টক শো রিভিউ
আসলে ছাত্ররাজনীতি বলতে কিছু নেই
23 November 2014, Sunday
সিলেটের হজরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক ছাত্র নিহত হওয়া প্রসঙ্গে দৈনিক সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ূন বলেছেন, 'আসলে এখন ছাত্ররাজনীতি বলতে কিছু নেই। সবই জবরদখলের খেলা। যে যেভাবে পারছে হল দখল ও চাঁদাবাজি করছে। একসময় ছাত্ররাজনীতি ছিল সাধারণ ছাত্রদের কাছে আদর্শ। ছাত্ররাজনীতিতে সেই ঐতিহ্য আর নেই।'
গত শুক্রবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে পর্যালোচনাভিত্তিক টক শো 'প্রাণ ফ্রুটো নিউজ অ্যান্ড ভিউজ' অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে হুমায়ূন এ কথা বলেন। হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো আলোচনা করেন রাজনৈতিক দল এলডিপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম।
অনুষ্ঠানে সঞ্চালক বলেন, কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতির কারণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সিলিটে একজন ছাত্র মারাও গেছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, তাঁরা এসবের দায় নেবেন না। কারণ বহিরাগতরাই এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। কিভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
জবাবে সাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ছাত্ররা যে রাজনীতি করে সেটা হলো ক্ষমতার রাজনীতি। তারা জনগণের জন্য রাজনীতি করে না। না হলে এভাবে তারা নিজেরা নিজেদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারত না। ছাত্রলীগ সংবাদ সম্মেলন করে যেসব কথা বলেছে, তা-ও মেনে নেওয়া যায় না। কারণ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপেই সংঘর্ষ হয়। তাই দায় ছাত্রলীগকেই নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, সরকারি দল সমর্থক ছাত্ররা শিক্ষাঙ্গন জিম্মি করে ফেলেছে। তারা অস্ত্র হাতে একে অপরকে ধাওয়া করছে। সরকার এসবের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে- কিন্তু করবে না। এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখনই ছাত্রলীগের রশি টান দেওয়া উচিত। না হলে আগামী দিনে দেশের অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে।
আলোচনার এ পর্যায়ে সঞ্চালক জানতে চান, রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনকে কিভাবে সাজানো দরকার?
জবাবে সাংবাদিক কাশেম হুমায়ূন বলেন, 'আমরাও তো একসময় ছাত্ররাজনীতি করতাম। তখন মানুষ আমাদের দেখলে অনেক সম্মান করত। এখন আগের মতো সেই সম্মান আর নেই। এখন মানুষ ছাত্ররাজনীতি বলতে মনে করে জবরদখল বা শক্তি প্রয়োগের রাজনীতি। নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনের পর আমরা আশা করেছিলাম একটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতনের পর দেশে একটি গণতান্ত্রিক ধারা ফিরে আসবে। কিন্তু সেই ধারা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সামনের দিনগুলোতে যদি সরকার কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা না নেয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরো সমস্যার মুখে পড়বে। কারণ ছাত্ররাজনীতির কারণে প্রায়ই ক্যাম্পাসগুলো বন্ধ থাকে। এ জন্য ছাত্রদের সেশন পিছিয়ে পড়ে। এটা শিক্ষিত জাতি গঠনের পথে বড় অন্তরায়।' তিনি আরো বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে এই ছাত্ররা অনেক ভূমিকা রেখেছে। অনেক ছাত্রনেতা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। এখন সেই ছাত্ররাজনীতির কারণে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ছাত্ররা মারা যাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন