সাপ্তাহিকী
|
সাইফ বরকতুল্লাহ
|
|
বাংলাদেশে মিডিয়ার রাজনীতি ( পর্ব-০৭ )
30 Sep, 2013
এবারের বিষয়- বিএফইউজে-ডিইউজে নির্বাচন, সাংবাদিক সংগঠন এবং রাজনীতি। তো শুরু করা যাক।
এক.
আচ্ছা, আপনি এখন কীভাবে চলেন ?
হ্যাঁ, প্রিয় পাঠক, গত কয়েকটা দিন যেখানেই গেছি, অনেকেই এই প্রশ্নটা আমায় করেছে। কিন্তু এর কোন উত্তর আমি দিতে পারিনি। এ প্রশ্নটা করার কয়েকটি কারণ আপনাদের বলি, সংবাদের শীর্ষে থাকা জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল দিগন্ত আজ চার মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ। বন্ধের সময় সরকার বলেছিল নিতান্তই সাময়িক। কিন্তু আজ চার মাস পার হলেও সরকারের সে ‘সাময়িক’ নিষেধাজ্ঞার বাধা আর উঠে যায়নি দিগন্তের ওপর থেকে।
দুই.
গত কয়কমাস ধরে দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টেলিভিশন, আমারদেশসহ বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ার দাবিতে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ) একই ব্যানারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি (জাতীয় প্রেসক্লাবে) সহ বিভিন্ন আন্দোলন করেছে। তবুও এর কোন সুফল পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয়, ১৫জন সম্পাদক, বেসরকারী টেলিভিশন মালিকরাও এসব বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ার দাবিতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। তারপরও কোন আলোর মুখ দেখেনি।
তিন.
গত ২০ সেপ্টেম্বর ডিইউজে (একাংশ) ও ২১ সেপ্টেম্বর বিএফইউজে (একাংশ) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। দুইটা নির্বাচনই নিজে উপস্থিত থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। এ নির্বাচন নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। ফেসবুকে তো ইতিমধ্যে ঝড় বয়ে গেছে। কিন্তু তাতে কী লাভ হলো? নির্বাচন শেষে যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তারা কী পারবেন সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষা করতে? তারা কী পারবেন বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ার কোন উদ্যোগ নিতে? কোন কোন প্যানেলের ব্যানারে দেখলাম, লেখা আছে, সাংবাদিকদের রুটি রুজি রক্ষায় অমুককে ভোট দিন। যারা এই শ্লোগান নিয়ে ভোট নিলেন, তাদের বলব, যদি সাংবাদিকদের রুটি রুজির কথা চিন্তা করেন, তাহলে বন্ধ মিডিয়ার বেকার হওয়া প্রায় সহস্রাধিক সাংবাদিকরা কী দোষ করল?
চার.
গত রমজানে জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) একাংশের আয়োজিত ইফতার মাহফিল ছিল। এখানে দেখেছি নামি-দামি বিভিন্ন ব্যাক্তিরা ছিল। ছিল সাংবাদিক নেতারাও। ছিল পলিটিক্যাল ম্যানও। সেখানে সাংবাদিক নেতারা জানাল, দাওয়াত পত্র ছাড়া কেউ এই ইফতার মাহফিলে প্রবেশ করতে পারবেনা। কথাটা শুনে একটু হতবাক হলাম। এখানে বলা হলো, যারা এই সংগঠনের মেম্বার তারাই শুধু যেতে পারবে। অথচ, গত ২/৩ মাস ধরে প্রেসক্লাবে বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়ার দাবিতে যারা অংশ নিয়েছিল, এদের অধিকাংশই এই সংগঠনের মেম্বার না, সাংবাদিক। আমি দেখলাম, সাংবাদিক নয়, ইফতারে যেতে হলে মেম্বার হতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সংগঠনের অধিকাংশ মেম্বাররাই সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের প্রোগ্রামে অংশ নেননা। শুধূ সুযোগ সুবিধা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
পাঁচ.
গত জানুয়ারীতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের এর নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আমিও নতুন সদস্য হবার জন্য আবেদন করি। পরে জানা যায়, ঠিকভাবে সুপারিশ করা হয়নি, তাই সদস্যপদ দেয়া হয়নি। একজন তরুণ সাংবাদিক হিসেবে ব্যাপারটা আমাকে এ ধরণের সাংবাদিক সংগঠনের সদস্য হতে নিরুৎসাহিত করেছে।
লেখক: সাংবাদিক, কবি ও গবেষক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন