সরকার থাকে, কিন্তু সরকার পরিচালনায় দল আসে, দল যায় । ব্যতিক্রম শুধুমাত্র স্বৈরশাসকদের আমল, স্বৈরশাসকরা জনমতের তোয়াক্কা করেন না । স্বৈরশাসকরা সর্বদা তোয়াজকারী চেলা চামুন্ডা পরিবেষ্টত থাকত, চামচা বেষ্টিত শাসকরা তার শাসনের প্রকৃত প্রতিক্রিয়া না শুনে উল্টো মিথ্যা প্রশংসা শুনতে শুনতে জনগন থেকে সরতে সরতে যোজন যোজন দূরত্ব তৈরী করত । জনমতের পরীক্ষায় শাসকের প্রকৃত চেহারা উন্মোচনের ভয়ে চেলা চামুন্ডা ও চাটুকারগোষ্ঠী জনমত ডাকাতি করে সরকার ও দলকে অপরিবর্তিত রাখত । কিন্তু সর্বশেষ ৯০ এর গনবিক্ষোভে স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরশাসক অবসান ঘটে । দেশে এসেছে সংসদীয় গনতন্ত্র, পাল্টেছে শাসন পদ্ধতি, যুগের সাথে উন্নত হয়েছে তথ্য প্রযুক্তি ও জনগনের চিন্তা চেতনার মান । কিন্তু যুগের সাথে পরিবর্তন আসেনি শাসক ও জনগনের দূরত্বে । এর কারন শাসকের চোখে পর্দা বা ঠুলি পড়িয়ে রাখেন এক শ্রেনীর সুবিধাভোগী নেতা ও প্রশাসনিক চাটুকার গোষ্ঠী । তাই মেয়াদান্তে জনমতের প্রতিফলনে অবধারিত বিদায় বরণ করতে হয় শাসনকারী সরকারী দলটির । ৯০ পরবর্তী প্রতিটি দলই এভাবে আসা যাওয়ার মধ্যে আছে, দ্বিতীয়বার শাসন ক্ষমতা ফিরে পায়নি কেউ ।
চাটুকার বেষ্টিত ও জনগন বিচ্ছিন্ন এ ধরনের সরকারী দলের বিদায় অবশ্যই সচেতন নাগরিক সমাজের প্রশংসনীয় নীরব প্রতিবাদ, যা জনগন ভোটের মাধ্যমে জানিয়ে থাকেন । জনগনের সামনে বিকল্প না থাকায় নিয়মিত বিরতি দিয়ে বিরোধী দলটি পরবর্তী সরকার গঠনের সুযোগ পায় । এই বিরোধী দলটি সরকারে এসেই স্বভাবজাত প্রতিহিংসায় মত্ত হন এবং পূর্ববর্তী সরকারের সমস্ত উন্নয়ন কর্মসূচীকে রাজনৈতিক বিবেচনায় বন্ধ করে দেন । এতে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ব্যহত হয় এবং দেশ ও দেশের জনগনের মাথায় চাপে বাড়তি ঋণের বোঝা । প্রতিহিংসার রাজনীতি ও ঘূর্ণায়মান দ্বিদলীয় শাসনে দেশের অর্থনীতি তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হচ্ছে । বর্তমান সরকার তার মেয়াদের শেষ প্রান্তে, পরবর্তী সরকারের ড্রেস রিহার্সেল চলছে সর্বত্র । জনগন আওয়ামী লীগের শাসনে বিরক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে ভোট দিচ্ছে আর এই ভোট যাচ্ছে বিএনপির ঘরে, দেখা যাবে পরবর্তীতে আবার বিএনপি শাসনে বিরক্ত হয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে, আর এই নেগেটিভ ভোটের প্রভাবে দুই দলের শাসন চলবে পালাক্রমে । পালাক্রমের এই শাসন দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক হলে ভালোই হত । সবাই কমবেশী মনে করেন এই নেগেটিভ ভোটে গঠিত পালাক্রমের এই শাসনে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ।
এহেন প্রতিহিংসা ও ঈর্ষাপরায়নতা নির্ভর পাল্টাপাল্টির দ্বিদলীয় সরকারের বিকল্প হতে পারে রাজনৈতিক তৃতীয় শক্তির ক্ষমতায়ন । দুঃখজনক হলেও সত্য, বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা উদ্যোগ নিয়েও ধারাবাহিক কর্মসূচীতে থাকতে পারেননি, স্বপ্ন দেখিয়ে চুপসে গেছেন অথবা হারিয়ে গেছেন বড় দল দুইটিতে । তৃতীয় শক্তির সম্ভাবনা থাকলেও বিকাশ হচ্ছে না । এর কারন ত্যাগী নেতৃত্ব ও সঠিক দিক নির্দেশনার অভাব এবং জনগনের নার্ভ বুঝতে না পারা ।
যাহোক, বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে সদ্য পাঁচটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকার সমর্থিত প্রার্থীরা ব্যাপক ভরাডুবির শিকার হন । এতে সরকারের ইমেজ সংকটে পড়ে এবং বিরোধী দল আগামী সরকার গঠনের আগাম বার্তা বহন করছে । সরকারী দল আওয়ামীলীগের এই হারকে রাজনৈতিক দলগুলো ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিভিন্ন ভাবে বিশ্লেষন করছেন । মোটাদাগে যে কারনগুলো উঠে এসেছে, তা হচ্ছে-শেয়ার বাজার, পদ্মা সেতু, হলমার্ক, ডেসটিনি, গ্রামীণ ব্যাংক, ছাত্রলীগ-যুবলীগের টেন্ডারবাজী ও হেফাজত প্রসঙ্গ । এসব দুর্নীতি দুর্নামের পাশাপাশি সরকারের সফলতাও খাটো করে দেখার মত নয় । সরকারের সফলতার স্বাক্ষর হচ্ছে শিক্ষা, কৃষি খাতের উন্নয়ন, বিশ্বমন্দার মধ্যেও স্থীতিশীল অর্থনীতি ও জিডিপির সন্তোষজনক অগ্রগতি ও রেমিট্যান্সের পরিমান বৃদ্ধি ইত্যাদি । বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগ নিশ্চিত ক্ষমতা হারাবে এবং বিরোধী দল বিএনপি ক্ষমতায় ফিরে আসবে । এটাও ঠিক, জনগন আওয়ামী লীগ থেকে প্রত্যাশিত সুশাসন না পাওয়ার আওয়ামী লীগের বিপক্ষে ভোট দিবে, এই নেগেটিভ ভোটই বিএনপিকে ক্ষমতায় আনবে ।
বর্তমান অবস্থায় আওয়ামী লীগের পুনরায় জনমত অর্জন করা অসম্ভব প্রায় । যদিও কেউ কেউ দিবা স্বপ্নে বিভোর সরকার তার সফলতা বা অর্জনগুলি সঠিকভাবে জনগনের সামনে তুলে ধরলে এবং বিএনপি আমলের হাওয়া ভবন, দশ ট্রাক অস্র, অর্থমন্ত্রী ড.কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাষ্টার, ২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের পত্নী আইভি রহমানসহ ২২ জনের মৃত্যু ও সারা দেশে জঙ্গীদের আস্ফালন উন্মাদনার কথা তুলে ধরলে জনগন আবারো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখবে । কিন্তু আমার বিবেচনায় তাতে ক্ষমতা দূরের কথা এতে ভরাডুবিই ঠেকানো যাবে না ।
এখনকার অবস্থা থেকে সরকারকে নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় ঘুরে দাঁড়াতে হলে জনগনের নার্ভ বুঝতে হবে, জনগন কি চায় তা বুঝতে হবে, জনগনের মনের ভাষা বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ী কর্মসূচী গ্রহন করতে হবে । নিশ্চয় সবার স্মরণ আছে, বিগত জাতীয় সরকার নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকার ওবামার পরিবর্তনের স্লোগানের অনুকরনে দিন বদলের কথা বলেছিল । তাছাড়া দুর্নীতি দুঃশাসন মুক্ত রাষ্ট্র ব্যবস্থা, বেকারদের কর্মসংস্থান, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও মুক্তিযুদ্ধের আকাংখায় দেশকে গড়ে তোলার কথা বলেছিল । কিন্তু সরকার তার অঙ্গীকার অনুযায়ী সফল হয়নি সত্য, আবার বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিলে উপরোক্ত ক্ষেত্র গুলিতে সফলতা আসবে, সে আস্থা বিশ্বাসও জনগন রাখেন না । জনগন আপাত দৃষ্টিতে আওয়ামীলীগকে তার অঙ্গীকার পালনের ব্যর্থতার শাস্তি স্বরুপ আওয়ামী লীগের বিপক্ষে ভোট দিবে । আর্কাইভে রক্ষিত পত্রিকার পাতা উল্টিয়ে দেখলে দেখতে পাবেন ওবামার সরকারও দ্বিতীয়বার প্রতিদ্বন্ধীতার সময়ে আশান্বীত পরিবর্তনের ব্যর্থতায় আমেরিকান জনগন ওবামার প্রতিপক্ষ ম্যাক কিনের পক্ষে ঝুঁকে পড়েছিল । ওবামার পরাজয় ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র, যা বিভিন্ন জনমত জরীপে দেখা যাচ্ছিল । আর এ সময়ের মধ্যেই ওবামা আমেরিকানদের সামনে প্রশ্ন রাখলো, আমার শাসনামলে যা আমি পারিনি, আমার প্রতিদ্বন্ধী ম্যাক কিন কি পারবেন তা সফলভাবে সম্পাদন করতে ? এতে জনগনের মধ্যে চিন্তা এবং তুলনা করার জায়গা তৈরী হল । দেখা গেল এর পরবর্তী সময়ে জনমত জরীপ পাল্টে যেতে শুরু করল এবং জনগন ওবামাকে পুনরায় নির্বাচিত করল ।
ওবামার মত করে সরলীকরন আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও সম্ভব, তা আমি মনে করিনা । তবে আওয়ামী লীগ যদি জনগনের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে, জনগন আওয়ামী লীগকে নিয়ে ভাববে নতুবা দলীয় ভোট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে । দলীয় ভোটেও আওয়ামী লীগ মোটামুটি ভালো করা সম্ভব, যদি বিএনপি থেকে জামাতকে আলাদা করা সম্ভব হয় । তবে আপাত রাজনৈতিক অবস্থানে জামাত-বিএনপির বিভাজন সম্ভব নয় । তাই আওয়ামী লীগের দরকার ব্যতিক্রমধর্মী উদাহরন সৃষ্টি করে জনগনকে জয় করা । সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের হাতে বড়জোড় ৪/৫ মাস বাকী আছে ।
এই ৪/৫ মাসের মধ্যে আওয়ামীলীগ প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে চমকে দেওয়ার মত রুদ্রুমূর্তি ধারন করে ক্ষমতাধর দু্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে । শেখ হাসিনার পরিবার ও সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামীলীগের সমর্থক সুভ্যানুধ্যায়ীরা ভোট ও ভালবাসা দিয়ে দলটিকে শাসন ক্ষমতায় এনেছে । কেন গুটিকয়েক দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীর লুটপাটের দায় দলকে বিপর্যস্ত করাবে । সর্বমহলে স্বীকৃত শেয়ার বাজার লুটপাটে সালমান এফ রহমান ও ফালু গংরা মূল নেতৃত্বে ছিল । কেন নেত্রী ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন না । দেরীতে হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিলে জাতির মনোযোগ আকর্ষন করতে সক্ষম হবেন । দল ও সরকার পরিচালনার এই চ্যালেঞ্জ টুকু নিতে সক্ষম হলে জনগনের মধ্যে চিন্তার জায়গা তৈরী হবে এবং দলটিকে পুনরায় সরকার পরিচালনার আনবে কি আনবে না, সে বিবেচনা বোধের জায়গা তৈরী হবে । তবে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার জনগনের হাতে । আওয়ামীলীগ তাদের শাসন আমলের সমস্ত ভুল-ত্রুটির দায় স্বীকার এবং নির্বাচনী ইস্তেহারের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের ব্যর্থতা স্বীকার করে জনগনের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে । বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্ষমতাশীন অবস্থায় ব্যর্থতার দায় স্বীকারের সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি, আওয়ামীলীগ তা করলে জনগন নিশ্চয় ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবেন ।
আওয়ামী লীগ কি করলে মুখ ফিরিয়ে নেয়া জনগনকে আওয়ামীলীগের প্রতি দৃষ্টি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন, তা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ভালো বলতে পারবেন । আমার বিবেচনায়, তা কষ্টসাধ্য হলেও দুঃসাধ্য নয় । আমি জনগনের একজন হয়ে মনে করি আওয়ামীলীগ নিন্মোক্ত কাজগুলি সম্পাদনে আন্তরিক হলে জনগন অবশ্যই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই দলটিকে নিয়ে পজেটিভলি ভাববে- এক) আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের দূতাওয়ালীতে ড. ইউনূসের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সমঝোতা । দুই) এরশাদের সহযোগিতায় হেফাজতের সাথে দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলা । তিন) শেয়ার বাজারের লুটপাটকারীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে দায়িত্ব দেয়া । চার) হলমার্ক ও ডেসটিনি বিষয়ক মামলা গুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করা । পাঁচ) পদ্মা সেতুতে বন্ড ছাড়া এবং বিদেশে চাকুরী ও ব্যবসারত নাগরিকদের অর্থ লোভনীয় লাভ প্রদানের মাধ্যমে ব্যবহার করা । ছয়) প্রতিটি উপজেলা ও জেলা সদরের চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজ ছাত্রলীগ/যুবলীগ নামধারীদের এ্যারেষ্ট করে বিচারের মুখোমুখি করা । এ কাজগুলি তদারকীর জন্য মহাজোটগত ভাবে তদারকি ও সমন্বয় কমিটি করা । এ কমিটিতে শেখ হাসিনা, এরশাদ সহ মহাজোটের প্রত্যেকটি দল থেকে একাধিক সদস্য রাখতে হবে এবং এই কমিটি প্রতি মাসে একবার ফলোআপ তথ্য জনগনের সামনে তুলে ধরবেন ।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের উপরমহল থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রত্যেকটি কমিটিতে নেতা-কর্মীদের মধ্যকার আভ্যন্তরীণ দ্বন্ধ সংঘাত নিরসন করে দলকে গতিশীল করা, এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ নেতা তোফায়েল আহম্মদ, আমীর হোসেন আমু, সাজেদা ও মতিয়া চৌধুরী থেকে নবীন নেতৃত্ব মোহাম্মদ হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দিয়ে তদারকী ও সমন্বয় কমিটি তৈরী ও কার্যকর করা । ইতিমধ্যে যে সব নেতার দুর্নীতি সন্ত্রাসীপনা ও অতিকথনে জনমনে বিতৃষ্ণার জন্ম হয়েছে, তাদের মিডিয়া থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিতে হবে ।
এছাড়া বিরোধী দলের প্রতি বিষোদগার না করে জনগনের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখতে হবে আওয়ামীলীগের বিপক্ষে ভোট দিলে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবেন, তারা কি- এক) যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারকে চালিয়ে নিবেন ? দুই) ----প্রধানমন্ত্রী হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয় আড্ডাবাজী ও ব্যবসা বানিজ্যের পার্সেন্টিজ আদায়ে ব্যবহার করবেন না ? ------ মামুন ও বাবর সাহেবরা প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয়কে হাওয়া ভবনে পরিণত করবেন না ? তিন) দেশের সর্বোচ্চ আসন গুলিতে কম শিক্ষিত, হেয়ালী মানুষিকতার দুর্নীতিবাজ মানুষদের অবাধ বিচরণ স্থানে পরিণত করবেন না ? চার) প্রবীণ অভিজ্ঞ সৎ মানুষ খ্যাত ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মত মানুষ ইজ্জ্বত রক্ষায় দুঃখ ও অভিমানী পদত্যাগে বাধ্য হবেন না, মাহী বি চৌধুরীর মত ট্যালেন্ট তরুনদের চাইতে মামুন বাবর ও লাল্টুরা অধীক ক্ষমতাধর হবেন না ? পাঁচ) তরুণ নেতৃত্ব অতীতের মত গাজীপুরে হেরেমখানায় বসে রাষ্ট্র ও রাজনীতি চালাবেন না ?
সাধারণতঃ আমরা নিজ দলের ব্যর্থতাকে ঢাকতে প্রতিপক্ষের ব্যর্থতার ফিরিস্তি তুলে ধরি, জনগন এতে বিরক্ত হলেও দলগুলো তা তোয়াক্কা করেন না । আওয়ামীলীগের উচিত বিরোধী দলের দুর্ণাম-দুর্নীতির চাইতে নিজেদের উন্নয়নমূলক কাজের সাথে অতীত সরকারের সময়ের সাথে তুলনামুলক অগ্রগতির চার্টওয়ারী প্রচারণা প্রিন্ট ইলেকট্রনিক ও সোস্যাল মিডিয়ার অব্যাহত প্রচারণায় নিয়ে আসা । বিরোধী দলের সত্য অভিযোগকে স্বীকারে নিয়ে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন এবং ভবিষ্যতে সুন্দর, সুশৃংখল ও ন্যায়-নীতি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দান । মোটকথা নেতা এমপি-মন্ত্রীরা বাগাড়ম্বর করবেন না, ওবায়েদুল কাদেরের মত কথার চাইতে কাজের ব্যস্ততা দৃশ্যমান করাতে হবে ।
জাতি হিসেবে আমরা আবেগ প্রবণ জাতি, তবে অবিবেচক নয় । আমার বিশ্বাস আওয়ামীলীগ উপরোক্ত কাজগুলি করলে জনগন অবশ্যই আওয়ামীলীগকে জনগনের সেবার জন্য পূনর্বার বিবেচনা করবেন ।
মোঃ মহিউদ্দিন মজুমদার মাসুম ।
প্রবাসী, জাপান ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন