সাপ্তাহিকী
|
আবুল কাসেম আমিন
|
|
পর্দা, প্রগতি এবং নারী সমাজের সম্মান ও মর্যাদার গ্যারান্টি
03 Jun, 2013
গত ১৮ মে ২০১৩ শুক্রবার জুমার নামাজ পড়েছি আমাদের মহল্লা মসজিদে। মসজিদটির পরিসর বেশ বড়। সম্প্রতি এলাকাবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহনে মসজিদটি পূনঃনির্মান করা হয়েছে। বর্তমানে বেশ দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদে এক সাথে অনেক লোক নামাজ আদায় করতে পারেন। আশেপাশের মহল্লা থেকে মুসল্লীগণ এখানে নামাজ পড়তে আসেন। এই এলাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাসের কারনে প্রায় ১০ বছর ধরে জুমার নামাজ আদায় করি এই মসজিদে। এখানকার কয়েকজন ইমামের বক্তব্য শুনেছি যারা সবাই কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষিত। এই মসজিদের ইমামদের মুখে ইসলামের পুর্নাঙ্গ রূপরেখার বক্তব্য কোন সময় শুনেছি বলে মনে পড়ছে না। ইসলামী অর্থনীতি, শিক্ষা নীতি, নারী সমাজের কল্যাণ, সংস্ড়্গৃতি চর্চা, পরিবার ব্যবস্থাপনা, ইসলামী আদর্শে সন্তান গঠনের গুরুত্ব-প্রয়োজনীয়তা, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামের প্রকৃত জ্ঞানের কথা মসজিদের ইমামদের মুখে সহজে শ্রুত হয়নি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার ২৩ বছরের জীবনে সফল ইসলামী আন্দোলন পরিচালনার মাধ্যমে মদীনায় একটি পুর্নাঙ্গ মডেল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে মুসলিম উম্মাহর নিকট দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন যে, কি ভাবে দেশ চালাতে হবে- এসব কথা ইমাম সাহেবরা বেশী বলেন না। মদীনা সনদের কথা বলেন না। ঈমানের দাবীদার একজন মুসলিম কি করে ইসলামের আলোকে নিজেকে পূর্নাঙ্গভাবে গড়ে তুলে অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারে সে ব্যাপারে কোন পরিকল্পিত বক্তব্য বা প্রচেষ্টা নজরে পড়ে না। কিছু মাসলা-মাসায়েল ও কিস্সা-কাহিনীর মধ্যেই যেন তাদের অধিকাংশ বক্তব্য সীমাবদ্ধ থাকে। অন্যান্য মসজিদেও নামাজ পড়ার সময় লক্ষ্য করেছি অধিকাংশ ইমামদের অবস্থা একই রকম। অথচ সমাজ সংশোধনের মৌলিক দায়িত্ব ইমামদের উপরই ন্যাস্ত। ইমামরা ইচ্ছা করলে সমাজ গঠনে অনেক মৌলিক ভূমিকা রাখতে পারেন।
মহল্লা মসজিদে সম্প্রতি একজন তরুন ইমাম যোগদান করেছেন। তিনি কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষিত এবং বয়সে তরুন হলেও বক্তব্যে অনেকটা সাহসী মনোভাবের মানুষ। ১৮ মে’র বক্তব্য আমার দৃষ্টি আকর্ষন করে। কিছুটা ঝাঁঝ ও প্রতিবাদ লক্ষ্য করলাম। কথা নিয়ন্ত্রিত হলেও যুক্তিতে ভরা। তিনি কেন এত শক্ত কথা বলছেন তা নিয়ে সেদিন অনেক চিন্তা করেছি। এক পর্যায়ে মনে হলো হেফাজতে ইসলামের বিপর্যয়ের কারনেই হয়তো এমন বক্তব্য। যেহেতু কওমী মাদ্রাসার প্রায় সকল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা হেফাজতে ইসলামের সাথে জড়িত। প্রত্যেক ক্রিয়ার যে একটা বিপরিত প্রতিক্রিয়া আছে ঠিক সেই রকম। একজন মুসলিম আরেকজন মুসলিমের কষ্টে এবং দুঃখে সমান ব্যথিত হবেন এটাই হাদিসের কথা। সেদিক থেকেও ইমাম সাহেবের প্রতিক্রিয়া সঠিক। অথচ মুসলমানদের মধ্যে এই চর্চার অভাব দেখা যায়। হেফাজতে ইসলামের দাবী এবং অন্যান্য কারনে বর্তমানে দেশে নারীদের অবনতি, ধ্বংস, অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা চলছে তার প্রতি ইঙ্গিত করেই ইমাম সাহেব ঐদিন বক্তব্য রাখেন। মুসল্লীদের বেশ মনোযোগ সহকারে ইমাম সাহেবের বক্তব্য শুনতে দেখেছি। সব ইমামরা এমন সচেতন হলে সমাজে অনেক পরিবর্তন আসতো। ইমামদের বক্তব্যে অতিতের আলোচনা, বর্তমান সময়ের পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতের জন্য মুসল্লীদের করনীয় সম্পর্কে নির্দেশনা থাকতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলেই সমাজ উল্টাদিকে চলবে। বিশেষ করে ইমামদের বক্তব্যে খুরধার যুক্তি থাকতে হবে।
আমাদের ইমাম সাহেব সেদিন তার বক্তব্যে নারীদের সম্মান, মর্যাদা ও গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে লোহা এবং সোনার মগুরের একটা গল্প শুনান মুসল্লীদের। তিনি বলেন, লোহা খুব শক্ত একটি উপকরন কিন্তু দামের দিক থেকে সোনার মত দামী নয় আবার সোনা বেশী দামী হলেও লোহার মত শক্ত নয়। একদিন লোহা এবং সোনার মধ্যে ঝগরার এক পর্যায়ে লোহা বলল আমি যেহেতু বেশী শক্ত তাই আমি বেশী দামী আবার সোনা বলল আমি শক্ত না হলেও যেহেতু আমার দাম বেশী তাই আমি বেশী দামী। লোহা এবং সোনার মধ্যে কার কথা সঠিক তা প্রমানের জন্য লোহা এবং সোনা দিয়ে আলাদা আলাদা মগুর বানানো হলো। লোহার মগুর দিয়ে সোনার উপর আঘাত করলে সোনা সব ভেঙ্গে গেল আবার সোনার মগুর দিয়ে লোহার উপর আঘাত করলে সোনাই সব ভেঙ্গে গেল। গল্পের দ্বারা ইমাম সাহেব বুঝালেন মহিলারা হলো সোনা। তাদেরকে সোনার জায়গাতেই থাকতে হবে। তাহলে তাদের দাম ও মর্যাদা ঠিক থাকবে। সোনার মগুর হয়ে লোহার উপর আঘাত করে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমান করা সম্্ভব হবে না বরং নিজেদেরকেই ধংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। আসলে যে যার জায়গায় দামী ও প্রয়োজনীয়। এই সাধারন জিনিসটি না বুঝলে মুসলিম সমাজ বিপদমুক্ত থাকবে না। মোমিনদের সচেতনতার বিষয়টিও জরুরী।
ইমাম সাহেব বর্তমান সময়ে নারীদেরকে অবাধ স্বাধীনতা প্রদান এবং একাধিক বিয়ের অধিকার দেওয়ার যুক্তির প্রেক্ষিতে এবং তথাকথিত কিছু নারী সংগঠন ও নারী নেত্রীদের প্রশ্নবোধক ভূমিকা বিশ্লেষন করতে গিয়ে আরেকটি উদাহরন দেন ইতিহাস থেকে। তিনি বলেন, হানাফী মায্হাবের ইমাম আবু হানিফা একবার একটা সমস্যায় পড়েন। একদিন একদল/একজন মহিলা এসে ইমাম আবু হানিফার নিকট জানতে চান- পুরুষ মানুষ যদি একাধিক বিবাহ করতে পারে তাহলে মহিলা বা নারীরা কেন একের অধিক বিবাহ করতে পারবে না? ইমাম আবু হানিফা এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে একটু চিন্তায় পড়েন। পাশে আড়ালে দাঁড়ানো ইমাম আবু হানিফার মেয়ে হানিফা ঐ প্রশ্নটি শুনে পিতার সাহায্যে এগিয়ে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করে। ইমাম আবু হানিফা তার মেয়েকে সাহায্য করার অনুমতি দিলে মেয়ে শর্তারূপ করে বলে আমি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারলে আপনার নামের সাথে আমার নাম যোগ করতে হবে। ইমাম আবু হানিফা তাতে রাজি হয়ে যান। হানিফা এসে প্রশ্ন করা মহিলাদের ৪ টিউবয়েল থেকে ৪ গ্লাস পানি আনতে বলে। তারা হানিফার কথা অনুযায়ী ৪ গ্লাস পানি আনেন। হানিফা পানির গ্লাস গুলো নিয়ে সব পানি এক পাত্রে সংমিশ্রন করে আবার ৪ গ্লাসে ভর্তি করে মহিলাদের হাতে দিয়ে জানতে চান- কোন গ্লাসে কোন টিউবয়েলের পানি আছে বলুন তো? মহিলারা হতবাক হয়ে ইমাম কন্যার যুক্তির নিকট হার মানেন। ইমাম কন্যা হানিফা বলেন- একজন নারী যদি একাধিক বিবাহ করেন তাহলে তার কোন্ সন্তান কোন্ স্বামীর তা নির্নয় করা কারো পক্ষে সম্্ভব হবে না তাই একজন নারীর একাধিক বিবাহ না করাই যুক্তিসংগত। এ ক্ষেত্রে ইসলামের বিধানই সর্বাধিক যুক্তিযুক্ত। ইমাম আবু হানিফা মেয়ের জবাব শুনে খুশি হয়ে নিজ নামের সাথে মেয়ের নাম যোগ করে হানিফার পিতা বা ইমাম আবু হানিফা নামেই পরিচিতি লাভ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। মুসলমানদের কল্যাণে ইমাম আবু হানিফার ভূমিকা ও অবস্থান ইতিহাসে খুবই উজ্জল। মুসলিম সমাজের জন্য তিনি অনেক কিছু করেছেন। শাসকদের দ্বারা বর্বর নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন।
আরো অনেক কথাই সেদিন ইমাম সাহেব বলেছিলেন। বিশেষ করে নারীরা কিভাবে সমাজে সঠিক সম্মান- মর্যাদা পাবেন কেমন করে সমাজে শান্তি ফিরে আসতে পারে। কি করলে নারীরা উন্নত সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বসবাস করতে পারবে। সব ইমাম সাহেবরা যদি এভাবে সমসাময়িক বিষয় আলোচনা করে সমাজের মানুষের কর্তব্য সম্পর্কে কোরআন, হাদিস, ইতিহাস এবং বাস্তবতার আলোকে নির্দেশনা প্রদান করতেন তাহলে সামাজিক সচেতনতা অনেক বৃদ্ধি পেত। প্রকৃত পক্ষে ইমামদের দায়িত্বও তো সমাজকে পূর্নাঙ্গভাবে সংশোধনে নেতৃত্ব প্রদান করা। সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা লাভ করে নিজের প্রভাব বৃদ্ধি এবং সমাজ পরিচালনা ও গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রত্যেক ইমামের কর্তব্য। কিন্তু বর্তমানে আমাদের ইমামরা কি তা করতে পারছেন? ইসলামী জ্ঞান তো এটাই বলে যে- সমাজের তথাকথিত নেতাদের দ্বারা ইমামরা চলবে না বরঞ্চ ইমামদের নেতৃত্ব সমাজের সব মানুষ মেনে চলবে। এটাই নবী (সাঃ) এর নেতৃত্বে গঠিত সমাজ এবং পরবর্তী সময়ে মুসলিম সমাজের বাস্তব চিত্র। আজকের আলোকপাত নারী সমাজকে নিয়ে। মুসলমান নারীদের পর্দাহীনতা ও বর্তমান অবস্থা, নারীদের ডুবন্ত পরিস্থিতি, প্রগতিশীলতার নামে নারীদের অধপতন, আধুনিক শিক্ষিত তরুনী/নারী সমাজের বেহায়াপনা এবং নারীদের হারিয়ে যাওয়া সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে এখনই না ভাবতে পারলে সামনে খুব বিপদ অপেক্ষা করছে।
পর্দা কি আসলেই জাতীয় এবং রাষ্ট্রীয় প্রগতির অন্তরায়? যুক্তি এবং আস্থার সাথে বলা যায় পর্দার উদ্দেশ্য, প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা যদি একজন মহিলার নিরাপত্তার গ্যারান্টি হয় তাহলে পর্দা প্রগতির অন্তরায় হবে কেন? কুরআনের নির্দেশ পালনার্থে ইসলামী সমাজে পর্দা পালনে সূচনা হয়। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-মহিলারা যেন তাদের মর্যাদা সহকারে আপন ঘরেই বসবাস করে এবং জাহেলী যুগের মেয়েদের মতো বাইরে নিজেদের রূপ-সৌন্দর্যের প্রদর্শনী করে না বেড়ায়। তাদের যদি ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে আগেই যেন চাদর (কাপড়) দ্বারা তারা নিজেদের দেহকে আবৃত করে নেয় এবং ঝংকারদায়ক অলংকারাদি পরিধান করে ঘরের বাইরে না যায়।
ঘরের ভিতরেও যেন তারা মোহাররম্ (যাদের সঙ্গে বিয়ে নিশিদ্ধ) পুরুষ ও গায়ের মোহাররম্ পুরুষের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে এবং ঘরের চাকর ও মেয়েদের ব্যতিত অন্য কারো সামনে যেন জাঁকজমকপূর্ন পোশাক পরে না বের হয়। আল্লাহ পাকের এই নির্দেশ জারী হওয়ার পর একজন মুসলিম মহিলার কোন দিক থেকেই আপত্তি তোলা উচিৎ নয় পর্দা পালনের ক্ষেত্রে। নবী করিম (সাঃ) মেয়েদের সুগন্ধি লাগিয়ে বাইরে যেতে নিশেধ করেছেন। আল্লাহ এবং রাসুল (সাঃ) এর নির্দেশের পর কোন মুসলিম মহিলা যদি পর্দা পালনে ইচ্ছুক না হন তাহলে তো তিনি মুসলিম পরিচয় বহন না করলেই পারেন। যৌক্তিক বিচারে একটি সুখি-সুন্দর সমাজ ব্যবস্থার জন্য নারী ও পূরুষের নৈতিক চরিত্রের হেফাজত করা অত্যন্ত জরুরী। নর-নারীর অবাধ মেলামেশার ফলে সমাজে যে সব ত্রুটি-বিচুøতির উদ্ভব হওয়ার আশংকা থাকে তা প্রতিরোধ করার জন্য নারী-পূরুষের কর্ম ক্ষেত্রকে পৃথক করতে হবে- যাতে নারী তার উপর যে গুরু দায়িত্ব অর্পন করা আছে তা নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে। পারিবারিক ব্যবস্থাকে আরো সুরক্ষিত ও সুদৃঢ় করতে হবে কারন গোটা জীবন ও সমাজের মুল বুনিয়াদ হচ্ছে এই পরিবার। মেয়েদের পুরুষের দাসি না বানিয়ে যদি তাদেরকে যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করে এবং পর্দার বাধঁন থেকে মুক্ত করে না দিয়ে একটি সুরক্ষিত ব্যবস্থাপনার মধ্যে রাখা যায় তাহলে এই সমাজ সুখে-শান্তিতে ভরে উঠবে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। নারীরা সম্মান পেলে দায়িত্ব পালনে আরো আন্তরিক হবে।
যারা মনে করেন পর্দা প্রথা এবং পর্দার ব্যবস্থা ছাড়াই মেয়েদের ব্যপারে পুরুষদের মনে সম্্ভ্রম ও শ্রোদ্ধাবোধ জাগ্রত হবে তারা গভীর ভুল-ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত। সমাজে পর্দা প্রথাকে বিসর্জন দিয়ে নারীদের সম্পূর্ন মুক্ত করে দিলে পুরুষদের মনে নারীদের প্রতি সম্মান ও শ্রোদ্ধাবোধ সৃষ্টি হওয়া তো দুরের কথা বরং নারীর মহান মর্যাদাকেই নগ্নতা এবং উলংগপনার চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে দেয়া হবে। এসব কারনে রোগাক্রান্ত পুরুষদের যৌন কামনা নিবৃত্ত হবে না বরং তা প্রকাশ্যে ব্যভিচারকেই উৎসাহ দিবে। এর অনিবার্য প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সমাজের বিভিন্ন স্তরে কঠিন ভাঙ্গন ও বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে। প্রগতিশীলতার ধারক দেশ বৃটেন, আমেরিকা এবং ভারতের দিকে তাকালে এর নিরেট বাস্তবতা পাওয়া যায়। পর্দাহীনতার পরিনতি পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও মর্যাদা এবং সম্মানের হয়নি। মুনলমানদের জন্য পর্দা প্রথা প্রগতির পথে কোন সময়ই বাধা হয়ে দাড়ায়নি কারন ইসলাম হচ্ছে সব চাইতে প্রগতির ধর্ম। তবে কোন মুসলিম মহিলা যদি ইসলাম ধর্মবিহীন প্রগতিশীলতার কথা বলেন তাহলে ব্যপারটা সম্পূর্ন আলাদা। একজন নারী কিংবা পুরুষ নিজেকে ধ্বংস করার পদক্ষেপ নিতেই পারেন কিন্তু তিনি অবশ্যই সমাজ ও দেশকে ধ্বংস করার অধিকার রাখে না। উন্নত দেশ গুলোর প্রগতিশীলরা পারিবারিক বন্ধন ছেড়ে হোটেল, রেস্তরাঁ এবং ক্লাব জীবনেই বেশি অভস্ত হয়ে পড়ছে। সে সব দেশে বহু মানব সন্তান ক্লাব-রেঁস্তরাতেই জন্ম নিয়ে আবার সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করছে। মাতা-পিতা-সন্তানের মধ্যে পরস্পর কোন স্নেহ-মায়া-মমতা উপভোগ করার সুযোগ তারা পাচ্ছে না। ইসলাম এরূপ অভিসপ্ত জীবনকে আদৌ সমর্থন করে না।
ইতিহাস সাক্ষী- আবহমান কাল থেকে বাংলাদেশের নারীরা পর্দানশীল। সব সময় তারা শালিনতার মধ্যে থাকতে পছন্দ করে এবং স্বামীর প্রতি আনুগত্য প্রিয়। স্বামী-সংসারের প্রতি খুব আন্তরিক, দরদী ও দায়িত্ববান। এদেশের নারীরা প্রতিদিন সকালে ফজরের নামাজ শেষে পবিত্র কোরআন পড়ে ঘর-সংসারের কাজ শুরু করে। বাংলার মায়েরা তাদের প্রানের চেয়ে প্রিয় সন্তানদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রান-পণ চেষ্টা চালায়। নিয়ন্ত্রনহীন জীবন যাপনে বাংলাদেশের নারীরা মোটেও অভ্যস্ত নয়। কোন নতুন এলাকায় পর পুরুষ গেলে সেখানকার গৃহবধুরা ঘুমটা দিয়ে নিরাপদ আড়ালে সড়ে যায়। এর মাধ্যমে তারা নিজেরা যেমন নিরাপদ থাকে অন্যদিকে পূরুষ মানুষকে সম্মান জানায়। গৃহবধুরা স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরে যায় না। স্বামী, সংসার এবং ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তারা সুখে শান্তিতে আজীবন বসবাস করতে চায়। সীমাবদ্ধ আয়ের মধ্যে এদেশের অধিকাংশ পরিবার বাস করলেও প্রতিটি ঘরে যেন জান্নাতী পরিবেশ বিদ্যমান। পরিবারের সকল সদস্যের ঈর্ষনীয় আন্তরিকতা যেন সবাইকে অবাক করে দেয়। গ্রাম এলাকার সব মুসলমান ইসলামের প্রতিটি আহকাম আন্তরিকতার সাথে পালন করে। এটাই বাংলাদেশের অত্যন্ত পরিচিত চিত্র বা দৃশ্য। বাংলাদেশের এই সামাজিক-পারিবারিক ব্যবস্থাপনা ও সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দিতে চায় ইসলাম ও মুসলিম বিরোধীদের কিছু এজেন্ট।
ধর্মহীন বাঙ্গালী সংস্ড়্গৃতি চর্চার নামে কৌশলে অপসংস্ড়্গৃতি চাপিয়ে দিয়ে তারা আমাদের শত শত বছরের পুরাতন ইসলামী আদর্শ ভিত্তিক মুসলিম সংস্ড়্গৃতিকে স্ব-মুলে উৎখাত করতে চায়। মুসলিম সংস্ড়্গৃতিকে পৌত্তলিকতার আবরনে ঢেকে ফেলতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। নজরুল চর্চার মাধ্যমে এদেশে সাচ্চা দেশপ্রেম ও ইসলামী চেতনার বিস্তারের চাইতে তারা মুসলিম সংস্ড়্গৃতির সাথে সম্পর্কহীন বাঙ্গালী সংস্ড়্গৃতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রবীন্দ্র অনুশীলনে বেশি মনোযোগি। বাংলাদেশের তৃনমুল পর্যায়ে তাল গাছের শিকরের মত মজবুত ভিত্তি সম্পন্ন মুসলমানদের পর্দা প্রথাকে কৌশলে আস্তে আস্তে উৎখাত করতে তারা বদ্ধপরিকর। তাদের কাজে-কর্মে-পরিকল্পনায় অন্তত তাই মনে হয়। বাংলাদেশে এখন বেশ জোরদারভাবে নারী প্রগতির কথা হচ্ছে। এই নারী প্রগতির নামে পথে-ঘাটে, মাঠে-প্রান্তরে, বিপনী বিতানে তথা গোটা সমাজে তথাকথিত নারীদের নিয়ন্ত্রনহীন চলাফেরা ও বেহায়াপনার কারনে সমাজ মারাত্বকভাবে কলুষিত হচ্ছে। কিন্তু গলা ফাটিয়ে বলা হচ্ছে হেফাজতে ইসলাম এবং জামায়াতে ইসলামীসহ সকল ইসলামী দল ধর্মের নামে মহিলাদের ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে চায়। মহিলাদের হাতে ধর্মের হাতকরা পরিয়ে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার সব পথ বন্ধ করে দিতে চায় মৌলবাদিরা। দেশ ও সমাজের উন্নয়নে মহিলাদের কোন অংশগ্রহনের সুযোগ নাকি তারা রাখতে চায় না। এইসব মৌলবাদিরা দেশ ও সমাজের জন্য খুব ক্ষতিকর। যে কোন মুল্যে এইসব ষড়যন্ত্র রুখতে হবে এবং প্রগতিশীলতার পথকে খোলা রাখতে মৌলবাদিদের অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। মৌলবাদিদের উৎখাত করতে না পারলে প্রগতির বাস্তবায়ন কোন মতেই সম্্ভব নয়। তাই মৌলবাদিদের প্রতিরোধ করতে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।
কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তব চিত্র আসলে কি? কিছুদিন আগে চট্রগ্রাম নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজের ছাত্রীদের পর্দা করতে বা হিজাব পড়তে এবং কলেজে ছাত্রীদের জন্য নির্ধারিত নামাজ ঘর তালাবদ্ধ করে নামাজ পড়তে বাধা প্রদান করে। মুসলিম ছাত্রীরা তাদের অধিকার আদায়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তারা তাদের পর্দা করার অধিকার পেতে এবং নামাজ ঘর খুলে দেয়ার দাবীতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন ও সংগ্রাম করে। ছাত্রীদের বিশাল মানববন্ধনের ছবি পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখেছে। এর দ্বারা আবার প্রমান পাওয়া গেল শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে আন্দোলন করে মুসলিম মহিলাদের পর্দা করার দাবী আদায় করতে হচ্ছে। গত ২২ মে ২০১৩ ঢাকার উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মুসলমানদের জন্য আরেকটি অপমানকর ঘটনা ঘটে। ড্রেস কোড শৃঙ্খলা ভঙ্গের অজুহাতে প্রায় শতাধিক ছাত্রীর জামার ফুলহাতার অর্ধেক অংশ কাঁচি দিয়ে কেটে দেন প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রিন্সিপাল এবং বর্তমান মহাজোট সরকারের একজন মন্ত্রীর স্ত্রী। একজন অভিভাবক সাংবাদিকদের জানান, একটি মুসলিম দেশে মেয়েরা ফুলহাতার পোষাক পড়তেই পারে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যদি এটি স্ড়্গুল কর্তৃপক্ষের পছন্দ না হয় তাহলে তারা তো জিন্সের প্যান্ট এবং গেঞ্জি পড়ার নিয়ম করতে পারে। তারা সেটা না করে পর্দানশীল মুসলিম ছাত্রীদের উপর জুলুম করছে কেন? তিনি মন্ত্রীর স্ত্রী বলে যা ইচ্ছা তাই করবেন তা হতে পারে না। একজন মহিলা অভিভাবক সাংবাদিকদের বলেন, ইভটিজিং প্রতিহত করার জন্য এতো প্রচেষ্টা চালানো হয়- আবার ফুলহাতা ড্রেস পরে এলেও তা কেটে দেয়া হবে, তাহলে ইভটিজিং কমবে কিভাবে?
ইদানিং দেশের অনেক খ্যতিমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, জেলা শহর এবং গ্রাম-গঞ্জের স্ড়্গুলে কিছু হিন্দু শিক্ষক আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে এবং মুসলমানদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ব্যাপারে নানা উপহাস-কটুক্তি করছে বিনা বাধায়। মুসলমানদের অন্তরে এবং ধর্মীয় অনুভতিতে তারা একটার পর একটা আঘাত করলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে না। কোন কোন এলাকায় মুসলমান ছাত্রদের তীব্র আন্দোলনের জন্য লোক দেখানো কিছু করা হলেও পুরো ব্যাপারটা আসলেই রহস্যজনক থেকে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা যেন অপ্রতিরোধ্য। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থার কেন্দ্রীয় অফিস থেকে সংস্থার কেন্দ্রীয় নেত্রী পর্যায়ের প্রায় ২৫ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় পর্দানশীল অত্যন্ত ভদ্র ঘরের এসব মেয়েদের সাথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুব খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি এতগুলো মেয়েকে গ্রেফতার করার সময় কোন মহিলা পুলিশ রাখা হয়নি সেদিন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন অন্তস্বত্বা মেয়েকে কয়েকবার ৫তলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করানো হয় বলে পত্রিকায় অভিযোগ ওঠে। এর কিছুদিন পর নারায়নগঞ্জে ১৫/২০ জন পর্দানশীল ছাত্রীকে বৈঠক করার অজুহাত গ্রেফতার করা হয়। তাদের সাথেও পুলিশ ভাল আচরন করেনি। তাহলে এসবের টার্গেট কি? বেছে বেছে মুসলমান দাঁড়ি-টুপিধারী এবং পর্দানশীল মহিলাদের উপর তারা এত খরগ হস্ত কেন। একদিকে ইসলামের অনুসারীদের চলতে ফিরতে সব কাজে বাধা প্রদান করা হচ্ছে অন্যদিকে তথাকথিত প্রগতিশীল মহিলাদের সব ধরনের সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। শাহবাগ গণজাগরন মঞ্চে যে ভাবে অবাধ নাচানাচি হলো, প্রায় ৩ মাস ধরে যুবক-যুবতীরা একসাথে দিনরাত সেখানে থাকল। বাধাহীন অবস্থায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে মুসলিম সংস্ড়্গৃতি বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালিত হলো শাহবাগ গণজাগরন মঞ্চে। সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে বলা হলো শাহবাগ গণজাগরন মঞ্চের আন্দোলন হচ্ছে ২য় মুক্তিযুদ্ধ। ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগার রাজিবকে বলা হলো ২য় মুক্তিযুদ্ধের ১ম শহীদ। তরুন-তরুনীরা আজ জেগেছে। শাহবাগ গণজাগরন মঞ্চ স্থলে মহিলার অবাধে উঠাবসা করেছে এবং নারী-পুরুষ একসাথে রাত্রি যাপন করেছে। এসব কিসের আলামত? এ সবই কি নারী স্বাধীনতা? এ সবই কি প্রগতিশীলতার নমুনা? ঈমান-আকিদা এবং তাহজিব-তামাদ্দুন রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ইজ্জত এবং মহিলাদের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষে সরকারের নিকট দাবী আদায়ের জন্য ঢাকা শহরে একদিন অবস্থান করার সুযোগ যেখানে পায় না সেখানে শাহবাগ গণজাগরন মঞ্চ ৩ মাস ধরে তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা-থাকার-খাওয়ার জায়গা পায় কোন যুক্তিতে? সব কিছুতেই যেন এক ধরনের বৈষম্য লক্ষনীয়।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। মুসলমানদের ধর্ম ইসলাম। ইসলাম পৃথিবীর সেরা ধর্ম। এটা কোন অযৌক্তিক কথা নয়। ইসলাম শুধু ধর্ম নয় এটি একটি পুর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। শতাব্দীর পর শতাব্দী পৃথিবীতে নারীরা যখন নির্যাতিত-নিপিড়িত হয়েছেন তখন ইসলামই তাদের প্রকৃত মর্যাদা ফিরে দিয়েছে। অন্ধকার যুগে কন্যা সন্তানদের জীবিত কবর দেয়া হতো। অন্যান্য ধর্মেও নারীদের অধিকার এবং মর্যাদা ছিল না। ইসলামই নারীদের সম্মান, মর্যাদা এবং অধিকার ফিরে দিয়েছে। ভারতীয় উপ মহাদেশ মুসলমানরা ৬শ বছর শাসন করেছে। এ সময় নারীরা ছিল সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদার আসনে। এই উপ মহাদেশে মুসলিম শাসন চলাকালে হিন্দু নারীরাও যতেষ্ট নিরাপদে ছিল। বাংলাদেশেও মুসলিম শাসন ছিল দির্ঘকাল। এখানকার মুসলিম শাসকরা যেমন মুসলিম নারীদের নিরাপত্তা দিয়েছে তেমনি হিন্দুসহ অন্যান্য জাতির নারীদের নিরাপত্তা দিয়েছে। মুসলমানদের এইসব গৌরব নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়। পরিকল্পিত এসব কর্মকান্ডের কঠোর জবাব দিতে সকল মুসলমানদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
তথাকথিত প্রতিবাদী এবং প্রগতিশীল নারীদের আরো জানা উচিৎ বাংলাদেশে বর্তমানে কতজন মহিলা এইডস্ রোগী আছে। প্রতিবেশী দেশসহ উন্নত দেশ গুলোতে এইডস্ রোগী এত বেশী কেন। মুসলিম বিশ্বে মরণব্যাধি এইডস্ মহামারী নেই কেন। ভারতে যেখানে বছরে প্রায় অর্ধকোটি গর্ভপাত ঘটানো হয় মেয়ে শিশুর জন্ম প্রতিরোধে- সেখানে বাংলাদেশে এর পরিমান নেই বললেই চলে। এসবের কারন কি? পরিচয়হীন সন্তান নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই বাংলাদেশের তথাকথিত নারীবাদিদের। অবাধ চলাফেরা করার অধিকার তারা কেন নিশ্চিত করতে চায় তা ঈমানের দাবীদার মুসলমানদের ভালভাবে বুঝতে হবে। তারা আসলে নিজেদের ধ্বংস করে কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায় তা উপলব্ধি করা জরুরী। নারীবাদী সংগঠনের নেত্রীরা নানা পরিকল্পনা এবং আয়োজনের মাধ্যমে নারীদের চরিত্র ধ্বংস করে তারা সমাজকে আসলে কোন দিকে নিয়ে যেতে চায়? একজন নারী শালিনতার পোষাক পড়ে দেশের এবং সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করলে তাদের সমস্যা আসলে কোথায়? পর্দার প্রতি তাদের বিরক্তির কোন ভিত্তি আছে কি?
বাংলাদেশে এখন নারীর সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি। এদের মধ্যে অধিকাংশই মুসলিম নারী। যদি সঠিকভাবে সকল নারীদের দায়িত্ববোধ শিক্ষা দেয়া যায় বিশেষ করে পরিবার এবং সু-সন্তান গড়ার বিষয়টি তাহলে তো সমাজের চেহারাই পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার কথা। প্রতিটি পরিবার থেকে যদি সৎ, দক্ষ, চরিত্রবান এবং দেশপ্রেমিক ছেলে-মেয়ে গড়ে ওঠে তাহলে সমাজটা কত সুন্দর হতে পারে তা তথাকথিত নারীবাদিরা একবার ভেবে দেখেছেন কি? আসলে গুটিকয়েক ধান্ধাবাজ অন্যের দালালী এবং এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত নারী সংগঠন মুসলিম সমাজের একটার পর একটা ক্ষতি করে যাবে তা কি বিনা চ্যালেঞ্জে মেনে নেয়া উচিৎ? বর্তমানে কৌশলী ভূমিকা নিয়ে তারা যেমন মুসলিম ও ইসলামী সংস্ড়্গৃতির ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করছে তেমনি ইসলামের সু-মহান আদর্শ এবং সৌন্দর্যকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের নিকট তুলে ধরা সকল মুসলমানের জন্য খুব বেশী গুরুত্বপূর্ণ মনে করা উচিৎ। সকল ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে আদর্শিক ঐক্যের ভিত্তিতে গভীর মনোযোগ ও দায়িত্ব সহকারে কাজ করা বাস্তবতার যৌক্তিক দাবী। ইসলাম নারীদের যে ভাবে সম্মান ও মর্যাদার আসনে রাখতে চেয়েছে নারীদের সেখানে রাখা জরুরী নাকি প্রগতিশীল নারী আন্দোলনের নেত্রীদের দাবী অনুযায়ী অবাধ চলাফেরা করার সুযোগ দিয়ে সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া উচিৎ তা কিন্তু ঠিক করতে হবে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদেরই। অবশ্যই মনে রাখতে হবে এ দায়িত্ব কিন্তু নামধারী মুসলমানদের নয়। যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে ইতিহাস যেমন ক্ষমা করবে না তেমনি মহান আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতা তো করতেই হবে। তাই সঠিক জ্ঞান অর্জন, নৈতিক পূনর্গঠন এবং আদর্শ চরিত্র নিয়ে সমাজ পরিবর্তনে এগিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ এবং নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শের প্রতি গভীর আস্থাশীল একদল মানুষ গড়ে তুলতে হবে। নারীদের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি এবং গ্যারান্টির জন্য পূর্নাঙ্গ ইসলামী সমাজের কোন বিকল্প নেই।
লেখকঃ সাংবাদিক ও সংগঠক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন