মার্কিন বিমান বা স্থল আক্রমণ প্রতিহত করতে গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ভেনিজুয়েলা। এর মধ্যে কয়েক দশকের পুরনো রাশিয়ান তৈরি সরঞ্জামসহ অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত সূত্রের বরাত দিয়ে বুধবার এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনিজুয়েলায় স্থল অভিযান চালানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন। ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক পাচারকারী জাহাজের ওপর বেশ কয়েকবার হামলা এবং এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার পর এই ইঙ্গিত দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, পরবর্তী পদক্ষেপ হবে স্থলপথ। পরে তিনি ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরে হামলার কথা বিবেচনা করছেন- এমন কথা অস্বীকার করেছেন। খবর ইয়াহু নিউজের।
এদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডকে কেন্দ্র করে গঠিত মার্কিন নৌবহর ক্যারিবীয় সাগরে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী। মাদকবিরোধী অভিযানের আড়ালে যুদ্ধজাহাজের এই বিশাল বহর মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এটিকে কেন্দ্র করে ভেনিজুয়েলা ও কলম্বিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা আরও বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস) এক রিপোর্টে জানিয়েছে, ভেনিজুয়েলায় মার্কিন হামলা হলে প্রথমে দেশটির রানওয়ে ও বিমান ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের আশঙ্কা যতই বাড়ছে ততই তৎপর হয়ে উঠছে লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলা। দেশজুড়ে সামরিক মহড়া এবং নাগরিক ও মিলিশিয়াদের গেরিলাযুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার। ভেনিজুয়েলার ন্যাশনাল বলিভারিয়ান আর্মড ফোর্স দেশজুড়ে নতুন সামরিক মহড়া চালু করেছে। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ক্যারিবীয় উপকূলে বেশ কয়েকটি নৌযানে হামলা চালিয়ে ধ্বংসের দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে ক্যারিবিয়ান সাগরে মোতায়েন করা আছে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ক্যারিয়ার যুদ্ধজাহাজ। সঙ্গে রয়েছে তিনটি ডেস্ট্রয়ারও। সামরিক উপস্থিতি জানান দিতে ১৫ হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অঞ্চলটিতে এটাই কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা মোতায়েন বলে জানা গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতি মূলত ভেনিজুয়েলায় সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে বলে এক রিপোর্টে জানিয়েছে সিএসআইএস। রিপোর্টে আরও বলা হয়, প্রথমে ধ্বংস করা হবে ভেনিজুয়েলার রানওয়ে ও বিমান ঘাঁটিগুলো। তবে বড় মাপের স্থল অভিযানে আপাতত যাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, ট্রাম্প তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছেন এবং ভেনিজুয়েলার নাগরিক এবং সামরিক বাহিনী এই ধরনের যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করবে। রয়টার্সের দেখা সূত্র এবং কয়েক বছরের পুরনো পরিকল্পনার নথি অনুসারে, গেরিলা ধাঁচের প্রতিরক্ষা নিতে শুরু করেছে ভেনিজুয়েলা। যাকে সরকার দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ বলে অভিহিত করেছে এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮০টিরও বেশি স্থানে ছোট সামরিক ইউনিটগুলোকে নাশকতা এবং অন্যান্য গেরিলা কৌশল পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।