Image description

দেশে ঈদ উপলক্ষে নতুন টাকা কেনাবেচার প্রচলন রয়েছে। তবে ঈদ ছাড়াও নতুন টাকা কেনাবেচা হয়। অনেকেই ছোটদের ঈদে সালামি দেওয়ার জন্য নতুন নোট কিনে থাকেন। এর জন্য অনেক সময় অতিরিক্তি টাকা দিতে হয়। এক্ষেত্রে পণ্যের মতো কমবেশি করে মূল্য নির্ধারণ করে বিক্রি করা হয়। যেহেতু কাগজের নোট পণ্য নয়, তাই ইসলামে এই ব্যবসার অনুমোদন নেই। 

ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদরা এটাকে নাজায়েজই বলেছেন। ইসলামে এক প্রকারের দুটি জিনিস কমবেশি ক্রয়-বিক্রয় করা নাজায়েজ। কারণ, এ রকম লেনদেনে অতিরিক্ত অংশ সুদ হয়ে যায়।
 
তাই আলেমরা, একে সুদি কারবারের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করেন। এ ধরনের ব্যবসায় জড়িত হওয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবে না। কারণ টাকা বা কাগজের নোট পণ্য নয়, বরং এটি মূল্য, তাই এ নিয়ে ব্যবসা করার অনুমোদন নেই ইসলামে।
 
তবে অনেক উলামায়ে কেরাম নতুন টাকা সংগ্রহের একটা পদ্ধতিকে জায়েজ বলেন অপারগতার ক্ষেত্রে। একেবারে অপারগতার ক্ষেত্রে নতুন টাকা সংগ্রহ করার পরিশ্রম বাবদ কিছু টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। শর্ত হলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে যে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হচ্ছে নতুন টাকা সংগ্রহের পারিশ্রমিক হিসেবে, নতুন টাকার মূল্য হিসেবে নয়।
 
ইসলামের পরিভাষায় মুদ্রার লেনদেনকে বাইয়ুস সারফ বলা হয়। এটি দুই ধরনের হয়ে থাকে। এক. দুটি ভিন্ন ভিন্ন দেশের মুদ্রা। দুই একই দেশের মুদ্রা।
 
প্রথম প্রকার তথা এক দেশের মুদ্রা আরেক দেশের মুদ্রার বিনিময়ে কম-বেশি করে বেচাকেনা করা জায়েজ।তবে শর্ত হলো, বেচাকেনার বৈঠকেই অন্তত এক পক্ষকে মুদ্রা সোপর্দ করতে হবে। কোনো একটি পক্ষও যদি বিনিময়কৃত মুদ্রা বুঝে না পায়, তবে সেই বেচাকেনা বৈধ হবে না। (জাদিদ ফিকহি মাসায়িল ৪/২৮; জাদিদ মুআমালাতকে শরয়ি আহকাম ১-১৩৯)
 
আর দ্বিতীয় প্রকার তথা একই দেশের মুদ্রা হলে পরস্পর লেনদেনে সমতা রক্ষা করা জরুরি। কমবেশি করে বেচাকেনা করা মোটেও জায়েজ হবে না। এমনটি করলে সেই লেনদেন সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে যা বেশি নেওয়া হবে তা সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবুর রিবা, ০৩/৮৫, মুসতাদরাক আলাস সাহিহাইন ২/৬৫-৬৬, শারহু মাআনিল আসার, ৫৫৫৪, সুনান দারু কুতনি ৩০৬০)