ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন- বাংলাদেশে একধরণের ভূত আছে যারা পেট্রোলবোমা মারছে। এরা অদৃশ্য শক্তি এবং যেখানে-সেখানে পেট্রোলবোমা মারছে। পেট্রোলবোমা মারতে, বানাতে এবং রাখতে গিয়ে এপর্যন্তô যারা ধরা পড়েছে তাদের বেশির ভাগই বিএনপি এবং জামায়াত-শিশিরের কর্মী।
‘সাধারণ মানুষের কথা শুনবে কে?’ আলোচ্য বিষয়ের উপর সময় টেলিভিশনের ‘সম্পাদকীয়’ অনুষ্ঠানে শ্যামল দত্ত একথা বলেন। আহমেদ জোবায়েরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড· রেজওয়ান সিদ্দিকী।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পেড়্গাপট নিয়ে শ্যামল দত্ত বলেন - আন্দোলনের নামে এখন হরতাল-অবরোধ ডাকছে বিএনপি এবং পেট্রোলবোমা মারছে আওয়ামী লীগ এই কালচার আর বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশে এপর্যন্তô অনেক রাজনৈতিক আন্দোলন হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছে। কিন্তু পেট্রোলবোমা মেরেছে বা পেট্রোলবোমা দিয়ে কোনো গ্রাম জ্বালিয়েছে তার একটিও নজির নেই। যদিও পেট্রোলবোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আবিষ্ড়্গার হয়েছিল। তবে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোর সংস্ড়্গৃতি রাজাকার, আলবদর বাহিনীর। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা কখনই এই সব কাজ করেনি।
তিনি বলেন- ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের যে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করেছিল তারই পরিবর্তিত ধাপ হল বর্তমান পেট্রোলবোমার আতঙ্ক। যদিও ৫ জানুয়ারির পূর্বের সহিংসতাকে সরকার নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছিল, কিন্তু বর্তমানের সহিংসতাকে সরকার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। এরকারণ হল রাজনীতিতে দুটি দলের এজেন্ডা একহয়ে গেছে। অন্যদিকে বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতার অবস্থা ৫ জানুয়ারির আগের অবস্থা থেকে একেবারে ভিন্ন। এই ভয়াবহতা এখন আরো বিস্তৃতি লাভ করেছে। অনুমান করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন সংবাদপত্রের শিরোনামে এই খবর এসেছে যে- বাংলাদেশের সহিংসতার সাথে পাকিস্তôান যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিককালে এসএসসি পরীড়্গার্থীদের পরীড়্গা স্থগিত নিয়ে শ্যামল দত্ত বলেন- বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধের ফলে বাংলাদেশের প্রায় চৌদ্দ লড়্গ্য শিড়্গার্থীকে গলা চেপে মেরে ফেলা হল। বাংলাদেশের শি্ড়্গার্থীরা এখনও অবগত নয় যে তারা কবে পরীড়্গা দিতে পারবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মেয়েরা ঠিকই পরীড়্গা দিতে পারবে। এটা কেমন নিয়ম। বর্তমানে আমরা এমন একটি দেশে বসবাস করি যে- আরাফাত রহমান কোকোর মেয়েদের পরীড়্গা দেয়া অধিকার আছে, কিন্তু বাংলাদেশের লাখো শিড়্গার্থীর পরীড়্গা দেখার কোনো অধিকার নেই। অত্যন্তô আফসোসের ব্যাপার।
তিনি আরো বলেন- গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আন্দোলন যেকোনো রাজনৈতিক দলের অধিকার। কিন্তু আন্দোলনের নামে পেট্রোলবোমার সহিংসতা কোনো রাজনীতি নয়। বিএনপির উচিত হবে রাজনৈতিক আন্দোলন ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রাখা। কোনো অবস্থাতেই জনগণের বিরম্নদ্ধে কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন করা উচিত হবে না। কারণ এদের রাজনৈতিক আন্দোলনের কাছে ইজতেমা, লাখো পরীড়্গার্থী পরীড়্গা্, কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান, এমনকি কোনো দিনড়্গণ বিবেচনার মধ্যে নেই। সবচেয়ে ্বড় কথা তাদের আন্দোলনের কোনো শুক্রবারও নেই শনিবারও নেই। এভাবে আন্দোলন করে কখনই সরকার পতন সম্্ভব নয়। বিএনপির আন্দোলনের মুখ্য বিষয় হল বাংলাদেশকে পাকিস্তôানের মত আরেকটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন