সাপ্তাহিকী
|
মোঃ মহিউদ্দিন মজুমদার মাসুম
|
|
রাষ্ট্রের প্রশব যন্ত্রণা ও আন্দোলনের পরিণতি
30 Mar, 2013
রাষ্ট্রের গর্ভে প্রতি পাঁচ বৎসরে একটি নতুন সরকার আসে । গর্ভজাত সরকারটি পাঁচ বৎসরের মেয়াদান্তে জন্ম নিয়ে পরবর্তী পাঁচ বৎসরের জন্য সরকার পরিচালনায় দায়িত্ব প্রাপ্ত হন । গর্ভস্থ নতুন সরকারটির প্রশব অর্থাৎ জন্মদান প্রক্রিয়া নিয়ে উত্তেজনা উৎকন্ঠা যন্ত্রণা দেশে রাজনীতির অনিবার্য্য নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে । বিরোধী দল নিরপেক্ষ স্বচ্ছ ও নিরাপদ পদ্ধতিতে নতুন সরকার প্রশবের দাবীতে রাষ্ট্রে উত্তালতা সৃষ্টি করেন । আর সৃষ্ট উত্তাল পরিবেশ ও দাবীর চাপে সরকার পাঁচ বৎসরের মেয়াদান্তে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট । আর এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারই দাইমার ভূমিকা নিয়ে রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সফল সঞ্চালনের মাধ্যমে নতুন সরকারের জন্ম দেন । রাজনীতির এই চেহারাটা জনগণ দেখে অভ্যস্থ । তাই রাজনীতি সংশ্লিষ্ট মানুষ ও সাধারন মানুষের মধ্যে পরিবেশটা নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠা তেমনটা দেখা যায় না । অর্থাৎ দেশের জনগণ এটা স্বাভাবিক বলেই মেনে নেন ।
কিন্তু গতানুগতিক রাজনীতির সাথে এবারের হিসাবটা ঠিক মিলছে না । কারন রাজনীতির মৌলিক কিছু পরিবর্তনের প্রত্যাশা জাগিয়েই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন । আওয়ামী লীগ তার দলীয় নির্বাচনী ম্যানুপেষ্টুতে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছিলেন । আর জনগণও আওয়ামী লীগকে নিরংকুশ সংখ্যা গরিষ্টতায় সরকার গঠনে সক্ষমতা দান করেন ।
সরকার জনগণকে দেয়া নির্বাচনী অঙ্গিকার পূরণে সফলতা ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে মেয়াদকাল পূর্তির দ্বার প্রান্তে । বাংলাদেশে ৯১ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কোন সরকারই পর পর দুইবার ক্ষমতায় আসতে পারেনি । তাই রাজনীতি ও ভোটের স্বাভাবিক হিসেব নিকেশে প্রধান বিরোধী দল ও তাদের নির্বাচনী জোটের ক্ষমতায়ন সময়ের ব্যাপার মাত্র । তাহলে বিরোধী দল আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে শুধু শুধুই কি জান মালের ক্ষতি সাধন করছেন, নাকি এমন কোন বাস্তবতা তৈরী হয়েছে, যার কারনে বিএনপি দলীয় জোট ধারনা করছে সরকার যেনতেন প্রকারে নির্বাচনের ফলাফলকে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে যাবেন ।
সরকার তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বাহিরে যে কাজটি করেছে তা হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটি সাংবিধানিক ভাবে বাতিল করা । বিরোধী দল, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্নোত্তরে সরকার উচ্চ আদালতের রায়ের কথা বললেও রাজনৈতিক দল ও জনমনে প্রশ্ন ও সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে, সরকার নির্বাচনকে প্রভাবিত করার দূরভিসন্ধি থেকে উচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার আগেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটি বাতিল করেন । সরকার তার পাঁচ বৎসরের মেয়াদকালে উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভূমিকার কথা বললেও সরকার জাতীয় নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকবেন, এমনটা প্রধান বিরোধী দল সহ অপরাপর রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ বিশ্বাস করেন না ।
সরকার তার মেয়াদ পূর্তির কাছাকাছি কিন্তু বিরোধী দল এখনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী বাস্তবায়ন করতে পারেননি । তাই বিরোধী দল অনেকটা মরিয়া হয়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীর আন্দোলনকে সরকার পতনের এক দফার দাবীতে পরিণত করেছেন ।
সরকার তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মাফিক যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচার করছেন । এই পর্যায়ে বিচারাধীনদের মধ্যে বিরোধী দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শক্তি জামাতে ইসলামের প্রথম সারির প্রায় সব নের্তৃত্ব ও বিএনপির দুই জন নেতা বিচারাধীন অবস্থায় আছেন । এখন যুদ্ধাপরাধের সংগঠন হিসেবে জামাতে ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধকরনের দাবীও ওঠেছে । যুদ্ধাপরাধের সাথে যুক্ত রাজনৈতিক দলকেও বিচারের আওতায় আনার জন্য বিচারিক ট্রাইব্যুনাল আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধণী আনা হয়েছে।
যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচার সরকার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে করছেন । অনেকে মনে করেন সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার থেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ধীরে চলো নীতি অনুসরন করেছেন । এই জন্য বিএনপি থেকে সরকারকে অভিযুক্ত করে বলা হচ্ছে সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচারকে অহেতুক কালক্ষেপন করার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন ও সরকারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত পদ্মা সেতু, হলমার্ক দূর্ণীতি ও শেয়ার বাজার কেলেংকারীর চাপ প্রশমনের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন ।
সরকারের আন্দোলন দমনের রাজনৈতিক ঢাল যু্দ্ধাপরাধের বিচারকে নিয়ে বিএনপি একমুহূর্তও কালক্ষেপণে নারাজ । তাই বিএনপি যু্দ্ধাপরাধের বিচারকে সরকারের অসৎ রাজনৈতিক খেলা হিসাবে অভিহিত করে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের ঘোষনা দিয়েছেন এবং বিএনপি সরকারে আসলে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভাবে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গিকার জ্ঞাপন করেছেন । যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিএনপি কর্তৃক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গিকার রাজনৈতিক শঠতা বৈ কিছুই নয় । বিষয়টা হাস্যকর ও কৌতুক সদৃশ বটে, কারন যুদ্ধাপরাধীদের দলকে নির্বাচনী জোটে রেখে নির্বাচিত হওয়ার পর যু্দ্ধাপরাধের বিচারে শাস্তি নয় বরং পূনরায় মন্ত্রীত্ব দিয়ে পুরস্কৃত করার সম্ভাবনাই বেশী ।
দেশের এই রাজনৈতিক সংকটে দেশ জাতি উদ্বিগ্ন । সংকট গুলো হচ্ছে- যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার ও জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী । এছাড়া দুটি প্রেসার গ্রুপের আন্দোলন বা জনমতের চাপ, একটি হচ্ছে গণজাগরণ মঞ্চ এবং অন্যটি হচ্ছে সরকারের পক্ষ বিপক্ষের ওলামা মাশায়েকদের আন্দোলন ।
আওয়ামী লীগের মহাজোট সরকার সংঘাত, সংঘর্ষ ও রক্তপাত পরিহারে বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী মেনে নিবেন, এমনটি রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের কেউ মনে করেন না, তবে বিএনপি জামাতে ইসলামকে পরিহার করলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে আলোচনার সম্ভাবনা আছে বলে অনেকে মনে করেন । অন্যদিকে, মাঠের দাবী পূরণ না হলে ১৮ দলীয় জোট নির্বাচনে আসবেন এবং স্বাভাবিক ভাবে পরবর্তী সরকারকেও মেনে নিবেন, এমনটিও ভাবা যায় না । তাহলে শেষ পর্যন্ত কি হতে পারে । এ বিষয়ে দেশের শান্তি প্রিয় জনগণ দল দুটির মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনা না দেখে আতংকিত উদ্বিগ্ন দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে ।
আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় আওয়ামী লীগের দৃষ্টিভঙ্গি বা ভূমিকা বিএনপির চাইতে বেশী গুরুত্ব বহন করে । বর্তমান সময়ের জটিল রাজনৈতিক সমীকরনটি এক কথায় প্রকাশ বা ব্যাখ্যা সম্ভব নয় । আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে এগুচ্ছে তাতে বুঝা যাচ্ছে সরকার সহজেই ছাড় দিয়ে রাজপথের আন্দোলনকে আলোচনার টেবিলে সমাধান করবেন বলে মনে হচ্ছে না ।
সরকার দলীয় মহাজোটের প্রধান শরীক জাতীয় পার্টির এরশাদ জীবনের শেষ সময়ে ক্ষমতার পাশে থাকার রাজনীতিই করবেন, বিষয়টা কমবেশী সবাই মনে করেন, তাই এই মুহূর্তে জাতীয় পার্টির ভবিষ্যত অবস্থান নির্ণয় করাটা সমীচীন মনে করছি না । প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ১৮ দলীয় জোটের প্রধান শরীক জামাতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় ও রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের চাপ মোকাবেলায় জোটের ভিতরে অবস্থান করেই রাজনীতি করতে চাচ্ছে । বিএনপিও জামাতকে ছেড়ে দিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনের শক্তি ও ভোটের রাজনীতির শক্তি কমাতে চাচ্ছে না । ভবিষ্যতেও জামাতকে পাশে রাখবে বা রাখতে পারবে কিনা তা আদালতের রায় বা পরামর্শর ওপর অনেকাংশে নির্ভর করবে ।
রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের মতামতকে সরলীকরন করলে দেখা যায় বিরোধী দলের আন্দোলনে সরকারের পতন হলে এক ধরনের অবস্থা ও পতন না হলে আরেক ধরনের অবস্থা দাঁড়াবে ।
এক) আন্দোলনে সরকারের পতন হলেঃ- আন্দোলনে সরকারের পতন বা সরকারের নতি স্বীকারটা দুই ভাবে আসতে পারে, ক) সরকারের পতনে তৃতীয় শক্তির ক্ষমতা গ্রহন । খ) সরকার ও বিরোধী দলের সমঝোতার ভিত্তিতে তৃতীয় শক্তির নিকট ক্ষমতা প্রদান ।
ক) সরকারের পতনে তৃতীয় শক্তির ক্ষমতা গ্রহনঃ সরকারী দল আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তৃতীয় শক্তি অর্থাৎ আর্মির ক্ষমতা গ্রহন করতে আসুক এমনটা চাইবে না, কারন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ওয়ান এলিভেন থেকে তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জণ করেছে । এতে লাভের চাইতে লসের পরিমানই বেশী । কিন্তু জোটের দ্বিতীয় প্রধান শক্তি জামাতে ইসলামী আর্মির ক্ষমতা গ্রহন করার মত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে এবং করবে, কারন এতে ওদের বিচারাধীন নেতা ও সংগঠন রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
খ) সরকার ও বিরোধী দলের সমঝোতার ভিত্তিতে তৃতীয় শক্তির নিকট ক্ষমতা প্রদানঃ সরকার আন্দোলন দমন ও নিয়ন্ত্রণে সক্ষম না হলে ওয়ান এলিভেনের মত সরকার আসুক এমনটাও চাইবে না । সরকার চাইবে বিএনপিকে সমঝোতায় এনে সমঝোতা ভিত্তিক সরকারের মাধ্যমে পরবর্তী সরকারের নির্বাচনকে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করতে । এ ধরনের সমঝোতা ভিত্তিক সরকার আসুক, জামাতে ইসলাম চাইবে না । কারন এতে ওদের বিচারাধীন নের্তৃত্ব ও সংগঠনকে রক্ষা করা যাবে না । আবার শক্তি সামর্থ্য ও পরিস্থিতি বিবেচনায় মেনে না নেওয়ার উপায়ও থাকবে না ।
দুই) আন্দোলনে সরকারের পতন না হলেঃ- যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচার, জামাতে ইসলামীকে নিষিদ্ধকরণ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীকে নিয়ে সরকার যে কৌশল নিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে সরকার যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচার ও জামাতে ইসলামীকে নিষিদ্ধকরণের বিষয়টা সরকারের মেয়াদের শেষ সময় পর্যন্ত নিয়ে যাবেন এবং দু-চার জনের বিচারের রায়ও কার্যকর করবেন এবং জামাতের রাজনীতি আইনী প্র্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ করবেন । এতে জামাতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, ওলামা মাশায়েকরা রাজপথ উত্তপ্ত করবে এবং সারা দেশে বিশৃংখলা সৃষ্টি করবে । গণজাগরণ মঞ্চ তাদের অহিংস জাগরণী কর্মসূচীতে জনমতের উত্তাপ ছড়াবে ।
বিএনপি দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী ও সরকার পতনে রাজপথ ও জনজীবন স্থবির করে দিবে । দল গুলির এহেন পারষ্পরিক ধবংসাত্মক ও যুদ্ধাংদেহী কর্মসূচীতে সরকার জনগণের জানমাল রক্ষার অজুহাতে জরুরী অবস্থা ঘোষনা করবে এবং সরকার চাইবে জরুরী অবস্থা কালিন সময়ে আর্মির উপস্থিতিতেই নির্বাচনটা করিয়ে নিতে, এতে বিএনপি অংশ গ্রহন না করলেও সাংবিধানিক সংকটের অজুহাতে সরকার নির্বাচন করিয়ে নিবে । জাতীয় পার্টিও নির্বাচনের সুযোগটি গ্রহন করবে । কারন এরশাদ আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোটে সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখবে, তবে স্বপ্ন পূরণ না হলে প্রধান বিরোধী দলের নেতার আসনটি নিশ্চয়তা মিস্ করতে চাইবেন না । তবে প্রধান বিরোধী দলের অংশ গ্রহন ছাড়া নির্বাচনে গঠিত সরকারটি দেশে ও দেশের বাহিরে গ্রহন যোগ্যতা আদায়ে সক্ষম হওয়া বা না হওয়ার ওপর নির্ভর করবে সরকারের মেয়াদকাল ।
কিন্তু শান্তি প্রিয় দেশবাসী চায় সরকারী দল ও প্রধান বিরোধী দল আলোচনায় আসুক, সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হোক, রাষ্ট্র ও জনগণ মুক্তি পাক অনিশ্চিত, উদ্বেগজনক ও উৎকন্ঠিত পরিবেশ থেকে । যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে দেশ কলংকমুক্ত হোক, ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, যেখানে সরকার ও বিরোধী দল উভয় ক্ষেত্রে থাকবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ।
লেখকঃ প্রবাসী, জাপান
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন