আওয়ামী লীগের দুর্গখ্যাত গোপালগঞ্জের অধিকাংশ এলাকা ভৌগলিক কারণে নিম্নাঞ্চল। স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্রে এটি ছিল বিল-বাঁওড়, খাল ও নদী-নালায় ভরা একটি পশ্চাৎপদ এলাকা। অধিকাংশ মানুষ ছিল দরিদ্র ও নিম্ন-আয়ের। তবে সেই অবস্থা এখন আর নেই, বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলা বেশ উন্নত। একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট-ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন এখানকার কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
তবে জুলাই-আন্দোলন ও ৫ আগস্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর অনেকটাই পাল্টে গেছে গোপালগঞ্জের রাজনৈতিক দৃশ্যপট। বিভিন্ন ঘটনায় দায়েরকৃত নানা মামলায় আসামি হওয়ায় আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী এখন কারাগারে এবং অজ্ঞাত অবস্থানে। সেইসঙ্গে স্থবির হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম। পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলগুলো।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা সবাই দল গোছানো শুরু করে। দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর পর গত ফেব্রুয়ারিতে গোপালগঞ্জ শহরে পৌরপার্কে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলগুলোও বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও মিটিং-মিছিলের মাধ্যমে বৃদ্ধি করে তাদের সাংগঠনিক কর্মকা-। জেলা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড-পর্যায় পর্যন্ত নতুন নতুন কমিটি গঠন করে তারা নেমে পড়েন নির্বাচনী প্রচারণায়। থেমে নেই অনলাইন ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও।
ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জের তিনটি আসনেই একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, চূড়ান্ত ঘোষণায় জেলার একটি বা দুটি আসনে প্রার্থীর নাম রিভিউ হতে পারে। এজন্য যারাই দলীয় মনোনয়ন লাভে মাঠে নেমেছিলেন তাদের অনেকেই চূড়ান্ত মনোনয়নের অপেক্ষায় আছেন এবং চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় দলের উচ্চপর্যায়ে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এছাড়াও মাঠে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক) এবং খেলাফত মজলিস। ইতোমধ্যে জেলার তিনটি আসনেই তাদের পক্ষ থেকে প্রার্থীতার বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে, নতুন দল হিসেবে গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দলীয় কর্মকা- প্রাথমিক পর্যায়ে। জেলার তিনটি সংসদীয় আসনে তাদের প্রার্থী কারা হবেন এ বিষয়ে এখনো সুস্পষ্ট কিছু জানাতে না পারলেও জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আরিফুল দাড়িয়া জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, দল গোছাতে সাংগঠনিক কর্মকা-ের দিকেই তাদের নজর। ইতোমধ্যে তাদের জেলা-কমিটিসহ মুকসুদপুর ও কোটালীপাড়া উপজেলা কমিটি হয়েছে। যুবদের নিয়ে জাতীয় যুব শক্তি ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ কমিটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শীঘ্রই তাদের দলীয় নির্দেশনা আসতে পারে। নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী তারা প্রার্থী নির্বাচন করে প্রচারণায় নামবেন।
ইতোমধ্যে জেলায় গণফোরামের কর্মকা-ও নতুন করে শুরু হয়েছে। গত ৮ নভেম্বর বিকেলে গোপালগঞ্জ শহরের পাবলিক হল শপিং কমপ্লেক্সে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ-সম্মেলনের মাধ্যমে দলের জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সে সঙ্গে গোপালগঞ্জ-২ আসনে তাদের দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, বিগত সংসদ নির্বাচনগুলোতে জেলায় জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তাদের কোনো সাংগঠনিক কর্মকা- নেই। জেলায় দলীয় মুখপাত্র হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন তাকেও বহুবার চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গোপালগঞ্জ-১ (মুকসুদপুর-কাশিয়ানী) ॥ এ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম। তিনি এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির মাঠে রয়েছেন। ২০০৮ এর নির্বাচনে এ আসনে দলের কয়েক বাঘা নেতাকে টপকে তিনি বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন। বিএনপির দুর্দিনসহ অদ্যাবধি এ আসনে বিএনপির মাঠের রাজনীতি তিনিই ধরে রেখেছেন।
জনকণ্ঠকে দেওয়া বক্তব্যে সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আমি যখনই সুযোগ পেয়েছি মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলার প্রতিটি গ্রামে ঘুরেছি এবং মেহনতী মানুষের খোঁজ-খবর নিয়েছি। ভোটাররা আমাকে কথা দিয়েছেন, তারা আমার পাশে থাকবেন। আশা করছি, বিগত দিনে আমার পরিশ্রমকে মূল্যায়ন করে তারা ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিবেন এবং আগামী নির্বাচনে আমি জয়ী হব ইনশাআল্লাহ’।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হামিদ। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী দল। বর্তমানে দেশের সকল মানুষের দায়িত্ব নিয়ে দেশ পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে জামায়াতে ইসলামীর। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে বেকারত্ব দূরীকরণে নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপনসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নারীদের শিক্ষার দ্বার উন্মোচন করা হবে এবং তাদের চাকরিসহ বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।
এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এম. আনিসুল ইসলাম (ভুলু মিয়া)। মুকসুদপুর এবং কাশিয়ানীকে দেশের একটি মডেল অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আমি একটি সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই। যার মধ্যে থাকবে সমান অধিকারের ভিত্তিতে শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিরাপদ সহাবস্থান, টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ ও বেকারদের কর্মসংস্থান, কৃষি ও স্থানীয় শিল্পে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি ও স্বাবলম্বী করা, স্বাস্থ্য সেবার পরিধি বৃদ্ধি এবং নারী ও শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং যুবকদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা’।
এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রয়েছেন ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান। ঢাকায় আইন পেশার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতায় কর্মরত এবং দৈনিক নবরাজ পত্রিকার বার্তা-সম্পাদক ও ইনচার্জের দায়িত্বে আছেন। জনকণ্ঠকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, এ আসনে চরমোনাই পীরের বিপুলসংখ্যক মুরিদান ও দলীয় সমর্থক রয়েছেন এবং ৩৫-৪০ হাজার হাতপাখার রিজার্ভ ভোট রয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট হলে হাতপাখার প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।
এ আসনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক) এর প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দলের জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা জাহিদ আল মাহমুদ। তিনি বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে তার এলাকা সম্পূর্ণ দুর্নীতি মুক্ত করবেন এবং সকল নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবেন।
এছাড়াও এ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী রয়েছেন দলের কাশিয়ানী উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি কাজী রফিকুল ইসলাম। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে তিনি দেয়াল ঘড়ি মার্কায় দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশা জানিয়েছেন। ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
গোপালগঞ্জ-২ (সদর-কাশিয়ানীর ৭টি ইউনিয়ন) ॥ জেলার তিনটি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ আসনটি। মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫শ’ ৫৭ জন। এবার এ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য ও ড্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. কেএম বাবর আলী। এক সয়য়ে তিনি বরিশাল মেডিক্যাল কলেজের জিএস ও ভিপি ছিলেন। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হতে পারলে জেলার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতসহ প্রতিটি খাতকে পুর্ণাঙ্গভাবে উন্নততর অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব’।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমল হুসাইন সরদার। তিনি বলেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ধর্মীয় কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। কোনো শিক্ষিত বেকার থাকবে না। বিনা টাকায় চাকরি হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না। মাদকমুক্ত দেশ গড়তে কিশোর ও যুবকদের জন্য খেলাধুলাসহ সকল ধরণের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। এমপি নির্বাচিত হলেও আমরা সাধারণ মানুষের মতোই চলবো এবং সর্বস্তরের মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাব’।
এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রয়েছেন দলের জেলা সভাপতি মাওলানা তসলিম হুসাইন শিকদার। গত দুটি সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসনে দলীয় প্রার্থী ছিলেন। জনকণ্ঠকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের সর্বোচ্চ ভূমিকা থাকবে। সে লক্ষ্য নিয়েই জেলার তিনটি আসনেই আমাদের প্রার্থী নির্বাচন করে আমরা মাঠপর্যায়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষে সবসময় সর্বাবস্থায় আমি ও আমার দল বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।’
এ আসনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক) এর প্রার্থী রয়েছেন দলের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কাওছার আহমদ। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে তিনি ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন এবং পোস্টার, ফেস্টুন ও লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন সভা ও বৈঠকের মাধ্যমে তার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং রিক্সা মার্কায় ভোট চাইছেন।
এ আসনে খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য ও ফরিদপুর জোন পরিচালক হাফেজ মাওলানা নাসির উদ্দিন। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠন এবং সংখ্যালঘুদের স্বাধীনভাবে ধর্মীয়সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাসহ সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
এ আসনে গণফোরামের প্রার্থী রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ মফিজ। গত ৮ নভেম্বর জেলা শহরের দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তার প্রার্থীতার বিষয়ে জানানো হয়। সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ মফিজ আগামী সংসদ নির্বাচনে সকলের দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করেন।
গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গীপাড়া-কোটালীপাড়া) ॥ টুঙ্গীপাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং কোটালীপাড়ার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত আসন গোপালগঞ্জ-৩ (সংসদীয় আসন-২১৭)। এ আসনে ১৯৯১ সাল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এসেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এবার এ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী। ২০০৮ এর নির্বাচনে তিনি এ আসনে চারদলীয় জোটের পক্ষ থেকে মনোনীত হয়েছিলেন। পরে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। ইতোমধ্যে এ আসনের দুটি উপজেলাতেই বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেসব সম্মেলনে এসএম জিলানীর পক্ষে বিশাল জনসমর্থন লক্ষ্য করা গেছে।
জনকণ্ঠকে দেওয়া বক্তব্যে এসএম জিলানী বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর মানুষের বাক-স্বাধীনতা ছিল না। ভোটের অধিকার ছিল না। সাধারণ মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। সে কারণে টুঙ্গীপাড়ায়ও আমরা আমাদের রাজনৈতিক চর্চাটা করতে পারিনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে। বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। ১৭ বছর আমি পদে পদে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছি, নির্যাতিত হয়েছি; কিন্তু জনসেবার রাজনীতি থেকে সরে যাইনি। বিএনপিকে এ আসনটি উপহার দিতে আমি নিরলস কাজ করে যাচ্ছি’।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী রয়েছেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী একটি সুশৃঙ্খল দলবদ্ধ পার্টি। ন্যায় ও ইনসাফের ক্ষেত্রে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবার জন্য আমি সমানভাবে কাজ করব। কারও সঙ্গে আমরা সংঘাতে যাবো না। আমরা আমাদের ভোটের অধিকার ও সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করব। কাউকে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেব না। নির্বাচিত হলে শাসক নয়, জনগণের সেবক হিসেবে পাশে থাকবো।’
এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. হাবিবুর রহমান হাবিব। জনকণ্ঠকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ তাকে সুযোগ দিলে তিনি নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি গ্রামে উন্নয়ন প্রতিনিধি কমিটি করে অগ্রাধিকারভিত্তিতে এলাাকার উন্নয়ন করবেন। একজন আইনজীবী হিসেবে আইনি সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি এলাকার অসহায় গরীব মেধাবী শিক্ষার্থী ভাইবোনদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতার ব্যবস্থা করবেন।
এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রয়েছেন ইসলামী যুব আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মারুফ শেখ। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনেও আমি এ আসনে দলীয় প্রার্থী ছিলাম। এরপর থেকে মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে রয়েছি। আগামী নির্বাচনে দলীয় নির্দেশনা নিয়েই আমি এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি।’
এ আসনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক) মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন দলের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল আজিজ মক্কী। বিভিন্ন সভা, বৈঠক ও লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়াও এ আসনে খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদ্য ও গোপালগঞ্জ জেলা সভাপতি শাইখুল হাদিস মাওলানা আলী আহমদ। বিভিন্ন স্থানে তার নির্বাচনী পোস্টার ও ফেস্টুনসহ তিনি তার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।