যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে সরকার যে সংশয় তৈরি করেছে তারই পরিপ্রেক্ষিতে অভূতপূর্ব গণজাগরণ আমাদের এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ আর প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। যুদ্ধাপরাধের অপরাধে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন দণ্ড ঘোষণাকে কেউ কেউ দেখেছে সরকারের সঙ্গে জামায়াতের আঁতাত হিসেবে। গণজাগরণ মঞ্চ সেই কথিত আঁতাত অনুমানকে চ্যালেঞ্জ করেছে। মানুষের এই জাগরণের শক্তিকে সরকার সমীহ করেছে। নানারকম সহায়তা করেছে। আইনের একটা ফাঁক বন্ধ করে সংশোধনী এনেছে। কিন্তু গণজাগরণ মঞ্চের জাগ্রত জনচেতনাকে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা ঢাকতে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা ক্রমশ এই জনজাগরণের নির্দলীয় চরিত্রে পরিবর্তন এনেছে। মানুষ যে উদ্দীপনা নিয়ে জেগেছে, যে উৎসাহে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে চাইছে, সরকার তাকে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের কায়দা হিসেবে দেখতে চাইছে। যে গণজাগরণ মঞ্চ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি করে উত্তাল হয়েছে তাই একসময় আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের দাবিকে মুখ্য করেছে। জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ যে গণজাগরণ মঞ্চের প্রাণশক্তি হিসেবে উদ্ভাসিত হয়েছে, জামায়াতে ইসলামী সুকৌশলে এই গণজাগরণ মঞ্চকে ধর্ম বিদ্বেষ মঞ্চ হিসেবে লক্ষ্য তৈরি করে তার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের সুযোগ নিয়েছে। যেসব ইসলামী দল রাজনৈতিক মতাদর্শগতভাবে জামায়াতে ইসলামীর প্রচণ্ড বিরুদ্ধতায় বিশ্বাসী তারাই কথিত ইসলামবিদ্বেষ ঠেকাতে সংঘাত সংঘর্ষের পথে মাঠে নেমেছে। কথিত ইসলামপন্থিদের সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ আহত-নিহত হয়েছে। দেশের প্রতিটি আনাচেকানাচে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনীতিতে সহিংসতার নতুন আলামত সুস্পষ্ট হচ্ছে।
মানুষ নিজ থেকে এগিয়ে এসে মানবতাবিরোধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কামনা এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের যে দাবি করেছে, সরকার তাকেই রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে।
২.
কেন সরকার তা করছে
এক, সরকার ভাবছে মানুষের এই উদ্দীপনা জাগিয়ে রাখতে পারলে, তা সরকারবিরোধী সকল অভিযোগ থেকে জনমানুষের দৃষ্টিকে আড়াল করতে সক্ষম হবে।
দুই, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে বিরোধী দলের আন্দোলনের ইস্যুকে দিগ্ভ্রান্ত করা যাবে।
তিন, জামায়াত-শিবিরবিরোধী এই জনসচেতনতাকে দলীয় সমর্থন দিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত জিইয়ে রাখতে পারলে জামায়াতকে কোণঠাসা করা যাবে। পক্ষান্তরে তাই বিএনপি থেকে জামায়াত বিচ্ছিন্নের বটিকা হিসেবে কাজ করবে।
চার, আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে হলে শত্রুশিবিরে আঘাত হানতে হবে। সরকারের মূল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি। সরকার মনে করে বিএনপিকে ঘায়েল করলেই বিজয় অর্জন সম্ভব। সে কারণেই যুদ্ধাপরাধ ইস্যু জিইয়ে বিএনপিকে যত বেকায়দায় ফেলা যায় ততই মঙ্গল। বিএনপি থেকে জামায়াতের বিচ্ছিন্ন নিশ্চিত হলে ভোটের অংকে এগিয়ে থাকবে আওয়ামী লীগ। এই সুযোগে প্রয়োজনে আগামী নির্বাচন এগিয়ে এনে সরকার নির্বাচনে জিততে চাইছে।
৩.
অতীত অভিজ্ঞতা
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী রাজাকার আলবদরদের বিচারের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি ‘দালাল আইন’ জারি করেন। দালাল আইনে প্রায় ৩৮ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের বিচারের জন্য সারা দেশে ৭৩টি আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়। সাধারণ ক্ষমার আওতায় অনেকে ছাড়া পেলেও ১১ হাজারেরও বেশি রাজাকার-আলবদরÑ যুদ্ধাপরাধী কারাবন্দী ছিল। এদের বিচার প্রক্রিয়াধীন ছিল। ১৯৭৩ সালের মধ্যে ৭৫২ জন যুদ্ধাপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা হয়। ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর ‘দালাল আইন’ বাতিল করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবু সাদত সায়েম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাতিল, এমনকি যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সাজাপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামিসহ রাজাকার আল বদরদের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।
বঙ্গবন্ধুকে এই বিচার কাজ শুরু করার পর অভ্যন্তরীণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয়। তখন সকল ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ছিল। দেশে তখন একক শক্তিধর দল ছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে সংসদে আওয়ামী লীগ ছিল নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পাওয়া একটি দল। আওয়ামী লীগের বাইরে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮ জন। কিন্তু তখনও এই বিচার কাজ করতে তৎকালীন সরকারকে নানারকম বেগ পেতে হয়। বিচার কাজ যত এগিয়েছে দেশের মধ্যে ততই অভ্যন্তরীণ নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে। সেই তুলনায় এখন তো পরিস্থিতি আরও বিরূপ। দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয়। গত ৪২ বছরে জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলো আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাধর হয়েছে। তাদের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ক্ষমতা বেড়েছে। অন্যদিকে বৃহত্তম বিরোধী দলের নৈকট্য তারা লাভ করেছে। কাজেই মানবতাবিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে চাইলে তাদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধমূলক একটা বড় চাপ তো অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু সরকার কি তা বিবেচনায় নিয়েছে?
সরকার জামায়াতের কৌশল ও শক্তি সম্পর্কে কি কোনো বিশ্লেষণ করেছে?
জামায়াত যে ধর্মের আবরণকে ব্যবহার করে সরকার ও ধর্মকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে সেই বিষয়টি কি সরকার খেয়াল করেছে?
বাস্তবতার কোন প্রয়োজনে, কি কারণে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা, তৎকালীন আওয়ামী লীগের মতো দল, দালাল আইনে অভিযুক্ত অনেককে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন, তা কি বর্তমান সরকার বিশ্লেষণ করেছে?
প্রতিপক্ষের শক্তিকে ছোট করে দেখা, প্রতিপক্ষের সঙ্গে রাজনৈতিক সুবিধা নেবার হীন চেষ্টা করা দুটোই মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে। অতীতে তা দেখা গেছে। অথচ সরকার সেই অতীত থেকে কোনো শিক্ষা নিয়েছে বলে মনে হয় না। বরং জামায়াতের নেতাদের বিচার নিয়ে বার বার নানারকম ভোটের রাজনীতির খেলা খেলতে চেষ্টা করছে।
সর্বশেষ গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকে ব্যবহার করে এই বিচার কাজে জনমতের যে সুযোগ সরকার পেয়েছে, তাকেও দলীয় স্বার্থেই ব্যবহারের চেষ্টা করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মূল দাবির লক্ষ্য ক্রমশ নানা উপলক্ষে ধাবিত হয়েছে।
৪.
লক্ষ্য ও উপলক্ষের লড়াই
জনতার দাবির মূল লক্ষ্য কি? মানুষ কি চায়?
এক, মানুষ চায় আদালতে মানবতাবিরোধী অপরাধে যে বিচার হচ্ছে তা যেন অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে।
দুই, বিচারের নামে যেন কোনো প্রহসন না হয়।
তিন, তদন্ত, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন, আইনজীবী দল এমনভাবে তৈরি হোক যেন আইনের ফাঁক গলে অপরাধীরা পার না পেয়ে যায়।
চার, জামায়াতের যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে ইসলাম সমার্থক নয়। সরকার দেশে এমন কোনো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না করে, যেখানে ইসলাম ধর্ম বিদ্বেষ আর এই স্বতঃস্ফূর্ত জনলড়াই সমার্থক হয়ে ওঠে।
এখানকার অধিকাংশ মানুষ ধর্মপ্রাণ। ধর্ম নিয়ে যে কোনো অবমাননা তারা মানতে পারবে না। জামায়াত যেন সেই সুযোগ না নিতে পারে।
পাঁচ, জনগণের চাওয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এর সঙ্গে সরকার যেন ভোটের রাজনীতির নোংরা খেলা না করে। একে যেন বিরোধী দলকে বধের হাতিয়ার না বানায়।
ছয়, মানুষ চায় হিংসা, দ্বেষ, জিঘাংসা, হত্যা, হরতাল, পুলিশি নিপীড়নের রাজনীতি যেন ফিরে না আসে।
সাত, মানুষের চাওয়া, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের ক্ষুদ্রস্বার্থে সরকার ও বিরোধী দল যেন এই বিচারকে ব্যাহত না করে।
আট, জনগণ আরেকটা ১/১১ চায় না। তারা চায় না দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা ফিরে আসুক। আবার অগণতান্ত্রিক শাসন চালু হোক। তারা চায় না গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র চালু থাক।
নয়, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার, পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে দুর্নীতি, গুম-খুনের বিচারহীনতা, দলীয় টেন্ডারবাজিসহ সরকারের সকল অপকর্ম ঢাকতে সরকার যেন এই জনজাগরণকে ব্যবহার না করে।
দশ, মানুষ চায় সুশাসন। দুর্নীতিমুক্ত ভয়হীন পরিবেশ। চায় নির্বিঘেœ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে। রাস্তায় সহিংসতা মানুষকে উদ্বিগ্ন করে। পুলিশের গুলি আর হত্যা মানুষকে উদ্বেগাকুল করে।
৫.
প্রতিপক্ষের শক্তি
যে কোনো যুদ্ধে প্রতিপক্ষের শক্তি ও কৌশল সম্পর্কে নির্মোহ বিশ্লেষণ করা সবচাইতে জরুরি। বর্তমান সরকার প্রতিপক্ষের শক্তি ও কৌশল সম্পর্কে নির্বিকার। অন্যদিকে জননির্ভরতার চাইতে পুলিশি নির্ভরতায় অধিকতর আকাক্সক্ষী। জামায়াত সম্পর্কে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ ও আকাক্সক্ষা স্মরণযোগ্য।
ইন্দো এশিয়ান নিউজ সার্ভিস (আইএএনএস) ৩০ জুন ২০১১ তারিখে এক সংবাদ প্রকাশ করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বরাতে। ঐ সংবাদ অনুযায়ী নয়া দিল্লিতে তার বাসভবনে সংবাদপত্রের একদল সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠকে মনমোহন সিং বলেন, ‘Our relations (with Bangladesh) are quite good. But we must reckon that at least 25 percent of the population of Bangladesh swear by the Jamaat-e-Islami and they are very anti-Indian, and they are in the clutches, many times, of the ISI. So, a political landscape in Bangladesh can change at any time. We do not know what these terrorist elements, who have a hold on the [Jamaat-e-Islami] elements in Bangladesh, can be upto.’
পরবর্তীতে জামায়াত নেতৃবৃন্দ এই বক্তব্যের প্রতিবাদ সংবাদপত্রে পাঠিয়ে বলে, মনমোহন সিংকে ভুল বোঝানো হয়েছে।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় এটা পরিষ্কার জামায়াতের শক্তি সম্পর্কে তারা উদ্বিগ্ন। অথচ জামায়াত সম্পর্কে সরকারের আচরণ অন্যরকম। সরকার জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়ে আগ্রহী কিনা তা যথেষ্ট সংশয় সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে জামায়াতকে চাপে রেখে সরকার রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের ভুল নীতি দ্বারা চালিত হচ্ছে। সরকারের মিত্র সকল দলকে নিয়ে এ বিষয়ে একটি সমন্বিত নীতি কৌশল নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
৬.
মানুষ কি চায় জনজাগরণ মঞ্চে তার লক্ষণ সুস্পষ্ট হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানের মনের অনুভূতি কি তাও সরকারের অজানা নয়। আবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে বিরোধী দল কি চায় তাও জানা।
সুতরাং যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়ে মানুষ আওয়ামী লীগের ওপরই নির্ভরশীল। জনজাগরণ মঞ্চে অহিংস আন্দোলনে জনউপস্থিতি তা প্রমাণ করেছে।
কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, জনগণের মনের ভাষা সরকার পড়তে ব্যর্থ হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়ে মানুষ যে দ্ব্যর্থহীনভাবে এগিয়ে এসেছে সেখান থেকে তাদের পিছিয়ে যাবার উপায় নেই। কিন্তু সরকার জনগণের সেই আকাক্সক্ষাকে ব্যবহার করে ক্রমাগত কুটিল রাজনীতির সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছে। সরকার তার সাময়িক রাজনৈতিক সুবিধা আদায়কে বড় বলে ভাবছে। সরকারের এই ভাবনাটি আত্মধ্বংসী। কেননা দেশে ক্রমশ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। প্রায় প্রতিদিন পুলিশ গুলি ছুড়ছে। মানুষ মরছে।
সহিংসতা অন্তর্ঘাতের সুযোগ তৈরি করে। অন্তর্ঘাত ধর্মকে ব্যবহার করে বড় রাজনৈতিক দুর্যোগকে ত্বরান্বিত করে। রাজনৈতিক দুর্যোগ কিংবা সহিংসতা সব অর্থে সামরিকীকরণ প্রক্রিয়াকে জাগ্রত করে। সমাজ বা রাষ্ট্রে এই মিলিটারাইজেশন বা সামরিকীকরণ প্রবণতা অনেক বড় এবং দীর্ঘস্থায়ী বিপদকে ডেকে আনে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা মহলকে তাদের ফায়দা লাভের সুযোগ করে দেয়।
৭.
তারুণ্য তার প্রবল গতিতে এগিয়ে এসে আমাদের রাষ্ট্র জীবনের এক বিষফোঁড়া অপসারণের সুযোগ এনে দিয়েছে। প্রচলিত রাজনীতির নানান দূষণ, মানুষকে তাঁতিয়ে দিয়েছে। পরিবর্তনের হাওয়া তারুণ্যের এই গতির মধ্যে ঘুরছে। জাতীয় পতাকা, শহীদ মিনার বুকে ধারণ করা বৈশ্বিক জনগণ হয়ে ওঠার আকাক্সক্ষী এই তারুণ্যের ভেতরে জ্বলে ওঠা ক্রোধ, দাহ, অপমানের প্রতিবাদের ঘ্রাণ সরকার বুঝতে চাইছে না। তারুণ্য যে গতিতে এগিয়েছে সরকার সেখানে ক্রমশ ঘোলাজলে মাছ শিকারের নামে পিছিয়ে পড়ছে। যুদ্ধাপরাধের অপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে তারুণ্যের এই গতি রাজনীতির প্যাঁচে পড়ে প্রতারিত হতে চায় না। জেগে ওঠা জনগণ যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রশ্নে প্রতারিত হলে তার সব ক্রোধ ধাবিত হবে সরকারের দিকেই। সরকারকে জনভাবনার এই দিকটি বুঝতে হবে। নইলে যে চেতনায় মানুষ জেগেছে তার ক্রোধের আগুনের মুখে পড়তে হবে সরকারকেই।
(সুত্র, সাপ্তাহিক, ০১/০৩/২০১৩)
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন