
আজ বৃহস্পতিবার আরেকটি মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার। বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে পৃথক এই মেডিকেল বোর্ড কিডনি ও লিভার একসঙ্গে প্রতিস্থাপন করাকে অতিঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা। লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন এখনই সম্ভব না হলে তাকে আগামীকাল শুক্রবার হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হতে পারে।
লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বেগম জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড, যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের ডাক্তার এবং বাংলাদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ে অনলাইনে যৌথ মিটিংয়ে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থার পর্যালোচনা করা হয়। এতে ডাক্তাররা সবাই একমত, বয়স ও স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি বিবেচনা করে লিভার ও কিডনি একসঙ্গে প্রতিস্থাপন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আজ বৃহস্পতিবার লিভার ও কিনডি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞদের আরো একটি পৃথক মেডিকেল বোর্ড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, একসঙ্গে দুটিই প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন ডাক্তাররা। একসঙ্গে কিডনি ও লিভার এ বয়সে এবং শারীরিক পরিস্থিতে প্রতিস্থাপন করে কতটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন, নাকি বর্তমান অবস্থায় চিকিৎসা দিয়ে রাখা ভালো, সেটা নিয়ে ডাক্তাররা ভাবছেন। তিনি আরো বলেন, ম্যাডাম মানসিকভাবে খুবই ভালো আছেন। সব সময় উৎফুল্ল আছেন। তবে শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। চলাফেরায় অন্যের সহযোগিতা লাগে। ম্যাডামের জ্ঞান, স্মরণশক্তি সবই আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। দেশের সর্বশেষ আপডেট নেওয়ার চেষ্টা করেন সব সময়।
সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন এখনই সম্ভব না হলে তাকে আগামীকাল শুক্রবার হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে বাসায় রেখেই তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবেন ডাক্তাররা।সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন থেকে পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন বাংলাদেশের মেডিকেল বোর্ড। কিন্তু শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া থেকে বিরত রাখে। এতে দিন দিন তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। বেগম জিয়াকে ২০২০ সালের মার্চে যখন কারাগার থেকে বাসায় থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তখনই উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করেছিল বাংলাদেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড। লন্ডনের ডাক্তারদের অভিমত ওই সময় পাঠানো সম্ভব হলে বর্তমান এ ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব ছিল। গত কয়েক বছরে তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে গেছে।
সার্বক্ষণিক সঙ্গে আছেন ডাক্তার জাহিদ ও ফাতেমা
গত ৮ জানুয়ারি লন্ডনে পৌঁছার পর হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক তদারকিতে রয়েছেন ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বেগম জিয়ার চিকিৎসা কেবিনের পাশে আরেকটি কেবিন নেওয়া হয়েছে তার অবস্থানের জন্য। তিনি দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই হাসপাতালে আছেন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।বেগম জিয়ার কেবিনে সার্বক্ষণিক তদারকিতে রয়েছেন ফাতেমা। পরিবারের সদস্যরাও নিয়মিতই হাসপাতালে আসেন এবং তার পাশে অবস্থান করেন। তবে ফাতেমা সার্বক্ষণিক সেবায় নিয়োজিত আছেন।