নির্বাচন কমিশন বা ইসি সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠতে পারছে না। যেখানে অবিতর্কিত ইসি এবং সিইসি প্রয়োজন সেখানে বিতর্ক বাড়ছে। যার ফলে সিইসি কিংবা নির্বাচন কমিশন এখনো জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারছে না। প্রথমত, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা সিইসি বারবার কথা পাল্টানোর চেষ্টা না করলেও ব্যাখ্যা পাল্টাতে চেষ্টা করেন। সেটা জনগণ ভালোভাবে নিচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, সরকারের মুখপাত্ররা সিইসি ও নির্বাচন কমিশনকে অবিতর্কিত থাকতে দিতে চান না বলেই মনে হয়। কারণ, সিইসি যা বলেন তা ‘সংশোধন’ করে দিতে চেষ্টা করেন সরকারের মুখপাত্ররা। ফলে নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সত্তা- সেই ধারণা তুলে ধরতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।
যেমন- ইভিএম, সেনা মোতায়েন নিয়ে সিইসি যা বলেন; সরকার যেন তার সে বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করা দায়িত্ব বলে মনে করে। নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ প্রশ্নেও ইসি কতটা দৃঢ় তা স্পষ্ট হতে পারেনি। কারণ, সরকারি লোকদের চিন্তা-ভাবনাকে ইসিকে বিশেষ বিবেচনায় নিতে হচ্ছে বলেই সাধারণের ধারণা। জনপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ তথা আরপিও খসড়া পর্যালোচনা নিয়েও সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে, ঘোষিত রোডম্যাপও অনুসরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করার ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণায় এক ধরনের জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। সে ক্ষেত্রে ইসি এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। তাই ধারণা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে, ইসি সম্ভবত নিষ্ঠা নিয়েও মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না; যেমনটি পারা উচিত ছিল। নির্বাচন কমিশন স্থানীয় প্রশাসনের ওপর কতটা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে, সে ব্যাপারেও জনমনে সংশয় রয়েছে। তার বাইরে, পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ইসির কাজ করার সক্ষমতা নিয়ে এখনো জনমনে আস্থা দৃঢ় হয়নি।
বর্তমান সরকার সারা দেশে বিরাট একটি সুবিধাভোগী শ্রেণী সৃষ্টি করেছে। এটা অস্বীকার করা যাবে, কিন্তু বাস্তবতা এড়ানো যাবে না। এদের দৌরাত্ম্য নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এদের ওপর প্রশাসনের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ইসিকে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইসির ভূমিকা এখনো কতটা দৃঢ়, সেটা বোঝা কঠিন। ক্ষমতাসীনেরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন; অথচ বিরোধী দল ন্যূনতম গণতন্ত্রচর্চার সুযোগও পাচ্ছে না। এ ব্যাপারে ইসির ভূমিকা এখনো অনেকটা দায়হীন।
আইন নির্বাচন কমিশনকে প্রচুর ক্ষমতা দিয়েছে, কিন্তু সেই ক্ষমতা প্রয়োগের সাহস ও সক্ষমতা দেখাতে প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রয়োজন। অতীতেও আমরা লক্ষ করেছি, ইসি নিজের ক্ষমতাটুকু স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হয় না; বরং প্রশাসনের কাছে জিম্মি হয়ে ইসি প্রচুর অনিয়মকে প্রশ্রয় দিয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের কথা বাদ দিলেও নির্বাচনকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা বিধান একং ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়া সম্ভব হয় না।
ক্ষমতাহীন সেনামোতায়েন কার্যত কোনো কাজ দেয় না। তাই সেনা মোতায়েন করতে হবে তাদের পর্যাপ্ত ক্ষমতাসহ। নয়তো জাতিকে যেখানে এনে বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা দাঁড় করিয়েছে, সেখানে একটি গ্রহণযোগ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা কঠিন।
জাতীয় সংসদের নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে রাজনৈতিক মেরুকরণ ততটা চাঙ্গা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এই মেরুকরণের ধরন-ধারণের ওপরই জাতীয় নির্বাচন নির্ভর করবে। মিডিয়ায় তথ্য এসেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কেউ দুর্ভাবনায় রয়েছে; কেউ আছেন খোশ মেজাজে। বাস্তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং ভোটাদের মনের ওপর নির্বাচন নির্ভর করবে। তবে নির্বাচন কমিশন যতটা সাফল্য ও যোগ্যতার সাথে আম্পায়ারিং করবে- গ্রহণযোগ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে কিনা সেটাই ফলাফল মিলিয়ে দেবে। এটা ঠিক, ভোটারেরা মনস্তত্ত্ব পরিবর্তনের প্রত্যাশায় প্রহর গুনছে। জাতীয় নেতাদের মনের অবস্থাও তাই। শেষ পর্যন্ত পরিবেশ পরিস্থিতি এবং ইসির ভূমিকাই মুখ্য হয়ে যাবে।
যেকোনো মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাতে সবার প্রশ্ন একটাই- কী হবে? কী হতে যাচ্ছে? নির্বাচন হবে তো? সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না, আবার ৫ জানুয়ারি ধরনের কোনো কিছুর আয়োজন চলছে না তো? এর বাইরেও অনেক প্রশ্ন করা হয়- যা উল্লেখ করা যায় না। কিংবা উল্লেখ করলে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠবে। আর জবাব-ইবা কী দেয়া সম্ভব? দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ভালো নেই। রাজনীতি অর্থনীতি-সমাজ সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে। নীতি-নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন না তোলাই ভালো। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কম কথাই সবার জন্য নিরাপদ। দেশে যখন এমন একটি গুমোট ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই কোনো বিষয়ে মন্তব্য করা যায় না। তা ছাড়া পুরো দেশটা এক ধরনের ভীতি ও শঙ্কার রাজ্যে পরিণত হয়েছে। কেউ নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একবাক্যে মন্তব্য করতে পারছেন না। রাজনীতিবিদেরা রাজনীতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে নারাজ। অর্থনীতিবিদেরা শুধু বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি হতাশাজনক।
গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, পররাষ্ট্রনীতি, দেশের উন্নয়ন, ব্যাংক পাড়ার অবস্থা, কোথাও কেউ সুখবর দিতে পারছেন না। সরকারপ্রধান ও ক্ষমতাসীন দলের লোকদের রাজনীতি আছে, তারা যা খুশি বলতে পারেন; মন্তব্য করতে পারেন, প্রতিপক্ষকে শাসাতে পারেন। ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ শোনাতে পারেন। কিন্তু পুরো জাতিকে হতাশায় ঘিরে ধরেছে। না জানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তারা ব্যর্থ হচ্ছে। অপর দিকে, সরকারি দলের ঝুড়িতে শুধুই আশাবাদ, ফকফকা ভবিষ্যৎ। এ দিকে, নির্বাচনের রোডম্যাপ শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকবে কি না তা বলা কঠিন। তবে মধ্য মে’তে দুটো সিটি নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি চলছে। গাজীপুর ও খুলনা সিটির নির্বাচনকে বিরোধী দল কৌশল ও আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছে। এটা নিশ্চিত করে বলা যায়, সরকারি দলও এই দু’টি সিটি নির্বাচনকে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণের একটা কৌশল হিসেবে নেয়ার চেষ্টা করেছে। একই সাথে নির্বাচন কমিশনও জাতীয় নির্বাচনের আগে গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচনকে টেস্ট কেস হিসেবে নিতে চেষ্টা করছে। এর সাফল্য বা ব্যর্থতার ওপর ইসির শুধু ইমেজ নির্ভর করবে না, সক্ষমতা প্রমাণের একটা সুযোগও সৃষ্টি হবে। এই ইমেজ ইতিবাচক হলে ইসির ওপর জনগণের আস্থা বাড়বে। নেতিবাচক হলে ঠিক বিপরীত ঘটনাও ঘটে যেতে পারে।
জাতীয় রাজনীতিতে নানামুখী সঙ্কট রয়েছে। অসংখ্য ইস্যু রয়েছে। আস্থা-অনাস্থার সঙ্কটও কম নেই। তাই সরকার সঙ্কট ঘনীভূত করার ক্ষেত্রে এখনো কোনো ছাড় দেয়নি। আবার বিরোধী দলও একটা সীমা পর্যন্ত ছাড় দেবে, তার বাইরে নির্বাচনকে এড়িয়ে যেতেও পারে। তবে দেশী-বিদেশী প্রভাবক শ্রেণী এবার আমাদের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বেশ উৎসাহী। এই উৎসাহে যাতে ভাটা না পড়ে সে ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী জোট সমানভাবে সতর্ক থাকার চেষ্টা করার কথা।
সরকার বিগত দিনে কী অর্জন করেছে সেটা নির্বাচনের হিসাবে প্রাধান্য পাবে না। বরং কী কী ব্যর্থতা দেখিয়েছে সেই তালিকায়ই ভোটারদের মনে দাগ কাটবে। সরকারি দল বিরোধী দলকে কোনো স্পেস দেয়নি। জনগণ এটা মাথায় নিয়েই ভোটকেন্দ্রে যাবে বলে সাধারণের ধারণা। কারণ ভোটের হাটে ভালো কাজের প্রশংসার চেয়ে মন্দ কাজের উপমাগুলো সামনে এসে যায়। জনমনে সেটাই রেখাপাত করে। সরকারি দল উন্নয়নের একটি ফিরিস্তি দিতে চেষ্টা করবে। বিরোধী দল সেসব ফিরিস্তি খণ্ডানোর চেয়ে এই সরকার ক্ষমতা প্রয়োগে কী কী বাড়াবাড়ি করেছে, সেটাই সামনে এনে তুলে ধরবে।
আইয়ুব খানের ‘উন্নয়নের দশক’ পালন জনগণ গুরুত্ব দেয়নি। এরশাদের কিছু কসমেটিক উন্নয়নেও জনগণ মনোযোগ দেয়নি। তাই, আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ফিরিস্তির চেয়ে হাজারটা নেতিবাচক কাজ, বিশেষত গণতন্ত্রকে এতটা দৃষ্টিকটুভাবে নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি জনগণ ভালোভাবে নেবে বলে মনে হয় না।
তা ছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যা, খুন, গুম, জেল-জুলুম বেশি মাত্রায় সামনে এসে যাবে। দলবাজির বিষয়টি জনগণ আমলে নেবে। সবচেয়ে বড় কথা, জনগণ বিগত দিনের দুর্নীতি, কেলেঙ্কারির সাক্ষী হয়ে আছে। জনগণ প্রত্যক্ষ দেখা এই বিষয়গুলোর সাক্ষ্য দেয়ার জন্য কোর্টে যাবে না। প্রতিবাদ করার সুযোগ পায়নি বলে সাক্ষ্য দিতে যাবে না। তবে ব্যালটটা হাতে পেলে এবং সেটা বাক্সে ফেলার সুযোগ পেলেই হবে।
একটি উদাহরণ দেয়া যাক, কোটা আন্দোলনে সরকার কী আচরণ করেছে তা জনগণ দেখেছে। চোখ বেঁধে মিন্টো রোডে নেয়ার ব্যাপারে জনগণ কি কোনো তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে? না দেখায়নি। যা দেখেছে, তা মনের ভেতর লালন করে রেখে দিয়েছে। প্রয়োজনে সেটা কাজে লাগাবে।
খালেদা জিয়ার বিষয়টি জনগণের মনে এতটা দাগ কেটেছে যে, সেটাই সরকারকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে ফেলে দিতে পারে। বিচার-আচার নিয়ে জনগণ উচ্চবাচ্য করেনি। করতেও যাবে না। কিন্তু যে প্রতিক্রিয়া দেখাবে সেটা ভাবনারও অতীত। তা শাসকেরা এখনো ভাবতে পারছে না। এখনো শাসকেরা যেদিকে তাকাচ্ছেন, সেদিকেই নিজের লোক দেখতে পাচ্ছেন। সবাই কর্তার ইচ্ছায় কীর্তন গাইতে চেষ্টা করছে। এটাই যেকোনো স্বৈরশাসক ও একনায়কের দৃষ্টিভ্রম। তারা কোনো মানুষকে অন্য মতের ভাবতে পারে না। প্রশাসনের কাউকে প্রতিপক্ষের চিন্তা করেন না। কোনো পেশাজীবীকে ভাবতে চান না, তাদের আলাদা মত আছে, চিন্তাভাবনা আছে। ঠিক জনগণকে নিয়েও শাসকেরা একই ধরনের ভাবনায় আচ্ছন্ন থাকেন। কিন্তু সময় যখন পাল্টে যায় তখন তারা মানুষকে ভিন্ন চেহারায় ও মেজাজের দেখতে পান। ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে অতীত যতটা স্মৃতিতে আছে, ততটাই মনে হয় সব একনায়ক একই ধরনের আচরণ করে থাকেন। একই ধরনের ভাবেন। একই ধরনের সব মানুষকে নিজের লোক ভাবতে চেষ্টা করেন। যতক্ষণ না তখত উল্টে যায় ততক্ষণ তারা শুধু দুর্বিনীত থাকেন না, এতটা বেপরোয়া থাকেন যে, মনে হয় তারা ছাড়া আর কেউ ক্ষমতার যোগ্য নন। প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। যারা আছে তারা তো দুর্বল। ফুঁৎকারে উড়ে যাবে। তা ছাড়া এ ধরনের একনায়ক শাসকদের ঘিরে গড়ে ওঠে একটি অনুগত তোষামোদকারী শ্রেণী। এরা ভুল তথ্য দেয়, বাহবা নেয়ার জন্য অন্যদের বা প্রতিপক্ষের অবস্থান যথাযথভাবে তুলে ধরে না। তুলে ধরলেও এমনভাবে উপস্থাপন করে যে, তারা ফুঁৎকারে উড়ে যাবে।
ইতিহাসের এই শিক্ষাটাই শাসকেরা সময়মতো কাজে লাগান না। আমলে নেন না। যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকেন, ততক্ষণ সব কিছু তুচ্ছার্থে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। এটাই ইতিহাসের বড় নির্মম শিক্ষা। যদিও আমরা কোনো শাসকের ভাগ্য গুণে বলে দিতে পারি না, কার কী পরিণতি হবে বা কখন হবে। এটা বিধাতা নিজের হাতে রেখে দিয়েছেন। তবে জানিয়ে দিয়েছেন- দুর্বিনীত এবং দুঃশাসক- যারা জনগণের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ জুলুম করে, তাদের পরিণতি কোনো দিন ভালো হয় না।
এবার বিশ্ব পরিস্থিতি ও জাতীয় প্রেক্ষাপট একসাথে পাল্টে গেছে। আঞ্চলিক রাজনীতিতে বোঝাপড়ার ধরনও পাল্টে যেতে শুরু করেছে। এখন আঞ্চলিক রাজনীতিতে আমরা একক খেলোয়াড় নই। খেলোয়াড়ের সংখ্যা শুধু বাড়েনি, আরো বাড়তি কিছু করার চেষ্টা করে যাবে।
পড়শি মিয়ানমার কী খেলাই না খেলছে- সেটা বোঝার জন্য বেশি প্রজ্ঞার প্রয়োজন পড়ে না। ভারত-চীন কিভাবে আমাদের আগামী দিনের জাতীয় রাজনীতির পক্ষ হবে, সেটা এখন ছোট কোনো প্রশ্ন নয়। এই প্রশ্নের জবাব পাওয়ার মতো কূটনৈতিক দূরদর্শিতাটুকুও আমাদের আছে বলে মনে হয় না।
আঞ্চলিক রাজনীতির সাথে বিশ্ব রাজনীতির পারঙ্গম অনেক খেলোয়াড় রয়েছে যারা তাদের স্থানীয় এজেন্টদের সময়মতো কাজে লাগাবে এবং ঘুড়ির রশির মতো টানবে। মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতিতে বিশ্বকে নতুনভাবে ভাবাচ্ছে। সেই ভাবনায় আমরা জড়িয়ে গেছি। ভবিষ্যতে আরো বেশি মাত্রায় জড়াতে যে হবে না সেই নিশ্চয়তা কে দেবে? একটা কথা ভুলে থাকা কোনোভাবে সম্ভব হবে না। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচন শুধু বাংলাদেশের মাঠের একটা খেলা নয়। এখানে বহু উৎসাহী দর্শক থাকবে, আম্পায়ার থাকবে অনেকেই। তা ছাড়া, দেশীয় রাজনীতির অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা বসে থাকবেন না। তারা নতুন করে অঙ্ক কষবেন। সেই অঙ্ক এরশাদের মতো সাধারণ কোনো অনুগত খেলোয়াড়ের হবে না, তাই জাতীয় নির্বাচন হবে জাতীয় প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের জন্য। এই সত্যটি কেউ মস্তিষ্ক থেকে বাদ দিলে ভুল করবেন।
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন