আনুষ্ঠানিকভাবে লোগো উন্মোচন করেছে সদ্য গঠিত সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। ‘সম্মিলিত শক্তিতে সমৃদ্ধ আগামী’—এই স্লোগান সামনে রেখে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ব্যাংকটির লোগো উন্মোচন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লোগো উন্মোচন নতুন ব্যাংকের কার্যক্রম শুরুর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটি সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের পরিচয় ও ভবিষ্যৎ পথচলার প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।
পাঁচটি ইসলামী ব্যাংকের সমন্বয়ে গঠিত এই নতুন ব্যাংক দেশের ইসলামী ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্টরা।
পাঁচ ব্যাংকের একীভূতকরণ
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক—এই পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত হয়ে গঠিত হয়েছে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
নতুন এই ব্যাংকের মূল লক্ষ্য হলো ইসলামী ব্যাংকিং খাতে বিদ্যমান তারল্য সংকট নিরসন এবং দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা আমানতকারীদের অর্থ ধাপে ধাপে ফেরত দেওয়া।
মূলধন ও পরিচালনা
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার এবং ১৫ হাজার কোটি টাকা আমানতকারীদের শেয়ার থেকে এসেছে। ব্যাংকটি আপাতত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। এর প্রধান কার্যালয় মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনে অবস্থিত।
পরিচালনা পর্ষদে ভারসাম্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, কৌশলগত কারণে প্রাথমিকভাবে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সরকারি কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বেসরকারি খাতের অভিজ্ঞ পেশাজীবীদেরও পর্ষদে যুক্ত করা হবে। এতে ব্যাংকটি একটি শক্তিশালী আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
আমানতকারীদের অর্থ ফেরত প্রসঙ্গ
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের আওতায় থাকা আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র।
তিনি বলেন, ব্যাংকটি সদ্য কার্যক্রম শুরু করায় আপাতত সীমিত পরিসরে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে কোনো আমানতকারী তার অর্থ হারাবেন না—এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বর্তমানে প্রতি আমানতকারী সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। অবশিষ্ট অর্থ নিজ নিজ হিসাবে সুরক্ষিত থাকবে এবং প্রচলিত হারে মুনাফা যোগ হতে থাকবে। ব্যাংক আর্থিকভাবে আরও শক্ত অবস্থানে পৌঁছালে পর্যায়ক্রমে বাকি অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হবে।
চেক ও হিসাব পরিচালনা
দুই লাখ টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে গ্রাহকরা নিজ নিজ পুরোনো শাখায় গিয়ে বিদ্যমান চেক বই ব্যবহার করেই অর্থ তুলতে পারবেন। নতুন চেক বই ইস্যু সময়সাপেক্ষ হলেও এতে গ্রাহকদের কোনো অধিকার ক্ষুণ্ন হবে না।
বড় আমানত নিয়ে সিদ্ধান্ত পরে
বড় অঙ্কের আমানত শেয়ারে রূপান্তরের বিষয়ে আরিফ হোসেন খান বলেন, বিষয়টি এখনো ধারণা পর্যায়ে রয়েছে। ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হলে পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এটি বাধ্যতামূলক নয়, বরং ঐচ্ছিক হবে।