তখনো ঠিক করে প্যান্টও পরতাম না,
কখনো হাফপ্যান্ট পড়ে খালি গায়ে
সকালের নাস্তা খেয়েই চলে যেতাম মিছিলে।
কেন সেদিন মিছিলে গিয়েছিলাম, ঠিক মনে নেই।
মনে থাকার কথাও নয়, বয়স তখন ছয় কি সাত!
তখন মানুষের মাঝে আশঙ্কা, চারদিকে কেবল হতাশা;
সবাই মুক্তি পাগল।
মুক্তির আশায় স্বৈরশাসকের অপসারণের মিছিল,
সেই মিছিলে আমি।
তাই আজো মিছিল শুনলে নিজেকে থামাতে পারিনা,
ছুটে যাই মিছিলে মুক্তির আশায়।
নিজেকে এখন প্রায়ই প্রশ্ন করি মুক্তি কি পেয়েছি?
নূর হোসেন, ডা. মিলন মুক্তির আশায় যোগ দিয়েছিলো লাশের মিছিলে।
দূর হয়েছে স্বৈরাচার।
কিন্তু মুক্তি মেলেনি আমার।
কি অপরাধ আমার?
কেন আমি মুক্তি পেলাম না আজও?
কেন সেদিন আমার বোন ইয়াসমিনকে থানায় মরতে হলো?
সে অভিমান করে লাশের মিছিলে যোগ দিয়েছে,
তার অভিমান কি রাষ্ট্র বুঝেছে?
মুনাফা লোভীদের চক্রান্তে লাশের মিছিল বাড়ছে পাহাড় ধসে।
মন্ত্রী, আমলার ইচ্ছায় বাড়ছে লাশের মিছিল,
একটি নয়, দু’টি নয়, শত শত মানুষ এখন লাশের মিছিলে
কেউ বা লঞ্চে, কেউ বা বাসে-ট্রাকে, কেউ বা ট্রেনে।
র্যাঙ্কস ভবন, নিমতলী, পিলখানা বা তাজরীনে কতোজন যোগ দিয়েছে এই মিছিলে?
কেউ খবর রাখেনি।
কতো বড় হলে লাশের মিছিল থামবে?
কেউ জানে না বলেই কি সাভারে যোগ দিয়েছে হাজার হাজার?
মিছিল আমাকে টানছে, যেতে হবে মিছিলে;
তাই বিচার চাই না কারো। শাস্তি চাই না ।
চাই ফাঁসি, আমার ফাঁসি।
যোগ দিতে চাই লাশের মিছিলে।
মেটাতে চাই রক্ত পিপাসা সবার।
আমাকে ফাঁসি দাও, ফাঁসি দাও
আমি লাশের মিছিলে যেতে চাই।
প্রভাষক, নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
[email protected]
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন