|
জসিম উদ্দিন
|
|
ক্ষতিকর বলপ্রয়োগ নীতি
27 Aug, 2014
পুলিশ সব সময় আলোচিত হয়ে থাকছে। সরকারের বলপ্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে সব সময় ব্যবহার হচ্ছে তারা। বিরোধীদের ওপর চরম দমন-নিপীড়নে সর্বোচ্চ দক্ষতা দেখালেও অপরাধ দমনে ততটাই তারা দুর্বল। তবে অপরাধী যদি সরকারি দল বা সরকারের আনুকূল্যের কেউ হন তাহলে তোষণ করতে সময় লাগে না পুলিশের। দুর্বল প্রতিপক্ষকে নিমিষেই পর্যুদস্ত করতে তাদের জুড়ি নেই। অন্যায় কাজে নিজেদের কেউ বাধা দিলে তাদের উড়িয়ে দিতে তারা কখনো চিন্তাও করে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানটির ভাবমর্যাদা সঙ্কট এখন চরমে পৌঁছেছে। এখন তারা কোনো ভালো অভিযানে নামলেও নাগরিকেরা তাদের সন্দেহের চোখে দেখে। ভেঙে পড়া ইমেজ যখন উদ্ধার সবচেয়ে জরুরি, তখনো তারা ব্যস্ত রয়েছে আক্রমণাত্মক ও আগ্রাসী ভূমিকায়।
পুলিশ হেফাজতে নাগরিক মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। সাধারণ মানুষ তাদের কাছ থেকে নির্যাতন ও অবহেলা পায়। অন্য দিকে শাসকগোষ্ঠী পায় তাদের তোষামোদ। সব সময় একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকে তাদের খেদমতে। ক্ষমতাসীনেরা তাদের মারধর করলেও তারা চুপ থাকে। সম্ভবত এর বিচারও তারা চায় না। এ ধরনের অনেক ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘটতে দেখা গেছে। কয়েক দিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের কয়েক সদস্যকে ছাত্রলীগের সদস্যরা পিটিয়েছে বলে খবর বের হয়েছে। ছাত্রলীগ সদস্যদের ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস করতে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ এই পুলিশ সদস্যদের পেটায়। এখন মার খাওয়ার পর তারা কী প্রতিকার পেয়েছে তার কোনো খোঁজ মেলেনি। দুই দিন আগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশকে মারধর করেছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ছাত্রসংগঠন। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসীদের সাথে এক হয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে সশস্ত্র ক্যাডারদের পুলিশের মাঝে দেখা গেছে।
ইনকিলাবে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর দৈনিকটির অফিসে অভিযান চালিয়ে বার্তা সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়। কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশ প্রতিবেদনের কপি ও কম্পিউটার জব্দ করে নিয়ে যায়। পত্রিকাটির সম্পাদকের বাসায়ও মধ্যরাতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসবের নিন্দা ও সমালোচনা করে সম্পাদক নিজ পত্রিকায় পরপর দুই দিন মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছেন। পত্রিকার সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ পত্রিকা অফিসে অভিযান চালিয়ে বার্তা সম্পাদককে গ্রেফতার করার নিন্দা জানায়। শেষে পত্রিকাটি এ সংবাদ প্রকাশের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সংবাদটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। প্রজাতন্ত্রের কোনো প্রতিষ্ঠান বা কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে যেভাবে তার অপনোদন হওয়া দরকার, এখানে সে ধরনের সুষ্ঠু কোনো প্রক্রিয়া দেখা যায়নি। এতে করে প্রতিপক্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সাধারণ নাগরিকদের সন্দেহ-সংশয় বেড়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি মিডিয়া উভয়ের প্রতি মানুষের আস্থা এভাবে কমে যায়।
পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেনÑ এ অভিযোগ অনেক দিনের। তারা নিয়ন্ত্রণ করছেন নিয়োগ, বদলি ও শান্তিমিশনের চাকরি। ধর্মীয় পরিচয়কে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। বদলি, নিয়োগ ও বিদেশে লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। এই প্রভাবশালীদের কাছে ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করা পুলিশ কর্মকর্তারাও টিকতে পারছেন না। নিজের স্বার্থ রক্ষায় আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা এদের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন সরকারের কাছ থেকে।
অ্যাডিশনাল এসপি থেকে এসপি পদমর্যাদায় উন্নীত করতে সম্প্রতি একটি পদোন্নতির তালিকা প্রস্তুত করার কথাও প্রকাশিত হয়। কিছুৃ অ্যাডিশনাল এসপিকে এসপি পদে চলতি দায়িত্বে পদোন্নতি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক লেনদেন করার কথা প্রকাশ পায়। অভিযোগ প্রকাশ পেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এসপি পদমর্যাদার কিছু কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকায় নিয়োগ পান আনুকূল্যের ভিত্তিতে। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এ ধরনের নিয়োগ-বদলিতে নেপথ্যে মূল ভূমিকা রেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে গত কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার খবর প্রকাশ হয় বিভিন্ন সময়। দাপুটে পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যাপারে শীর্ষ কর্মকর্তারাও কিছু বলেন না।
অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বিভিন্ন সময় শক্তিশালী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে; কিন্তু নানা অনিয়মের কোনো তদন্ত হয় না সাধারণত। একজন অত্যন্ত জুনিয়র কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত এআইজি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার কথা আলোচিত হয়েছে। পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভাজন ও গ্রুপিং সৃষ্টি করে কেউ কেউ সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করে। নিয়োগ, বদলি ও পদায়নসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আধিপত্য বিস্তার কাজে আসে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জুনিয়র কর্মকর্তাদের একটি গ্রুপ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ পায়। ছাত্রজীবনে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার দাবি করে এ পদ তারা বাগিয়ে নেন। শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশ কাটিয়ে মন্ত্রী ও শীর্ষ রাজনীতিকদের সাথে তারা সখ্য করেন। এদের মধ্যে এক ডজনের বেশি কর্মকর্তা বিপুল অর্থ দেশের বাইরে ব্রিটেন, মালয়েশিয়া, দুবাই, কানাডা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নামে-বেনামে পাচার করেছেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব কর্মকর্তা বিদেশ যাওয়ার জন্য স্বেচ্ছায় দীর্ঘ ছুটি নিয়েও রেখেছেন।
ওপরের এসব খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এগুলো পুলিশের অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনার বিষয় তুলে ধরে। এসব খবরের সত্যতা শতভাগ নিশ্চিতত করবে কে। প্রথমত জনস্বার্থে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ যখন ওঠে সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নিয়ে যাচাই করবেন। কেউ যদি দোষী হন তিনি শাস্তি পাবেন। ইনকিলাবে এ ধরনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর আক্রান্ত হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাংবাদিকদের প্রতি যে আচরণ করেছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। এর আগে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং তার পত্রিকাটির ব্যাপারে জবরদস্তিমূলক আচরণ করে পুলিশ। ১৯ আগস্ট রাতে ইনকিলাবে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালায়। প্রতিবেদনের মূল কপিটি তারা জব্দ করে। কম্পিউটার কক্ষ থেকে বার্তা সম্পাদককে তার নিজের কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাত সাড়ে ১১টায় তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে যায়। আদালত তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২০ ঘণ্টার ব্যবধানে পত্রিকাটির অফিসে ডিবি পুলিশ আবারো অভিযান চালায়। কম্পিউটার সিপিইউসহ বিভিন্ন জিনিস জব্দ করে তারা। তিন দিন ধরে পুলিশ এ পত্রিকার সাংবাদিকদের হয়রানি করে। সম্প্রচার নীতিমালার গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের তাণ্ডব আরো ভীতি ছড়িয়ে দিচ্ছে।
পুলিশের আক্রমণ কেবল পত্রিকাটির ওপর সীমাবদ্ধ থাকেনি। সম্পাদকের মা ও স্ত্রীর বাসায়ও মধ্যরাতে অভিযান চালানো হয়। ২১ আগস্ট পত্রিকাটির সম্পাদক পুলিশি অভিযানের নিন্দা ও সমালোচনা করে পত্রিকার প্রথম পাতায় নিজের একটি মন্তব্য প্রতিবেদন ছাপেন। তিনি লিখেছেন, ‘একজন পুলিশ কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ে ইনকিলাব রিপোর্ট প্রকাশ করায় তিনি সংুব্ধ হয়ে মামলা করেছেন। ওয়ারী থানায় তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেনÑ ‘ইনকিলাব মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রচার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এ ছাড়াও পুলিশ বাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে’। প্রশ্ন হলো, আসলেই কি তাই? এক ব্যক্তির দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করা কি গোটা প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা? আর খবর মিথ্যা না সত্য এখনো কি সেটা তদন্ত করে বা অনুসন্ধান করে দেখা হয়েছে? ঘটনার পর আমি পুলিশ প্রশাসনে কর্মরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জেনেছি, তারা এসবের কিছুই জানেন না। একজন পুলিশ কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশের পর পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন পুলিশ কর্মকর্তা পত্রিকা অফিসে ‘প্রলয়’ ঘটিয়েছেন শুনে তারা অবাক হয়েছেন।
প্রশ্ন হলো, ইনকিলাব একজনের দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টের প্রতিবাদ করতে পারেন সংশ্লিষ্টরা। খবরটি মিথ্যা, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং পুলিশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রয়াস, এ অভিযোগ কি যুক্তিসঙ্গত? নাকি ওই পুলিশ কর্মকর্তা নিজের অপকর্মের কালি গোটা পুলিশ প্রশাসনে লেপ্টে দিয়ে নিজেকে বাঁচাতে চাইছেন? হিন্দু ধর্মের হওয়ায় ওই কর্মকর্তা চতুরতার সাথে পত্রিকার বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগ তুলেছেন। তার এই চাতুর্যপূর্ণ অভিযোগের মাধ্যমে কি প্রশাসনে কর্মরত অন্য হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের খাটো করা হচ্ছে না?” তিনি মন্তব্য করেন, মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রীরও সমালোচনা করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে তো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। পরদিন তিনি আবারো পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘এ কেমন আচরণ?’ শিরোনামে আরেকটি মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছেন। সেই লেখায় একজন সম্পাদকের অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে। কিভাবে মধ্যরাতে তার মাকে হয়রানি করা হলো। তার স্ত্রীকে ডেকে তোলা হয় তার বর্ণনা দেন। তিনি জানান, স্থানীয় থানার পুলিশ পেশাদার আচরণ করলেও একদল পুলিশ ছিল যারা আগ্রাসী। যাই হোক প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করে নেয়ায় সম্পাদকের এ মন্তব্য থেকেও তিনি সরে এসেছেন নিশ্চই; কিন্তু সতর্কতার অভাবে এরমধ্যে অনেকে অবস্থার শিকার হয়ে গেলেন।
প্রত্যাহার করার পর দুঃখ প্রকাশ করে ইনকিলাব ওই প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘ইনকিলাব কর্তৃপক্ষ বিনয়ের সাথে স্বীকার করছে, রিপোর্টটি লেখা, সম্পাদনা ও প্রকাশের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা হয়নি। এ ছাড়া রিপোর্টটি প্রকাশের পর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এর অনেক তথ্যই সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। এর ফলে একটি জাতীয় পত্রিকার ওপর মর্যাদা ও আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি হবে। একইভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে এতগুলো গুরুতর অভিযোগের ব্যাপারে পাঠক সন্দেহের মধ্যে পড়ে থাকবে। পুলিশ যদি এভাবে পত্রিকাটির আগ্রাসী না হতো তাহলে সন্দেহ ততটা হতো না।
জাতীয় পত্রিকা যখন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে, স¤পূর্ণ নিশ্চিত হয়ে তা করবে। বিষয়টি যখন স্পর্শকাতর সে ক্ষেত্রে তথ্য-উপাত্ত চেক, ক্রস চেক আরো বেশি গুরুত্বের দাবি রাখে। স¤পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া ছাড়া সে ধরনের রিপোর্ট কখনো ছাপা যেতে পারে না। এর জন্য পত্রিকার কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত বিনয়ের সাথে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঠিক আছে; কিন্তু ভাবমর্যাদার সঙ্কটে থাকা পুলিশের মর্যাদা কি এতে বাড়বে? পুলিশের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও নির্যাতনের সরাসরি ভুক্তভোগী যখন সাধারণ মানুষ।
পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে টার্গেট করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়। যেভাবে গুরুতর অভিযোগগুলো উত্থাপিত হয়েছে, তাতে আরো অনেকে জড়িয়ে গেছেন। প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আসা দরকার ছিল। যেসব বিষয় তাদের কাছে পরিষ্কার ছিল না সেসব বিষয়ে প্রয়োজন ছিল তদন্তের। এখন এ ধারণা হওয়াই স্বাভাবিক, পুলিশ জোর করে পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে দমিয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে পুলিশ যে সুনাম অর্জন করেছে, দেশের অভ্যন্তরে ঠিক তার বিপরীত ভাবমর্যাদা সৃষ্টি করছে তারা।
একটি শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য চেইন অব কমান্ড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইনকিলাবে যেভাবে অভিযান চালানো হলো, এরপর সম্পাদক মন্তব্য প্রতিবেদন লিখে যে অভিযোগ করলেন তাতে দেখা যাচ্ছে, এ বাহিনীর মধ্যে কমান্ডের ঘাটতি রয়েছে। পত্রিকায় ভুল বা উদ্দেশ্যমুকুলক কিছু ছাপা হলে সেটার প্রতিকার রয়েছে। গুরতর কিছু হলে সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই শাস্তি পাওয়ার জন্য আইন রয়েছে। রিপোর্ট প্রত্যাহার করে নেয়া হলেও সম্পাদকের করা অভিযোগের কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। পুলিশ জনগণের সেবায় নিয়োজিত দক্ষ একটি বাহিনী হিসেবে আবিভূত হোক, এটা সবার কামনা। একটা সময় এমন আসুক পুলিশকে সবাই বন্ধু মনে করবে। কোনো ঝামেলায় পড়লে দৌড় দিয়ে তাদের কাছে যাবে। সবাই আশা করে, এ বাহিনী বলপ্রয়োগের ক্ষতিকর নীতি থেকে সরে আসবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন