মেরেছে যেভাবে, মরেছে সেভাবে
17 Aug, 2014
ইরাকের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের জন্ম উত্তর-ইরাকের তিরকিত প্রদেশের আউজা গ্রামে। তার জন্মের অব্যবহিত পর তার বাবা নিরুদ্দেশ হলে তার মা আবার বিয়ে করেন; কিন্তু সৎ বাবার ঘরে সাদ্দামের জীবন সুখকর ছিল না। সাদ্দাম এরপর বাগদাদে তার মামার বাড়িতে লালিত-পালিত হন। সাদ্দামের মামা বাথ পার্টির একজন বিশিষ্ট ও সক্রিয় নেতা ছিলেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত ইরাক ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। সে সময় ইরাকের অভ্যন্তরীণ ক্ষুদ্র ুদ্র দল ক্ষমতার বিভিন্ন দ্বন্দ্বে লিপ্ত ছিল। ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত দলগুলোর একটি ছিল বাথ পার্টি।
সাদ্দাম হোসেন ১৯৫৭ সালে ২০ বছর বয়সে বাথ পার্টির সদস্য হন। ধীরে ধীরে দলে তার প্রভাব বাড়তে থাকে। ১৯৬৩ সালে বাথ পার্টি সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণ করলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। জুলাই, ১৯৬৮ সালে বাথ পার্টি আবার ক্ষমতা দখল করলে সাদ্দামকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর ১৯৭৯ সালে ইরাকের প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করলে সাদ্দাম প্রেসিডেন্টের কার্যভার গ্রহণ করেন। সাদ্দাম শক্ত হাতে ইরাক শাসন করেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সাদ্দামের নেতৃত্বে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়। ইরান তখন রেজা শাহ পাহলবির পতন-পরবর্তী শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়তুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির নির্দেশনায় পরিচালিত হচ্ছিল। রেজা শাহের পতন-পরবর্তী সাদ্দামের ধারণা ছিল ইরান অর্থনৈতিক ও সামরিক উভয় দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাই সহজেই ইরানকে পরাভূত করে দেশটির বেশ কিছু ভূমি করায়ত্ত করা সম্ভব হবে; কিন্তু সাদ্দামের হিসাবে ভুল ছিল। প্রায় আট বছর দীর্ঘস্থায়ী এ যুদ্ধে উভয় দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়, যদিও যুদ্ধটিতে কোনো দেশই চূড়ান্ত সফলতা পেতে ব্যর্থ হয়। ইরাক-ইরান যুদ্ধে ইরাককে পেছন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব যে ইন্ধন জুগিয়েছিল এবং ক্ষেত্রবিশেষে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে সামরিক সাহায্যের হাত প্রশস্ত করেছিল সে বিষয়টি আজ আর বিশ্বাবাসীর অজানা নয়।
সাদ্দামের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছেÑ তিনি ১৯৮৮ সালে কুর্দি শহর হালাফজায় অভিযান পরিচালনা করে কুর্দিদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে পাঁচ হাজার কুর্দির মৃত্যু ঘটান। সে সময় নিরীহ কুর্দিদের এ অমানবিক মৃত্যু সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছিল।
সাদ্দাম ১৯৯০ সালে কুয়েত দখল করলে যুক্তরাষ্ট্র কুয়েতের পক্ষাবলম্বন করে। ইরাকের কুয়েত আক্রমণ পূর্ববর্তী সময়ে দেখা গিয়েছিল এ আক্রমণের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের উৎসাহ ছিল। ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে সামরিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ হাসিল। ইরাক-কুয়েত যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী কুয়েতের পক্ষাবলম্বনে প্রত্যক্ষ অংশ নিলে ইরাক পরাভূত হয়। এ যুদ্ধ-পরবর্তী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্ট সিনিয়র বুশ কুয়েত সফরে এলে তাকে বীরোচিত সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং বিপুল অঙ্কের অর্থের উপহারসামগ্রী দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দিয়ে নির্লজ্জ বেহায়ার মতো একাধিক বিমানে করে এ উপহারসামগ্রী নিজ দেশে নিয়ে যান।
ইরাকের কাছে ব্যাপক মানববিধংসী রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্র রয়েছেÑ এ মিথ্যা অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বাধীন বাহিনী ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ করে। এ যুদ্ধে সাদ্দামের বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলে সাদ্দাম ইরাকের অভ্যন্তরে আত্মগোপনে চলে যান। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন সেনারা সাদ্দামের জন্মস্থান তিরকিত থেকে তাকে আটক করে। আটকের পর সাদ্দাম দখল করা ইরাকে মার্কিন বাহিনীর অধীন বন্দী থাকাবস্থায় মার্কিন য্ক্তুরাষ্ট্র সমর্থিত পুতুল সরকার সাজানো, নাটকীয় ও প্রহসনমূলক বিচারের আয়োজন করে সাদ্দামের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। এরপর ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সাদ্দামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সাদ্দাম সুন্নি ধর্মাবলম্বী হলেও তিনি ছিলেন একজন জাতীয়তাবাদী নেতা। তার শাসনামলে ইরাকের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয় এবং সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নতি ঘটে।
ইসলাম বর্তমানে পৃথিবীর প্রধান ধর্মগুলোর অন্যতম। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সুন্নি ও শিয়া এ দু’টি ভাগে বিভক্ত। বর্তমানে পৃথিবীতে সামগ্রিক মুসলিম জনগোষ্ঠীর ৮৭-৮৯ শতাংশ সুন্নি অপর দিকে ১১-১২ শতাংশ শিয়া। ইরান, ইরাক ও বাহরাইনÑ এ তিনটি রাষ্ট্র শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা অধ্যুষিত। পাকিস্তানে বর্তমানে একক দেশ হিসেবে পৃথিবীর সর্বাধিক সুন্নি ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শিয়া জনগোষ্ঠী রয়েছে।
মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর ওফাতের পর খলিফা পদে উত্তরাধিকার নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে মুসলমানদের ঐক্যে ফাটল ধরে। উটের যুদ্ধ ও সিফফিনের যুদ্ধ এক বছরের ব্যবধানে অনুষ্ঠিত হয়। উটের যুদ্ধে হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর জামাতা ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী রা:-এর বাহিনীর কাছে হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর স্ত্রী মা আয়েশার বাহিনী পরাভূত হলে হজরত আলী রা: তাকে তার সৈন্যদের দিয়ে সসম্মানে মদিনায় ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সিফফিনের যুদ্ধটি হজরত আলী রা: ও মুয়াবিয়ার বাহিনীর সাথে সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধে কোনো পক্ষ চূড়ান্ত বিজয়ী না হলেও মূলত এ যুদ্ধ থেকেই সুন্নি-শিয়া বিরোধের সূত্রপাত। সিফফিনের যুদ্ধের প্রাক্কালে এমন গুজব রটানো হয়েছিল যে, আয়েশা রা: তার বাহিনী নিয়ে মুয়াবিয়ার পক্ষাবলম্বন করে হজরত আলীর বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য সিফফিন অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছেন। এরপর কারবালা যুদ্ধে হজরত হোসাইন রা: সপরিবারে শহীদ হলে শিয়া-সুন্নি বিরোধ স্থায়ী রূপ নেয়। বর্তমানে ইরানের সামগ্রিক জনসংখ্যার ৯০-৯৫ শতাংশ শিয়া। দীপরাষ্ট্র বাহরাইনের ৬৫ শতাংশ জনসংখ্যা শিয়া। ইরাকের ব্যাপারে বলা হয় দেশটির ৬০-৬৫ শতাংশ জনসংখ্যা শিয়া যদিও এ বিষয়ে মতদ্বৈধতা রয়েছে। ইরাকের সুন্নিরা আরব, কুর্দি ও তুর্কি এ তিনটি জাতিতে বিভক্ত।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী যুদ্ধজয়ী মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রাচ্যকে তাদের ইচ্ছেমতো বিভাজিত করে ইসলাম ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন জাতির মধ্যে জাতিগত বিরোধের সৃষ্টি করে। তাদের ইন্ধনে সে বিরোধ এখনো অব্যাহত আছে এবং তাদের ইন্ধনেই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন আরব দেশের সীমানা যে পুনঃনির্ধারিত হয়ে সিরিয়ার কিছু অঞ্চলসহ ইরাককে তিন ভাগে বিভক্ত করে তিনটি পৃথক সুন্নি, শিয়া ও কুর্দি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নীলনকশা বাস্তবায়নের পথে, তা এখন অনেকটা দৃশ্যমান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এ দু’টি দেশ যদিও নিজেদের গণতান্ত্রিক বলে দাবি করে; কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যসহ আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ দু’টি দেশের প্রত্যক্ষ সমর্থনে রাজতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্র টিকে রয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের সদস্যভুক্ত প্রত্যেক রাষ্ট্রের নাগরিকের ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচার লাভের অধিকার রয়েছে। ইরাক জাতিসঙ্ঘের সদস্যভুক্ত একটি রাষ্ট্র। ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় সাদ্দামের নাটকীয়, সাজানো ও প্রহসনমূলক যে বিচারের আয়োজন করা হয়, তার জন্য প্রথম যে বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল তার নাম রিজগার আমিন। তিনি ফৌজদারি বিচার পরিচালনার ক্ষেত্রে একজন অপরাধী আইনের যেসব সুরক্ষা ভোগ করে থাকে সাদ্দামকে তা দেয়ার ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত পুতুল সরকার যখন দেখল বিচারপতি রিজগার আমিনকে দিয়ে তাদের অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ সম্ভব নয়, তখন তাকে সাদ্দামের প্রতি নমনীয় আখ্যা দিয়ে যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই অপসারণ করে কুর্দি বংশোদ্ভূত রউফ আবদুর রহমানকে মুখ্য বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
সাদ্দামের এ প্রহসনমূলক বিচারে তার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিলÑ তিনি ১৯৮২ সালে তাকে হত্যার মাধ্যমে উৎখাত ও তার বিরুদ্ধে ব্যর্থ অভ্যুত্থানে জড়িত সন্দেহে দুজাইলের ১৪৮ নাগরিককে ফাঁসি দিয়েছিলেন।
বিচারপতি রউফ আবদুর রহমানের জন্ম হালাফজায়। এ শহরটিতে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের মাধ্যমে পাঁচ হাজার কুর্দি হত্যার ব্যাপারে সাদ্দামের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল, দাবি করা হয় সে হত্যাকাণ্ডে এ বিচারপতির বেশ কিছু আত্মীয় প্রাণ হারান। এ ধরনের ক্ষেত্রে পৃথিবীর সর্বত্র বিচারপতি বা বিচারকেরা যে নীতি অনুসরণ করে থাকেন তা হলো একজন বিচারপতি বা বিচারকের স্বার্থের সাথে বিচারসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পৃক্ত থাকলে সে বিচারপতি বা বিচারক সে বিচারকার্যে অংশ নিতে বিরত থাকেন; কিন্তু আলোচ্য ক্ষেত্রে দেখা গেল অংশ নিতে বিরত থাকা দূরের কথা বিপুল উৎসাহ নিয়ে দেশী ও বিদেশী প্রভুদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য তিনি প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে সাদ্দামকে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত করেন।
মুসলমানদের প্রধান দু’টি ধর্মীয় উৎসবের একটি হলো ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহার দিন সকালে সাদ্দামের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকর করার সময় মঞ্চের পাশে উপস্থিত এক ব্যক্তির মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায় মৃত্যুর পূর্বক্ষণেও ফাঁসির মঞ্চে মার্কিন সৈন্য ও তাদের মদদপুষ্ট ইরাকি সৈন্যরা সাদ্দামের সাথে অবমাননাকর আচরণ করছিলেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় মৃত্যু কার্যকর করার পর ছয়বার তার দেহে ছুরিকাঘাত করা হয়।
নাটকীয়, সাজানো ও প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে পক্ষপাতদুষ্ট বিচারপতি দিয়ে বিদেশী ও নিজ দেশীয় প্রভুদের আকাক্সার প্রতিফলনে একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের অবমাননাকরভাবে ইসলাম ধর্র্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের দিন মনগড়া ফাঁসির রায় কার্যকর প্রতিহিংসার চরম বহিঃপ্রকাশ বৈ অন্য কিছু নয়। একজন বিচারপতি প্রতিহিংসাপরায়ণ হলে ন্যায়বিচারের আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না। মৃত্যুদণ্ড দেয়ার পর এ বিচারপতি তার জীবনের জন্য শঙ্কিত হয়ে পড়লে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন; কিন্তু কেন তাকে আশ্রয় দেয়া হয়নি, তা তার বিদেশী প্রভুরাই ভালো বলতে পারবেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিচারপতি বা বিচারকের ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে যেসব ব্যক্তি অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আজ সাদ্দামের মৃত্যুদণ্ড প্রদানকারী বিচারপতির পরিণতি দেখে তাদের মধ্যে এমন আশার সঞ্চার হয়েছে যে, অপরাধী বা পাপী যেই হোক না কেন তাকে ইহজগতেও তার অন্যায় কৃতকর্মের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে।
বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিচারপতি রফউ আবদুর রহমান সুন্নিদের অধিকৃত একটি শহর থেকে নর্তকীর পোশাক পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় ১৬ জুন, ২০১৪ সালে বিদ্রোহীদের হাতে আটক হন এবং আটকের দুই দিন পর সুন্নি বিদ্রোহীরা ফাঁসির মাধ্যমে তার মৃত্যু কার্যকর করেন। তার এ ধরনের মৃত্যুতে তার দেশীয় ও বিদেশী কোনো প্রভু সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এমনটি পরিলক্ষিত হয়নি। বরং সবার মুখে আজ একটি কথা শোনা যাচ্ছে, অন্যায়ের অবলম্বনে একজন বিচারপতি সাদ্দামকে যেভাবে মেরেছে আজ তাকেও সেভাবে মরতে হয়েছে। সাদ্দাম প্রকৃতই অপরাধী হয়ে থাকলে অবশ্যই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থায় প্রকাশ্য আদালতে তার বিচার অনুষ্ঠান বাঞ্ছনীয় ছিল। প্রহসনের বিচারে সাদ্দামকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে আজ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, যারা মিথ্যা অজুহাতে ইরাক আক্রমণ করে দেশটিকে ধ্বংস করেছে তারা শক্তিধর হওয়ায় এভাবে আর কত দিন নিজেদের বিচারের বাইরে রাখবে?
সাবেক জজ, সংবিধান ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন