Image description
 

সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান ১৭ সেপ্টেম্বর একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে আরও দৃঢ় করেছে। আঞ্চলিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে এই চুক্তি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।

 

এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার বিকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়েছে। এখন থেকে সৌদি আরব বা পাকিস্তান আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশ নিজেদের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে। দুই দেশ একসঙ্গে হামলার জবাব দেবে। আলহামদুলিল্লাহ!’

তিনি আরও বলেন, ‘আসলে এমন চুক্তি ছাড়া মুসলিম দেশগুলোর আর কোনো উপায় নেই।’

বিশ্লেষকদের মতে, উপসাগরীয় আরব দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নিরাপত্তার জন্য নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেই নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে কাতারে ইসরাইলের হামলা সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।

রয়টার্সকে এক সৌদি কর্মকর্তা জানান, ‘এই চুক্তি বহু বছরের আলোচনার ফল। এটি কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা দেশের প্রতিক্রিয়া নয়, বরং দুই দেশের দীর্ঘদিনের সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার পদক্ষেপ।’

চুক্তি অনুযায়ী, যেকোনো একটি দেশের ওপর হামলা হলে সেটিকে অন্য দেশের ওপরও হামলা ধরা হবে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান পরস্পরকে আলিঙ্গন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, যাকে পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই চুক্তি দুই দেশের নিরাপত্তা জোরদার করা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি এবং যৌথ প্রতিরোধ সক্ষমতা গড়ে তোলার অংশ।

যদিও এক সৌদি কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত—যা আরেকটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ—তার সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বর্তমানে ইতিহাসের যেকোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে। আমরা এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চাই এবং আঞ্চলিক শান্তিতে অবদান রাখতে চাই।’

পাকিস্তান কি সৌদি আরবকে পারমাণবিক নিরাপত্তা বা ‘নিউক্লিয়ার আমব্রেলা’ দেবে—এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘এটি একটি সর্বাত্মক প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত করে।’