Image description
 
চলমান ব্যাংক খাতের দুরবস্থার মধ্যে সাধারণ মানুষজন তাদের টাকা ব্যাংকে রাখতে এখন কিছুটা অনিরাপদ মনে করছেন। তবে আশার খবরও আছে, সেটি হলো সঞ্চয়পত্র। নিজের কষ্টের টাকা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা অনেক বেশি নিরাপদ। নিজের গচ্ছিত টাকা তো ফেরত পাওয়া যাবেই, মুনাফার নিশ্চয়তাও রয়েছে। তাই বিনিয়োগের জন্য মধ্যবিত্তের অন্যতম পছন্দ এখন সঞ্চয়পত্র। এতে বিনিয়োগে মুনাফার হারও বেশি।
 
বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ৪ ধরনের সঞ্চয় আছে। এগুলো হলো- পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র। এসবের মধ্যে পরিবার সঞ্চয়পত্র ছাড়া বাকি সব সঞ্চয়পত্রে ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানও বিনিয়োগ করতে পারবে।
 
কে কোন সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ কত টাকার কিনতে পারবেন, সেটা দেখে নেওয়া যাক-
 
পরিবার সঞ্চয়পত্র: এটি কেনা যাবে ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকার। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নারীরাই কিনতে পারবেন এটি। তবে যেকোনো বাংলাদেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ এবং ৬৫ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।
 
পেনশনার সঞ্চয়পত্র: একজন ব্যক্তি এই সঞ্চয়পত্র ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কিনতে পারবেন। এটি একক নামে সর্বোচ্চ বিনিয়োগসীমা। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুপ্রিমকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ও মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী বা স্ত্রী বা সন্তান কিনতে পারবেন এটি।  ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়।
 
বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র: ১০ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা মূল্যমানের পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র আছে। এই সঞ্চয়পত্র একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি কিনতে পারবেন।
 
মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র: ১ লাখ টাকা থেকে শুরু এই সঞ্চয়পত্র তিন মাস অন্তর সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকার ক্রয় করা যাবে।
 
সব মিলিয়ে কেউ যদি একটি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে চায়, তাহলে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবে। 
 
জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা, বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা ও ডাকঘর থেকে এসব সঞ্চয়পত্র কেনা ও ভাঙানো যায়।
 
কোন সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কত
পরিবার সঞ্চয়পত্র: এই সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
পেনশনার সঞ্চয়পত্র: এটিতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফা ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সবচেয়ে বেশি।
 
বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র: পাঁচ বছর মেয়াদি এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
 
মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র: তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
 
তবে মেয়াদ পূর্তির আগে যদি সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গা হয়, তাহলে মুনাফা কমে যায়।