বরিশাল বিভাগের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বিশেষ করে পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া), বরিশাল-৫ (সদর) ও পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া–রাঙ্গাবালী)—এই তিনটি আসনে দলটির হাতপাখা প্রতীক বিএনপির ভোটঘরে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
একটিমাত্র উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সাবেক সংসদ-সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী। চারবারের এই সাবেক এমপি রাজনৈতিকভাবে বারবার দল বদলের রেকর্ডের জন্য ইতোমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে প্রথমবার নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০০১ সালে বিএনপির টিকিটে জয়, ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পরাজয়, ২০১৪ সালে আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন জয়, ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে বিজয় এবং ২০২৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরাজয়—এমন নাটকীয় ওঠানামায় ভরা ফরাজীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার।
চলতি বছর তিনি যোগ দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তিনি লড়বেন হাতপাখা প্রতীকে।
দল পাল্টানো নিয়ে সমালোচনা থাকলেও মঠবাড়িয়ায় ফরাজীর একটি ব্যক্তিগত ভোটব্যাংক রয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। দীর্ঘদিন বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেয়ার মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের মধ্যে তিনি জনপ্রিয়তা গড়ে তুলেছেন।
এই জনপ্রিয়তাই কি ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে ভোটে রূপ নেবে?—প্রশ্নটি এখন এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রে।
তবে স্থানীয় বিএনপি মনে করে, ফরাজীর ‘অতি দলবদল’ এবার তার জন্যই কাল হয়ে দাঁড়াবে।
পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম কিসমত বলেন, ‘রুস্তম আলী ফরাজীর চরিত্র বুঝে ফেলেছে মঠবাড়িয়ার মানুষ। তার রাজনীতি যে কেবলই সংসদ-সদস্য হওয়ার জন্য, তা এখন সবাই জানে। ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো, নীতি-আদর্শহীন মানুষকে এবার আর ভোট দেবে না ভোটাররা।’
বিএনপির নেতাদের দাবি, দল ছেড়ে যাওয়া মানে দলের ভোট নিয়ে যাওয়া নয়। বরং ধানের শীষের পক্ষে এবার গণজোয়ার তৈরি হয়েছে, যা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনি মাঠে বিএনপিকেই সুবিধা দেবে।