
জুলাই বিপ্লবে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে টাঙ্গাইলে মাঠের হিসাব-নিকাশ অনেকটাই পাল্টে গেছে। ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা গা-ঢাকা দিয়েছেন। অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরাও আত্মগোপনে চলে গেছেন। এ অবস্থায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অনেকটা নির্ভার। তবে নির্বাচনি আসনগুলোতে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকায় এ নিয়ে হিমশিম অবস্থা দলটিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের আটটি আসনে এখন পর্যন্ত বিএনপির ৩৩ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাকর্মীর নাম জানা গেছে। সে হিসাবে প্রতি আসনে গড়ে প্রার্থী রয়েছেন চারজন করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থী (ছয়জন করে) রয়েছেনÑটাঙ্গাইল ৪, ৫, ও ৬ নম্বর আসনে। বিএনপির সূত্র জানায়, দলের মধ্যে চ্যালেঞ্জ হতে পারেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এ বিষয়ে দলকে সতর্ক থাকতে বলেন তারা।
তবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গত কয়েক মাস আগেই জেলার আটটি আসনে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলকে সংগঠিত করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছেন দলের প্রার্থীরা। একইভাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও প্রাথমিকভাবে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে।
এদিকে সরকারের প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচনি পরিবেশ থাকলে টাঙ্গাইলের আটটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনো গুছিয়ে উঠতে পারেনি। তবে দু-একটি আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা রয়েছে। প্রায় একই অবস্থা গণঅধিকার পরিষদ ও গণসংহতি আন্দোলনসহ অন্য ছোট রাজনৈতিকগুলোর।
টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী)
মধুপুর আর ধনবাড়ীÑএই দুই উপজেলা নিয়ে টাঙ্গাইল-১ আসন। আসন্ন নির্বাচনে আসনটিতে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। তারা যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন এলাকায় দলের সভা-সমাবেশ ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। এ ছাড়া দলের নির্বাহী কমিটির অপর সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, এ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য সৈয়দা আশিকা আকবরের ছেলে সমাজসেবক আফিফউদ্দিন, অ্যাডভোকেট শাজাহান কবির, কর্নেল (অব.) আসাদুল ইসলাম আজাদ বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।
এদিকে দলের একক প্রার্থী হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর অধ্যক্ষ মোন্তাজ আলী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ডাক্তার হারুন অর রশীদ নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন তারা।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী স্বপন ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। তিনি জানান, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় তিনি পরাজিত হন। আসন্ন নির্বাচনে দলের একক প্রার্থী থাকলে বিজয় সুনিশ্চিত বলে মনে করেন তিনি।
জানতে চাইলে জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মোন্তাজ আলী আমার দেশকে বলেন, ‘এলাকায় এখনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থেকে কোনো সমস্যা নেই। পরিবেশ ভালো আছে। আমরা সাধারণ মানুষের সাড়া পাচ্ছি। মধুপুর ও ধনবাড়ীতে চাঁদাবাজে ছেয়ে গেছে। জনগণ সুযোগ দিলে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও দখলবাজমুক্ত সুন্দর এলাকা গড়ে তুলব।’
টাঙ্গাইল-২ (ভুঞাপুর-গোপালপুর)
জেলার ভুঞাপুর ও গোপালপুর উপজেলা নিয়ে টাঙ্গাইল-২ আসন। আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। এ আসনে এখনো একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন একাধিকবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় প্রায় ১৭ বছর কারাভোগ করেন। স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর তিনি খালাস পান।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে এলাকায় কাজ করছেন হুমায়ুন কবির। দলীয় কর্মসূচি পালন ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামানও এলাকায় গণসংযোগ চালাচ্ছেন। এলাকায় লিফলেট আকারে দলের ঘোষণাপত্র বিতরণসহ দলীয় কর্মসূচি ও সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তরুণরাই নেতৃত্ব দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছি। আগামী নির্বাচনে জনগণ গণঅধিকার পরিষদকেই ভরসা করবে।
অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি ফজলে বারি ভুঞাপুরী গণসংযোগ করছেন।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল)
ঘাটাইল উপজেলা নিয়ে টাঙ্গাইল-৩ আসন। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির একাধিক প্রার্থী মাঠে কাজ করছেন। দলীয় কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি ধর্মীয় ও সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন তারা।
আসনটিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ মনোনয়নপ্রত্যাশী। এর আগে দলীয় কর্মকাণ্ডে কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থেকেছেন। তবে এখনো তার জনপ্রিয়তা রয়েছে বলে মনে করছেন কর্মী-সমর্থকরা।
অন্যদিকে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এসএম ওবায়দুল হক নাসির নির্বাচনি এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। দলকে সংগঠিত করার পাশাপাশি ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। নাসির বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে আমি শতাধিক মামলার আসামি ও বারবার কারানির্যাতিত হয়েছি। বিএনপি বড় দল। একাধিক প্রার্থী থাকতেই পারে। সর্বশেষ দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে আমি মনে করি।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলামও এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী।
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে হুসনে মোবারক বাবুল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা রেজাউল করিম ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রার্থী মোফাখ্খারুল ইসলাম গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী)
স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন এই আসনে আওয়ামী লীগের লতিফ সিদ্দিকী এবং এক সময়ের জাসদ নেতা ও পরবর্তী সময়ে বিএনপির যোগ দেওয়া শাজাহান সিরাজের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তারা একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শাজাহান সিরাজ ২০০১ সালে সর্বশেষ বিএনপির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে অংশ নেন তার মেয়ে ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।
জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা বেনজীর আহমেদ টিটু গণসংযোগ চালাচ্ছেন। দলীয় কর্মসূচি পরিচালনার পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। টিটু বলেন, ‘দলের দুর্দিনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে থেকে তাদের সংগঠিত করার চেষ্টা করেছি। এ চেষ্টা এখনো অব্যাহত রয়েছে। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এ আসনটি দলকে উপহার দিতে পারব।’
২০১৮ সালে বিএনপির মনোনয়ন পান মুক্তিযোদ্ধা দলের সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম মিয়া। পরে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। আসন্ন নির্বাচনে তিনিও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হয়ে মাঠে কাজ করছেন।
এদিকে ২০০৮ সালে মনোনয়ন পান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান মতিন। তিনিও এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী। মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি প্রকৌশলী বাদলুর রহমান খান ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ, সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়াসহ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদানের মাধ্যমে গণসংযোগ করছেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক একেএম আব্দুল আউয়াল।
গত ২০২৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। ত্রয়োদশ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন বলে জানান তার ঘনিষ্ঠজনরা।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর একমাত্র প্রার্থী প্রফেসর খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক দলীয় কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া নির্বাচনি মাঠে কাজ করছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সানোয়ার হোসেন সাইফিও।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর)
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে রয়েছেন। বিএনপির প্রচার সম্পাদক এবং যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ব্যাপক গণসংযোগ চালাচ্ছেন। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন তিনি। টুকু মনোনয়ন পেলে তাকে সদর আসনে একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবেই মনে করছেন অনেকে। তিনি আমার দেশকে জানান, ‘টাঙ্গাইল শহরে বেড়ে উঠেছি। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ও কিশোর গ্যাংমুক্ত, তথা সামগ্রিক উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান ও জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু। পরে হাইকমান্ডের নির্দেশে ছাইদুল হক ছাদু মানোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। আসন্ন নির্বাচনেও তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।
এদিকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল।
জানতে চাইলে ফরহাদ ইকবাল বলেন, ‘আমি সদরের ছেলে। একাধিকবার কারাবরণ করেছি। গত ১৭ বছর দলকে ধরে রেখেছি। তাই দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা করছি।’
এ ছাড়া জেলা ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক সভাপতি খন্দকার আহমেদুল হক শাতিল নিজেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে ঘোষণা দিয়েছেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য ও সাবেক এমপি খালেদা পান্নার ছেলে ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান প্লেটো গণসংযোগ করছেন।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা আমির আহসান হাবিব মাসুদ ব্যাপক গণসংযোগ চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে দলকে সংগঠিত করে যাচ্ছেন। একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তার।
জানতে চাইলে আহসান হাবিব মাসুদ বলেন, ‘দলের পক্ষ থেকে আমাকে প্রার্থী করা হয়েছে। সদরের জনগণের কাছে যাচ্ছি। আগেও মানুষের পাশে ছিলাম। সদরের জনগণের উন্নয়ন ও চাওয়া-পাওয়া এখনো পূরণ হয়নি। নির্বাচিত হলে আমরা সদরকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে চাই। যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আশা করছি মানুষ আগামীতে জামায়াত প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবে।’
এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রার্থী ও মাওলানা ভাসানীর নাতি আজাদ খান ভাসানী নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন।
টাঙ্গাইল-৬ (দেলদুয়ার-নাগরপুর)
এ আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি গণসংযোগ করছেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির নির্বাহী সদস্য নুর মোহাম্মদ খান, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ও ছাত্রদলের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আওয়াল লাভলু গণসংযোগ চালাচ্ছেন। এ ছাড়া বিএনপি নেতা শরিফুদ্দিন আরজু, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম স্বপন ও জাতীয়তাবাদী নাগরিক প্রজন্ম দলের সভাপতি জুয়েল সরকার এবং অর্থনীতিবিদ ও আইনজ্ঞ একে রাজ্জাক শাহজাদা দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
আসনটিতে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ডা. একেএম আব্দুল হামিদ গণসংযোগ চালাচ্ছেন। ভোটারদের মধ্যে দলের প্রতি আস্থা বাড়াতে কাজ করে চলেছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আখিনুর মিয়া, এনসিপির মেজর (অব.) সালাউদ্দিন ও জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ মামুনুর রহিম এলাকায় গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর)
এ আসনে বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক ও দুবারের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী গণসংযোগ করছেন। দলীয় নানা কর্মসূচির মাধ্যমে তৃণমূল থেকে দলকে সংগঠিত করছেন। নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন বিএনপির সহসাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা সাইদুর রহমান সাঈদ সোহরাব। তিনি বলেন, মির্জাপুরের মানুষ পরিবর্তন চায়, নতুন মুখ দেখতে চায়। তবে ধানের শীষ যার, আমরা তার।
দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হয়েছেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সস্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সালাম খান।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ তালুকদার দলকে সংগঠিত করার পাশাপাশি গণসংযোগ করছেন। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী এটিএম রেজাউল করিম আল রাজি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার ও গণসংযোগ করছেন।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখিপুর)
বাসাইল ও সখিপুর উপজেলা নিয়ে টাঙ্গাইল-৮ আসন গঠিত। এই আসনে লড়বেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি আমার দেশকে বলেন, ‘দেশে যতবার আন্দোলন হয়েছে, তার প্রধান ইস্যু ছিল নির্বাচন। আমরা নির্বাচন করব। তবে আমরা বিস্মিত গত ১১ মাসে আমাদের দলকে একবারও ডাকা হয়নি। সরকারি প্রভাবমুক্ত অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রয়োজন। আর এটাই বড় সংস্কার। ভোটের পরিবেশ ঠিক থাকলে জেলার আটটি আসনেই প্রার্থী দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বাসাইল ও সখিপুর উপজেলার বিএনপিকে শক্তিশালী ও সংগঠিত করছেন বলে জানান। পাশাপাশি দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন তিনি। সামাজিক ও ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন। ২০০১ সালে তিনি প্রথম বিএনপি মনোনয়ন পান।
সখিপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শেখ হাবিবও এবার দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ ছাড়া এলাকায় কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও তারেক পরিষদের সাবেক সহসভাপতি নাছিম এম খান রুনু।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর একমাত্র প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা শফিকুল ইসলাম খান। ইতোমধ্যেই তিনি নির্বাচনি গণসংযোগ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকা বাসাইলে আমার খুবই ভালো অবস্থা। এখন সখিপুরের মানুষের কাছে যাচ্ছি। উন্নয়নের দিক দিয়ে বাসাইল খুবই পিছিয়েপড়া এক উপজেলা। কারণ, গত ৫৪ বছরে বাসাইলের কোনো সন্তান এমপি হতে পারেননি। নির্বাচিত হলে বাসাইলের উন্নয়নের পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকা সখিপুরকেও শিল্পাঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলব।’
এ ছাড়া আসনটিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল লতিফ মিয়া।