
মোবাইল ফোনের ব্যবহার আজকের দিনে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, এই আধুনিক যন্ত্রটির প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, তা আমাদের অনেকেই জানেন না। বিশেষ করে টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অভ্যাস মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ২০২৩ সালে লিথুয়ানিয়াভিত্তিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান নর্ডভিপিএনের এক জরিপে দেখা গেছে, উন্নত বিশ্বে প্রতি ১০ জনের ৬ জনই টয়লেটে মোবাইল ফোন নিয়ে যান, যা তরুণদের মধ্যে আরও বেশি প্রচলিত।
জরিপ থেকে আরও জানা যায়, ৯৩ শতাংশ তরুণ টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর হতে পারে।
আসুন জেনে নিন, টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ৬টি স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে
১. মেরুদণ্ড ও পেশিতে চাপ : টয়লেটে বসে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় সাধারণত দুই হাঁটুর ওপর কনুই ভর দিয়ে বসা হয়। এতে মেরুদণ্ড ও পাশের পেশিতে চাপ পড়ে, যা ধীরে ধীরে অস্বস্তি এবং ব্যথার কারণ হতে পারে।
২. পাইলসের ঝুঁকি : দীর্ঘ সময় একই জায়গায় বসে থাকার ফলে মলদ্বারের শিরার ওপর চাপ পড়ে, যা পাইলস বা হেমোরয়েডের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। পাইলস ক্রমান্বয়ে আকারে বৃদ্ধি পেয়ে নিচে নেমে আসে। পায়ুপথকে ঘড়ির সঙ্গে তুলনা করলে ৩টা, ৭টা ও ১১টার কাঁটার জায়গায় তিনটি রক্তের শিরা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে চাপ খেয়ে ফুলে ক্রমশ নিচের দিকে নামতে থাকে।
৩. পায়ে ঝিঁঝিঁ লাগা : দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকলে পায়ে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়, ফলে পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরে যেতে পারে। এটাও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
৪. জীবাণুর সংক্রমণ : টয়লেট হলো জীবাণুর আখড়া, যেখানে নানা ধরনের জীবাণু থাকে। এখানে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে জীবাণু মোবাইল ফোনে বাসা বাঁধতে পারে, যা শরীরের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ কারণে জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত মোবাইল ফোন স্যানিটাইজ করা জরুরি।
৫. চোখের সমস্যা : দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের সমস্যা হতে পারে। মোবাইলের পর্দার নীল আলো চোখের জন্য ক্ষতিকর। টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে চোখের বিশ্রাম ব্যাহত হয় এবং দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে পারে।
৬. ঘুমের সমস্যা : অনেকেই রাতে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যান। টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। মোবাইল ফোনের আলো ঘুমকে দূরে সরিয়ে দেয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং, টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অভ্যাস পরিহার করা উচিত।
সূত্র: লাইভ মিন্ট ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।