
দীর্ঘ সময় অতিরিক্ত কাজ শুধু ক্লান্তি বা মানসিক চাপই তৈরি করে না, বরং মস্তিষ্কেও আনতে পারে গঠনগত পরিবর্তন—সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে একটি গবেষণায়। দক্ষিণ কোরিয়ার চুং-আং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ওয়ানহিউং লি ও তার দল ১১০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর এ গবেষণা চালান। যাদের কেউ কেউ সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাজ করেন, যা দেশটির শ্রম আইনে অতিরিক্ত কাজ হিসেবে গণ্য হয়।
গবেষণায় অংশ নেওয়া সবার মস্তিষ্কের এমআরআই করা হয় এবং দেখা যায়, যারা নিয়মিত অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করেন, তাদের মস্তিষ্কের ১৭টি অঞ্চলে গড়পড়তা কর্মঘণ্টার মানুষের তুলনায় গঠনগত পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। এসব পরিবর্তনের মধ্যে এমন সব অংশ রয়েছে, যা যুক্তি, আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো উচ্চমানের মানসিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত।
গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লি জানান, এই ফলাফল তাকে বিস্মিত করেছে। তিনি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপের ফলে মস্তিষ্কে ক্ষয় ধরবে, কিন্তু কিছু অংশে আয়তন বেড়েছে—যা ছিল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। তার মতে, এটি মস্তিষ্কের একটি প্রতিরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেখানে অতিরিক্ত চাপে টিকে থাকার জন্য মস্তিষ্ক নিজেকে অভিযোজিত করতে চায়।
এই গবেষণা থেকে বোঝা যায়, অতিরিক্ত কাজের চাপ শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নয়, মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। উন্নত মস্তিষ্ক ইমেজিং প্রযুক্তি এখন এতটাই সংবেদনশীল যে, অতীতে ধরা না পড়া অনেক জৈবিক পরিবর্তনও শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে পেশাগত ও পরিবেশগত স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা।