কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে আবারও বাংলাদেশি জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ)। এবার ১৩ জন জেলে ও দুটি মাছধরা ট্রলার তারা আটক করেছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী বোটমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম কালবেলা।
তিনি জানান, “আমাদের ঘাটের দুটি ট্রলার মাছ ধরতে সাগরে যায়। সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে অবস্থানকালে আরাকান আর্মির সদস্যরা ধাওয়া করে ট্রলার দুটিসহ ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। একটি ট্রলারের মালিক শনাক্ত করা গেছে, অন্যটির বিষয়ে খোঁজ চলছে।”
এদিকে, মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর আরাকান আর্মি উপকূলীয় টহল জোরদার করেছে। টহলের সময় তারা দাবি করে, বাংলাদেশি ট্রলারগুলো নিয়ম ভেঙে আরাকান রাজ্যের জলসীমায় ঢুকে মাছ ধরছে। সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত তারা প্রায় ১৮৮ জন বাংলাদেশি জেলে ও ৩০টি নৌকা আটক করে পরে ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু নিয়ম অমান্য করায় এখন ফের ট্রলার আটক অভিযান চালানো হচ্ছে।
ট্রলার মালিক মো. সৈয়দ আলম কালবেলা বলেন, “আরাকান আর্মির কারণে এখন নাফনদ আর সাগরে মাছ ধরা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো ট্রলার ধরে নিয়ে যাচ্ছে তারা। এইভাবে চলতে থাকলে জেলে ও ট্রলার মালিকদের জন্য ভয়াবহ সময় আসবে। সরকার যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “ঘটনাটি আমরা জেনেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, তদন্ত চলছে।”
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ মাসে নাফনদ ও সংলগ্ন সাগর এলাকায় প্রায় ৩৫০ জেলেকে আরাকান আর্মি অপহরণ করেছে। এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে ফেরত আনা সম্ভব হলেও এখনো অন্তত ১৫০ জেলে তাদের হাতে রয়েছে। এতে অনেক জেলে এখন সাগরে নামতেও ভয় পাচ্ছেন।