Image description

কক্সবাজারের উপজেলা চকরিয়ার পৌর এলাকায় জনতা টাওয়ারের সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সভামঞ্চ প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৩টায় ট্রাকের উপর স্থাপিত এই সভামঞ্চে এনসিপি আহবায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা সভামঞ্চে পৌঁছানোর আগেই বিএনপির নেতাকর্মীরা বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মঞ্চটি ভাঙচুর করে। পরে সমাবেশস্থলটিই নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়।

এদিকে কক্সবাজারে জুলাই পদযাত্রা শেষে এনসিপির নেতাকর্মীরা আর চকরিয়ায় যাননি। তারা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রহরায় চলে গেছেন বান্দরবানে।

সুত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার শহরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর একটি বক্তব্যকে ঘিরে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে এনসিপির জনসভা সঞ্চালনা করছিলেন পাটোয়ারী। সঞ্চালনাকালে তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘শিলং থেকে নাকি একজন গডফাদার এসেছে’!

তার এই বক্তব্যটি দ্রুত নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারই রেশ ধরে চকরিয়ায় এনসিপির নির্ধারিত সভামঞ্চ ভাঙচুর করা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এসএম সুজা উদ্দিন জানিয়েছেন, এটা স্পষ্টতই বিএনপি করেছে। তারা আমাদের নেতা নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এটা ঘটিয়েছে।

সুজা উদ্দিন সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় জানান, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিরাপদে চকরিয়া পার হয়ে গেছেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাদের নিরাপদে চকরিয়া এলাকা পার করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এনামুল হকের মোবাইলে ফোন দিলে একজন রিসিভ করে বলেন, ‘স্যার ব্যস্ত আছে। এখন কথা বলতে পারবেন না।’

তবে উত্তেজিত জনতার উদ্দেশ্যে দেয়া একটি বক্তব্যে বিএনপি নেতা এনামুল হক বলেছেন, কক্সবাজারে এনসিপির সমাবেশে একটি অশালীন বক্তব্য এসেছে আমাদের প্রিয় নেতা সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়ে। এ জন্য বিক্ষুব্ধ জনতা রাজপথে এসেছে। এদের উদ্দেশ্য নয় কোন ভাঙচুর করা, কোনো এনসিপির প্রোগ্রাম ব্যাহত করা। আমরা যদি কিছু করতে চাই গণতান্ত্রিক উপায়ে করবো।

তিনি বলেন, আমরা এনসিপিকে আহবান জানাবো, তাদের বক্তব্য যেন শালীন হয়, সুন্দর হয় এবং রাজনৈতিক হয়।

তার মতে, আমরা কোনো সড়কও অবরোধ করিনি, কোনো দোকানপাটেও হাত দিইনি। আমরা ওনাদের পদযাত্রায়ও কোনো ব্যাহত করিনি।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের ফোকাল পয়েন্ট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঘটনার পরপর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এই কাউকে আটক করা হয়নি।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতিকুর রহমান জানান, চকরিয়ার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা সরে গেছেন। এই মুহূর্তে (সন্ধ্যা পৌনে ৭টা) কক্সবাজার-চট্টগ্রাম হাইওয়ে স্বাভাবিক রয়েছে।