এবং জীবননান্দ দাশ রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক সঞ্জয় কুমার সরকার তাদের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন ৷ এরআগে গত ২৯ এপ্রিল একই কারণ দেখিয়ে বিজয়- ২৪ হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসান পদত্যাগ করেন।
আন্দোলনকারী বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আশেক এলাহী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ এই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। কারণ তার কর্মকাণ্ড জুলাই বিপ্লবের সাথে সাংঘর্ষিক৷ তিনি সময়মত বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে৷ যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন নতুন যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের গেটে তালা ঝুলবে৷
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, তাদের বিভিন্ন পদে বেছে বেছে পদায়ন করেছেন এই উপাচার্য, আর যারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিল, তাদের নানাভাবে হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী একজন উপাচার্যের সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে থাকার কথা থাকলেও, আমাদের উপাচার্য বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। ফলে প্রশাসনিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হচ্ছে না৷ সাত মাসের পর্যবেক্ষণে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, বর্তমান উপাচার্যের অধীনে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয়।
জানতে চাইলে সদ্য পদত্যাগ করা প্রভোস্ট আব্দুল আলিম বছির জানান, আমি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আজকে ভিসি দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। তবে এর পেছনে অনেক কারণ আছে। আমি এখন বলতে চাই না।
সার্বিক বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনকে কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করে ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন বলে কল কেটে দেন।
বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি বলেন, শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট পদত্যাগ করেছেন, আর বিজয়-২৪ হলের প্রভোস্ট পদত্যাগ করলেও সেখানে প্রভোস্ট দেয়া হয়েছে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তো এই আন্দোলনের সাথে এতোটা নাই, গুটি কতোক শিক্ষার্থী এখানে আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীদের যে দাবি গুলো ছিলো যৌক্তিক-অযৌক্তিক যে দাবিই ছিল সেগুলো সিন্ডিকেটে পাশ হয়ে গিয়েছে,তারপরো কেন কিভাবে কারা এই আন্দোলন করছে সেটা আপনারা দেখেন।