Image description

মিনার রশীদ

এই দুটি ছাত্রসংগঠনের মধ্যে পারস্পরিক মধুর সম্পর্ক কখনোই ছিল না। বলতে গেলে, কাছে বা সুদূর অতীতের বেশিরভাগ সময় পারস্পরিক একটা অবিশ্বাস, অনাস্থা কাজ করেছে। একটি জায়গাতেই মিল ছিল, তা হলো উভয়ের একটা কমন শত্রু ছিল, উভয়কেই সমূলে ধ্বংস করতে চেয়েছে।

এটাই উভয় সংগঠনকে কিছুটা কাছাকাছি টেনে এনেছিল। এখন কমনশত্রু নিষ্ক্রিয় হওয়ায় পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সেই কমন শত্রু বন্ধু সেজে এখন আরাম করে এই আগুনে হাওয়া দিচ্ছে!

‘১৯৯১ সালে জামায়াতের নিঃশর্ত সমর্থন নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও কিছুদিনের মধ্যেই এ সম্পর্ক অত্যন্ত তিক্ত হয়ে পড়ে! সে সময় একদলের হাতে অন্যদলের অনেক নেতাকর্মী হতাহত হয়েছেন। কাজেই রাজনৈতিকভাবে এখন যখন আরো মুখোমুখি হয়ে পড়েছে, বিভিন্ন স্বার্থের যোগ-বিয়োগ এসেছে, তখন এ দুটো সংগঠনের মধ্যে মধুর সম্পর্কের স্বপ্ন দেখাও বোকামি। তবে বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমরা যখন জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর দাঁড়িয়ে আছি, তখন এ ধরনের কাইজ্জা বা ঝগড়া অশনিসংকেত হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে!

খালেদা জিয়ার ওপর সবচেয়ে বড় জুলুমটি করা হয়েছে তাকে কথিত দুই বেগমের ফ্রেমে বন্দি করে হাসিনার সঙ্গে তুলনা করে। বলা যায়, এটা ওনার দুর্ভাগ্য। শুধু নারী হওয়ার কারণেই খালেদা জিয়াকে এই অপবাদটি শুনতে হয়েছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল, তখন এ দেশের সব রাজনৈতিক ঝগড়াকে দুই বেগমের ঝগড়া হিসেবে চালানো হতো।’

এক সাইকোর মন্দ প্রভাবকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে এ দেশের কথিত নিরপেক্ষতাবাদী মিডিয়া বা মিথ্যা সমতাবাদীরা (False equalizer) এই অনৈতিক কাজটি করতেন! তথাকথিত এক-এগারোর প্রবক্তারা তাদের সেই হঠকারী কর্মকাণ্ডের একটা নৈতিক ভিত্তি তৈরি করতে পেরেছিলেন এই মিথ্যা সমতাকরণ থেকে। যার নাম দেওয়া হয়েছিল মাইনাস টু ফর্মুলা! আমরা তখন আসল বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করতে চাইলে আলো-স্টারগং আমাদের দলকানা হিসেবে ট্যাগ মারত! সত্যি, তখন বেকায়দা অবস্থায় পড়ে গিয়েছিলাম।

এই দুষ্টচক্র বা দুষ্টবুদ্ধির বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করলাম একটা নলেজ বেইজড বা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু সেই চেতনাবাদীরা আবার কৌশলে বিএনপির ওপর ভর করেছে এবং আমাদের আগের মতোই বেকায়দা অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। আগে সত্য বললেই বিএনপির দালাল বলে গণ্য হতাম, এখন সত্য বললে বা লিখলে জামায়াতের দালাল কিংবা রাজাকার বলে গণ্য হব।

কপালে যাই থাকুক, চলুন শুরু করি আল্লাহর নামে।

বিএনপির পরম শুভাকাঙ্ক্ষী এক ভাই ছাত্রদলের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আমার কাছে পাঠিয়েছেন। ছাত্রশিবির মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে মধুদার স্মৃতির প্রতি যে অসম্মান দেখিয়েছেন, তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। লেখাটির ভেতর পড়ে আবার লেটার হেডের দিকে ভালো করে তাকালাম! ভাবলাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রলীগ নামের কোনো নতুন সংগঠন গজিয়ে উঠল কি না!

এটা বললে অত্যুক্তি হবে না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে ছাত্রলীগ যে কাজ করত, এখন সেই মহান চেতনা রক্ষার দায়িত্ব অনেকটাই কাঁধে নিয়েছে ছাত্রদল। মধুদার মধুর ক্যান্টিনকে ছাত্রশিবির ‘অপবিত্র’ করে ফেলেছে। যে ছাত্ররা একসঙ্গে স্লোগান দিয়েছেন, তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার। সেই ছাত্রদের এক অংশ অন্য অংশকে একই ভঙ্গিমায়, একই উচ্চারণে আক্রমণ করছে।

স্বৈরাচারে বলুক বা অন্য কোনো তেঁতুলাচারে (তেঁতুল+আচার) বা মিষ্টাচারে (মিষ্টি+আচার) বলুক, জেন-জি প্রজন্ম রাজাকার উপাধি গ্রহণ করতে বিন্দুমাত্র মনোযাতনায় ভুগে না, ভুগবে না । নতুন প্রজন্মের এই মেসেজটি অরিজিনাল রূপ-রস-গন্ধসহ আত্মস্থ করতে বিএনপি ও ছাত্রদলের কিছু নেতৃত্ব শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

একটা বিষয় কয়েক দিন ধরে সিরিয়াসলি ভাবছি, ‘আওয়ামী লীগ গত ৪০/৫০ বছর একটা-দুইটা শিবির ধইরা এবং সকাল-বিকাল নাশতা কইরাও এদের শেষ করতে পারল না। এখন আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক মোলায়েম বিএনপি কীভাবে এদের শেষ করবে?’ কাজেই বিএনপির এই জামায়াত পলিসির অর্জন আসলে কী হবে? বিএনপিকে কে বা কারা এই ভয়ংকর পথে ঠেলে দিচ্ছে?

প্রত্যেকটা কাজের বা অ্যাকশনের পেছনে একটা টার্গেট থাকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এভাবে নতুন করে সামনে এনে বিএনপি বা ছাত্রদল এই মুহূর্তে কী অর্জন করতে চাচ্ছে?

এটা কি নিজের নাক কেটে শিবিরের যাত্রাভঙ্গের প্রচেষ্টা, নাকি অন্যকিছু? শেখ হাসিনা একবার মুখ খুললে নাকি আওয়ামী লীগের কয়েক লাখ ভোট কমে যেত। একইভাবে বিএনপি ও ছাত্রদলের কিছু নেতার প্রতিটি অ্যাকশন বা উচ্চারণে কয় লাখ ভোট কমে যাচ্ছে, সেই হিসাবটি বিএনপি কখন করতে সক্ষম হবে জানি না।

ছাত্রদল কেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চিপে তিতে করা চেতনার লেবুটাই আবার চিপতে হচ্ছে? কারা এই ছাত্রদলের নতুন অভিভাবক সেজে বসেছেন? কারা এখন বিএনপি এবং ছাত্রদলের জন্য নতুন একজন জাফর ইকবাল, নতুন একজন মোজাম্মেল বাবু, নতুন একজন ফারজানা রূপা খুঁজে ফিরছেন?

এটাই তো হওয়া উচিত ছিল আজকের ও আগামীদিনের রাজনীতি। চেতনানামক ভূতের তুষ্টির জন্য জাতির সম্পদ ও সময়ের আর অপচয় নয়Ñ জেন-জি প্রজন্ম জানতে চায় আঠারো কোটি রক্ত-মাংসের বনি আদমের জন্য বিএনপি তথা ছাত্রদলের চিন্তাভাবনা কী?

ছাত্রদলের কাজের পরিধিও মনে হয় এখন আরো অনেক বেড়ে গেছে! আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ভুল করে রাজাকারদের একটা তালিকা প্রকাশ করে ফেলেছিল! প্রায় ১০ হাজার রাজাকারের সেই তালিকায় আওয়ামী লীগের ছিল ৮০৬০ জন, বিএনপির ১০২৪, জাতীয় পার্টির ৮৭৯ এবং জামায়াতে ইসলামীর ৩৭ জন ।

পরে চেতনামিশ্রিত ‘থুক্কু’ দিয়ে সেই তালিকা জনসম্মুখ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এই অঙ্কটি মাশাআল্লাহ আওয়ামী লীগের আট ভাগের এক ভাগ হলেও রেজিস্টার্ড রাজাকারের দল থেকে কমছে কম ২০ গুণ বেশি! কাজেই সহজ তালিকায় রাজাকার মোকাবিলার এই টেকনিক বুমেরাং হয়ে পড়তে পারে।

এখন ছাত্রদল নিজ দলের সেই রাজাকারদের বিষয়টি কীভাবে সুরাহা করবে? তা ছাড়া শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে এবং আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে রাষ্ট্রপতি বানানোর জন্য খালেদা জিয়ার যে বিচার ছাত্রলীগ পুরোপুরি করতে পারেনি, চেতনার সেই অসমাপ্ত বিচারটিও এই ছাত্রদলকে বোধহয় শুরু করতে হবে।

মোদ্দা কথাটি হলো, দুটি দল মিলে যা শুরু করেছে, তাতে নিজের ফকফকা ভবিষ্যৎটি পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। শেখ হাসিনার ‘হাড়-কড়মড়ে’ সেই ব্যারামটি বিএনপি তথা ছাত্রদলের কিছু নেতার মধ্যে কেমন করে এত তীব্র কিছিমে সংক্রমিত হলো, সেটা নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি । লাখ লাখ তৃণমূল নেতাকর্মীকে জমের সঙ্গে মোলাকাত হওয়ার আগ পর্যন্ত আবার ধানক্ষেতে বা জঙ্গলেই কাটাতে হবে! এরই সুবন্দোবস্ত করছে আমাদের প্রিয় ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবির।

এখন বলতে পারেন, আমিও কি ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের মধ্যে ফলস ইকোয়েলাইজেশন শুরু করেছি। আসলে এক হাতে তালি বাজে না। কাজেই অন্য সেই হাতটিও একটা খালেস নিয়তে খুঁজতে চেয়েছি।

একটু খোঁজাখুঁজির পর মনে হলো তুলনামূলক কুশলী ছাত্রশিবিরও ‘আম্মা ডাবল’ টেকনিক প্রয়োগ শুরু করেছে। বিষয়টি খোলাসা করার জন্য নিচের গল্পটি বলা জরুরি।

আমি তখন ত্রিশাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। সময়টা ১৯৭৬ সাল। মান্নান স্যার নামে খুবই রসিক একজন শিক্ষক ছিলেন । ক্লাসে এসে তিনি সুন্দর সুন্দর গল্প বলতেন। বিশেষ করে ছাত্রীরা দজ্জাল শাশুড়ির পাল্লায় পড়লে কীভাবে আত্মরক্ষা করতে পারবে, সেই উপায় বা কৌশল শিখিয়ে দিতেন। এই মহৎ উদ্দেশ্যেই তিনি ‘আম্মা ডাবল’ গল্পটি করেছিলেন।

এক দজ্জাল শাশুড়ি তার ছেলের বউকে সারাক্ষণ বকাঝকা করতেন। নিরীহ বউটি নীরবে তা সহ্য করত। বউয়ের এই অসহায়ত্ব ও নীরবতা শাশুড়ির দজ্জালপনা আরো বাড়িয়ে দেন। এটা দেখে পাড়ার একজন দয়ার্দ্র ব্যক্তি সেই বউকে কানে কানে কিছু বুদ্ধি শিখিয়ে দেন।

পরদিন সকালে ছেলের বউয়ের জীবনে ৫ আগস্ট শুরু হয়ে যায়। শাশুড়ি যথারীতি গালাগাল শুরু করেন। বউ কাছে গিয়ে আস্তে করে বলে, আম্মা এতক্ষণ আপনি যা গালাগাল করলেন আমি তার ডাবল গালি দিলাম। এতে শাশুড়ি রাগে, ক্ষোভে গালি, চিৎকার, চেঁচামেচি আরো বাড়িয়ে দেন। বউ কাছে এসে আস্তে করে বলে, আম্মা ডাবল। এরকম কয়েকদিন চলার পর ক্লান্ত শ্রান্ত শাশুড়ি বউকে ডেকে বলে, মাগো তুমি আমারে আর ‘আম্মা ডাবল’ কইও না। আমিও তোমাকে আর গালাগাল করব না।

বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে সাম্প্রতিক বাগযুদ্ধে এই গল্পের ছায়াটি দেখতে পাই। এই টেকনিকটি বা থেরাপিটি প্রতিপক্ষ বিএনপির ওপর প্রয়োগ করছে জামায়াত!

‘আগে একদল খাইছে, সামনে আরেক দল খাইবে, এটা হতে দেওয়া যাবে না। জামায়াতের আমিরের মুখ থেকে নিঃসৃত আপাতত নিরীহ ও সরল এ কথাটিই দুটি দলের মধ্যে এই দূরত্বটি সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে । ‘পরে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ-মাহফিল থেকে উচ্চারিত সেই একই বাক্যটি সুপার ডুপার হিট হয়ে যায়। এর একটি ব্যাখ্যা জামায়াতের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। তারা ব্যাখ্যা দেন এভাবে যে, ‘আমরা কাউকে টার্গেট করে এ কথা বলিনি। এটা তো আমরাও হতে পারি।’

কিন্তু এ কথাটি ডাবল মিনিং যুক্ত, ‘চোলিকে পিছে ক্যাহা হায়’ নামক চটুল গানটির মতো। আমাদের যৌবনে এই গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। যুক্তি দেখানোর সময় চোলির ভেতরের অন্তর বা হৃদয়কে টেনে আনা হয়। কিন্তু আসলে যা বোঝানোর তা মাধুরী দীক্ষিত পরিচালকের নির্দেশমতো তার অঙ্গভঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।

কাজেই পারস্পরিক সম্পর্ক আরো খারাপ যাতে না হয়, তজ্জন্যে জামায়াত এবং শিবিরকে এ ধরনের আম্মা ডাবল টেকনিক কিংবা ডাবল মিনিংযুক্ত ভাব ও ভঙ্গি পরিহার করতে হবে।

জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের যে কথাটি মনে রাখতে হবে

অনলাইন জগতে জামায়াত-শিবিরের বিশাল উপস্থিতি রয়েছে। জামায়াত-শিবিরের টপনেতৃত্ব এই কাইজ্জায় অংশগ্রহণ তেমনভাবে না করলেও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা খুবই সক্রিয়। পুরো পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে এদেরও একটা বিশাল ভূমিকা রয়েছে। অর্থাৎ নীরবে ‘আম্মা ডাবল’ বলে এরাই আগুনে ঘিটি ঢালছে। সার্বিক শান্তির লক্ষ্যে জামায়াত ও শিবির নেতৃত্বকে এই বিশাল বাহিনীকে একটু সামলাতে হবে। তা না হলে এর দায় জামায়াত নেতৃত্বও এড়াতে পারবে না।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ব্যাপারে একটি জনমত সৃষ্টি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ছাত্রশিবির একটি তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। কারণ প্রচলিত ধারার ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলেও ছাত্রশিবিরের রাজনীতি বন্ধ হবে না। এ রকম অবস্থাতেও ছাত্রশিবির তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ছাত্রশিবির একধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক অসততায় জড়িয়ে যাচ্ছে বলে অনুমিত হচ্ছে, যাকে তাদের দৃষ্টিতে হেকমত বলে গণ্য করা হয়।

কারণ আপনারা বিরাজনীতিকরণকে উৎসাহিত করছেন। যতই জনপ্রিয় হোক না কেন, এই চিন্তাটি ভয়ংকর। ছাত্রদলের সঙ্গে সঙ্গে আপনারা ছাত্রশিবিররাও এর করুণ শিকার হয়েছিলেন। ছাত্রদল কিংবা ছাত্রশিবিরের কোনো ছেলে হত্যা বা গুমের শিকার হলে পাবলিক সহানুভূতি তেমন করে জুটত না। বরং ঠিক শাস্তি পেয়েছে এ রকম একটা ভাবনা কাজ করত। এখন সাময়িক সুবিধা নেওয়ার জন্য আপনারা একটা ইনকারেক্ট পলিটিক্যাল স্ট্যান্ড নিচ্ছেন, যার জন্য ছাত্রদলের সঙ্গে একটি মুখোমুখি অবস্থানে চলে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বের প্রতি বিশেষ নিবেদন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে মোকাবিলার জন্য অবশ্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে কৌশল গ্রহণ করবেন। কিন্তু সেই কৌশল যেন আপনাদের নিজের কিংবা জাতির গলার কাঁটা না হয়ে পড়ে। তা না হলে কলিজার ব্রাদারবৃন্দ, আবার আমাদের সেই আগের ধানক্ষেতে গিয়েই একত্রে রাতযাপন করতে হবে, আবার সেখানেই পরস্পর গলাগলি করতে হবে!

জানি, আপনারা একে অন্যকে সহ্য করতে পারেন না। কিন্তু আওয়ামী বাকশালের মোকাবিলায় আপনাদের উভয় গ্রুপকে পছন্দ করে, ভালোবাসে এ রকম অনেক সুহৃদ আপনাদের আছে। দয়া করে এদের কথাটিও ভুলে যাবেন না।

লেখক : কলামিস্ট