Image description

তাজিকিস্তান, এক ছোট ও শান্তিপূর্ণ মধ্য এশীয় দেশ। যেটির ই-ভিসা সাধারণত খুব সহজলভ্য বলে মনে করা হয়। অসংখ্য ট্রাভেল ব্লগ, ইউটিউব ভিডিও, এমনকি সরকারি পর্যটন সাইটগুলোও তাই বলছে। কিন্তু বাস্তবতা কি সত্যিই এতটা সহজ? দেশের একজন অভিজ্ঞ ও পেশাদার ভ্রমণকারীর অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা।

নাদির নিবরাস, একজন সুপরিচিত বাংলাদেশী ভ্রমণ বিষয়ক ইউটিউবার ও ব্লগার। বিশ্ব ভ্রমণকারী এই ব্লগার সম্প্রতি তাজিকিস্তানের ই-ভিসার জন্য তিন সপ্তাহ অপেক্ষার পর তা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। শনিবার (৪ জুলাই) নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ অভিজ্ঞতার বিস্তারিত তুলে ধরেন। 

ফেসবুক পোস্টে নাদির নিবরাস বলেন, ‘আজকে আমি তাজিকিস্তানের ই-ভিসার জন্য রিজেক্ট হয়েছি— তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করার পর। এই ভিসাটা সাধারণত বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীদের জন্য সবচেয়ে সহজ ভিসাগুলোর একটি বলে ধরা হয়। এটা প্রায় সব ওয়েবসাইটে লেখা আছে, এমনকি আমি পাঁচ বছর আগে যে ভিডিও বানিয়েছিলাম বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে কোথায় কোথায় যাওয়া যায়, সেখানেও এটা ছিল। কিন্তু বাস্তবে এই “সহজ” ভিসাগুলো পাওয়া অনেক সময় অনেক কঠিন হয়। আমি আমার বর্তমান বৈধ ইউ.এস., ইউ.কে., এবং অস্ট্রেলিয়ার ভিসাগুলো দেখিয়েছি, এমন ফান্ড দেখিয়েছি যা দিয়ে তাজিকিস্তানে রাজকীয় ভ্রমণ করাও সম্ভব — তাও রিজেক্ট। কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। শুধু আবেদন ফি হারালাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটাই বাস্তবতা, যখন আপনার পাসপোর্ট বাংলাদেশের মতো কোনো দেশের হয়। অনেক সময় আমার জন্য ইউ.এস., সুইজারল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশে ভিসা পাওয়া সহজ, যদি আমি সঠিক ডকুমেন্ট ও ফান্ড প্রমাণ করতে পারি। এই পোস্টটা করার উদ্দেশ্য কমপ্লেইন করা না। আমি জানি আমি কতটা লাকি যে আমি ফুলটাইম ভ্রমণ করতে পারছি — আমার মতো ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা কাউকে আমি চিনি না যে এতটা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে আমি এটা শেয়ার করছি কারণ অনেকেই জিজ্ঞেস করে: আমি কেন আরও ভিন্নধরনের দেশে বা কমন ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশনের বাইরে বেশি ঘুরি না?’

নাদির তার পোস্টে আরও বলেন, ‘আমি চেষ্টা করি, ঘুরতে চাই। কিন্তু সত্যিটা হলো, অনেক দেশের ভিসা পাওয়া আসলে যতটা সহজ মনে হয়, ততটা না। কিছুদিন আগেই আমি মলদোভায় যাওয়ার জন্য ইভিসার জন্য আবেদন করেছিলাম বেলজিয়াম থেকে, একেবারে হাস্যকর এক কারণে রিজেক্ট করে দিল — এবং ফি পুরোটাই নষ্ট। বাহরাইনের ইভিসার জন্যও আবেদন করেছিলাম, যেটা সব ওয়েবসাইটেই বলেছিল সহজ হবে, তাও রিজেক্ট।’

তিনি বলেন, ‘আর অনেক সময় দর্শকরা আমাকে বলে যে কেন আমি বিভিন্ন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ও আগ্রাসনের ইতিহাস থাকা দেশে যাই না — যারা আসলেই অনেক রহস্যময় ও ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমি যেতে চাই। কিন্তু সমস্যা হলো, ওইসব দেশের ভিসা যদি আমার পাসপোর্টে থেকে যায়, তাহলে পরবর্তীতে ইউরোপ, আমেরিকা বা অন্যান্য উন্নত দেশে ভিসা পাওয়া অনেক বেশি কঠিন হয়ে যেতে পারে। আমি এখন সেই ঝুঁকি নিতে পারি না। এই দিকগুলো ভিডিওতে সব সময় দেখানো হয় না। তাই ভাবলাম এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করি, যাতে অন্য ট্রাভেলাররাও পিছনের বাস্তবতাটা জানতে পারে।’