Image description

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে আওয়ামী লীগকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ড. মির্জা গালিব।

 

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (আইআরডিসি) আয়োজিত আলোচনায় প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের চেতনার ওপর দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ যেভাবে ফ্যাসিবাদী ধারায় প্রবেশ করেছে, তেমনি জুলাই বিপ্লবের আদর্শকেও ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে এনসিপি ফ্যাসিস্ট রূপ নিতে পারে।

দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধেও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ বাইরের কোনো শক্তি নয়।

‘জুলাই বিপ্লব’-কে জাতীয় রাজনীতির মূলধারায় আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাইয়ের পেছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের এগোতে হবে এর ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে। কিছু রাজনৈতিক দল এখনো এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেনি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ড. গালিব বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে অভ্যন্তরীণ নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে। মনোনয়ন নয়, গণতান্ত্রিক উপায়ে কমিটি গঠন করতে হবে।

ভোট সংস্কৃতি নিয়েও তিনি বলেন, মার্কা দেখে নয়, যোগ্যতা দেখে ভোট দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন স্বচ্ছ ছিল না। ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয়, আর জুলাই আমাদের সুযোগ দিয়েছে। এখন আমাদের ভালো শাসক, ভালো লোক ও ভালো নাগরিক গড়তে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এর কেন্দ্রে রাখতে হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান। তিনি বলেন,

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল রাজনৈতিক অনিবার্যতা। '৫২ ও '৭১-এর আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা ’২৪-এর জুলাইয়ে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান দেখলাম। ফ্যাসিবাদকে পতন করে গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে এই আন্দোলন।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন আইআরডিসির সাধারণ সম্পাদক ও জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক। সভাপতিত্ব করেন আইআরডিসির সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমীন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও সংগঠনের নেতারা।