সোমবার মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিক নেতাদের উভয় অংশ। একটি অংশ এরই মধ্যে মিছিল-সমাবেশ করে নীতিমালা বাতিল করার দাবি জানিয়ে এই নীতিমালা না মানার ঘোষণা দিয়েছে। অপর অংশ আগে কমিশন গঠন করার দাবি করেছে। তবে সবাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে নীতিমালার অনেকগুলো ধারার অপপ্রয়োগ হতে পারে। এই আশঙ্কার কারণ কী? প্রথমত, কয়েক মাস ধরে মিডিয়া প্রসঙ্গে সরকারি তৎপরতা ও বক্তব্য মিডিয়া অঙ্গনে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যেসব কারণে অপপ্রয়োগের আশঙ্কা করা হচ্ছে তার মধ্যে উল্লেখ করা যায় যেমন- সংবাদপত্রের ডিক্লারেশন বাতিলের ক্ষমতা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে ঢাকার ডিসির প্রস্তাব, এই তৎপরতা তথ্য মন্ত্রণালয়ের বলে জানাজানি হওয়া, প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি ('সরকারের সমালোচনা করুন, বাধা দেবেন না'), কমিশন না করেই দ্রুততার সঙ্গে সম্প্রচার নীতিমালার অনুমোদন করে তা কার্যকরের ক্ষমতা তথ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া, কমিশন গঠনের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ না করা এবং নীতিমালায় সব ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে তথ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দিষ্ট করা।
কিছুদিন ধরে লক্ষ করা যাচ্ছিল, তথ্যমন্ত্রী টিভি সাংবাদিকদের ওপর বেশ ক্ষুব্ধ। বক্তৃতায় সেই ক্ষোভ তিনি প্রকাশ করেছেন। ইউনেসকো বাংলাদেশ জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড-২০১৪ প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সেই সময়ের একটি লঞ্চডুবির ঘটনায় নিহতদের পরিবার-পরিজনের আহাজারি লাইভ প্রচার করায় এবং শিশুদের লাশের ছবি দেখানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি টিভি চ্যানেল ও টিভি সাংবাদিকদের কাজের সমালোচনা করেন কড়া ভাষায়। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, নিষেধ করার পরও এমনটি করেছেন চ্যানেল মালিকরা। এর কয়েক সপ্তাহ আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফেরি দুর্ঘটনার পর সেখানকার টিভি ও বিবিসি, সিএনএন, আল-জাজিরা নিহতদের স্বজন ও আহতদের কাছে এভাবে প্রতিক্রিয়া প্রচার করেনি বলে জানান মন্ত্রী। তাঁর মতে, 'এ ধরনের প্রচারণায় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।' টিভি সাংবাদিকতার এমন ধারায় মন্ত্রীর মতো অনেকেই অসন্তুষ্ট। কিন্তু এর গভীরে না গিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় মিডিয়াকে কেবল বারণ করার ক্ষমতা অর্জন করলে নীতিমালায় উল্লিখিত 'অবাধ, উন্মুক্ত, বহুমুখী, দায়বদ্ধ ও সক্ষম সম্প্রচার সেক্টর গড়ে তোলা' কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। মন্ত্রী বিবিসি, সিএনএন, আল-জাজিরার উদাহরণ দিয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলো কোন ধরনের নীতিমালার আলোকে চলে, সেটা কিন্তু মন্ত্রী বলেননি। তাদের অভ্যন্তরীণ পরিচালন ব্যবস্থাটিও দেখতে হবে। পাশাপাশি হিসেবে নিতে হবে আমাদের সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সপ্রাপ্তির দলীয় আনুগত্য, নিয়োগ বিধি, প্রশিক্ষণের অবস্থা, কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা, চাকরির নিরাপত্তা, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের আচরণ ইত্যাদি।
সঞ্চালনমুখী সম্প্রচার নীতিমালা হোক
আমাদের ছয়টি সংবাদ চ্যানেলসহ ১৪টি টিভি চ্যানেল প্রতিদিন খবর প্রচার করলেও এসব চ্যানেলের নিজস্ব কোনো 'কোড অব এথিকস' বা 'প্রাইভেসি পলিসি' আছে কি না বলা মুশকিল। ওয়েব সাইটে বা মুদ্রিত অবস্থায় খুঁজে পাইনি। ফোনে কেউ কেউ বলেছেন, 'তৈরি হওয়ার পথে'। এই পলিসি না থাকার কারণেই সম্ভবত টিভি সংবাদ নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সময়ের সমালোচনার জবাব দেননি কেউ। প্রশ্ন করা যায়, মন্ত্রী কেন টিভি মালিকদের নিষেধ করবেন? আমরা মনে করি, সুশাসনের আলোকে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে সম্প্রচারমাধ্যমের মালিকরা এবং কর্মীরা দায়িত্ববান ও সংবেদনশীল না হয়ে পারবেন না।
দেশে জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা না থাকলেও বাংলাদেশের সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা ও সাংবাদিকের জন্য অনুসরণীয় আচরণবিধি প্রণয়ন করে প্রেস কাউন্সিল ১৯৯৩ সালে। এটি সংশোধন করা হয় ২০০২ সালে। তবে এই আচরণবিধি মূলত প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের করণীয় তুলে ধরেছে। আচরণবিধির অনেক ধারাই মানা হয় না। মানা হলো কি হলো না তা দেখার কেউ নেই। সংক্ষুব্ধ কেউ প্রেস কাউন্সিলে মামলা করলেই কেবল বিষয়টি বিচার করা হয়। সম্প্রচার কমিশনে এই ধারাটি বদলাতে হবে। কে মামলা করল না করল সেটা না দেখে কমিশন নিজেই উদ্যোগী হয়ে আচরণবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সচেষ্ট না হলে স্বাধীন ও দায়িত্বশীল সম্প্রচারমাধ্যম গড়ে উঠবে না।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য গাইডলাইন তৈরি করা হয় প্রায় দুই দশক আগে। তখন সরকারি এই মাধ্যম দুটিই ছিল দেশের চালু সম্প্রচারমাধ্যম। এখন পরিস্থিতি অনেক বদলে গেছে। বর্তমানে তিনটি সরকারিসহ মোট ৪৪টি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন রয়েছে। এর মধ্যে দুটি চ্যানেলের সম্প্রচার সরকারি নির্দেশে স্থগিত রাখা হয়েছে, চালু রয়েছে ১৬টি। সাম্প্রতিক সময়ে অনুমোদন পাওয়া টিভি চ্যানেলগুলো এ বছর বা আগামী বছর চালু হতে পারে। অন্যদিকে ৭৫টি অনলাইনভিত্তিক পত্রিকা, ২২টি এফএম ও ৩২টি কমিউনিটি রেডিও রয়েছে।
সম্প্রচার নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা কেউ অস্বীকার করেন না। নীতিমালা থাকলে অহেতুক বিতর্ক এড়ানো সম্ভব। তবে বর্তমান নীতিমালাটি অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক। কমিশন কেবল সুপারিশ করবে সরকারের কাছে। শাস্তি বিধানের ক্ষমতা সরকারের হাতে রাখা হয়েছে। এতে সম্প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন্ন হবে। এটা বুঝতে হবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হওয়া মানে জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত হওয়া। বিধিনিষেধের খৰ নয়, সম্প্রচার নীতিমালা হওয়া দরকার সঞ্চালনমুখী। নীতিমালা হতে হবে সুশৃঙ্খল সম্প্রচারমাধ্যম গড়ে তোলায় সহায়ক শক্তি। প্রথম অধ্যায়ে উল্লিখিত গণমাধ্যমগুলোর অধিকতর স্বাধীনতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য নিয়ন্ত্রণ নয়, প্রয়োজন আসলে সহযোগিতার। পাকিস্তান আমলের মতো কেবল 'ধরো ধরো' একটা ভাব নীতিমালাজুড়ে। নিয়ন্ত্রণ করলেই যেন সব কিছু পক্ষে এসে যাবে- এ রকম একটি ভ্রান্ত ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এটি।
ছয়টি অধ্যায়ের নীতিমালাটি অত্যন্ত দীর্ঘ এবং তাতে অনুসরণীয় নিয়মাবলিও উল্লেখ করা আছে। যদিও নীতিমালায় বলা হয়েছে সম্প্রচার কমিশন সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান এবং নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের জন্য অনুসরণীয় নিয়মাবলি (code of guidance) তৈরি করবে। প্রথম অধ্যায়ে পটভূমি, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য, প্রধান দিকগুলো, কৌশলগুলো এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ে সম্প্রচার লাইসেন্স প্রদান সম্পর্কে বলা হয়েছে। তিন থেকে চার অধ্যায় হলো অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপন সম্প্রচার ও সম্প্রচারের অনুপযুক্ততাবিষয়ক নীতিগুলো। ষষ্ঠ অধ্যায়ে রয়েছে সম্প্রচার কমিশন গঠন, এর দায়িত্ব এবং অভিযোগ ও নিষ্পত্তি।
তিন অধ্যায়ে অনুষ্ঠান সম্প্রচার-সংক্রান্ত নীতিমালায় প্রথামাফিক কিছু কথা বলা হয়েছে। তবে (৩.২.৩ ধারা) প্রাইভেট টেলিভিশনে সরকার কর্তৃক জারীকৃত প্রেসনোট প্রচার কেন বাধ্যতামূলক হবে? জরুরি আবহাওয়া বার্তা ও দুর্যোগের সময় স্বাস্থ্য বার্তা জনস্বার্থে প্রচার করা সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এখানেও জোর করার কিছু নেই। তবে সরকারের প্রচারণা বাধ্যতামূলক করার জন্য একটি কৌশল নেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা ও সরকার কর্তৃক সময় সময় অনুমোদিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান ইত্যাদির আড়ালে। একদিকে (৩.২.১ ধারা) 'অনুষ্ঠানে সরাসরি বা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্য বা মতামত প্রচার করা যাবে না' বলা হয়েছে অন্যদিকে ৩.২.৩ ধারা বলে সরকার নিজস্ব রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাবে। এটি বৈষম্যমূলক নীতি এবং সব মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
নীতিমালার একমাত্র ইতিবাচক দিক হলো চার অধ্যায়ে বিজ্ঞাপন প্রচারসংক্রান্ত কয়েকটি ধারা। এতে ভোক্তা অধিকার (৪.২), শিশু ও নারীর অধিকার (৪.৪) গুরুত্ব পেয়েছে।
তবে পাঁচ অধ্যায়ে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের অনুপযুক্ততা অংশে এসে নীতিমালাটি 'খৰ' হয়ে ধরা দিয়েছে। এখানে দেওয়া নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে সরকার ইচ্ছা করলে প্রায় সব অনুষ্ঠানই আটকে দিতে পারবে। ভাষা ও শব্দ চয়ন সেভাবেই রাখা হয়েছে। ৫.১.৫ ধারায় বলা হয়েছে 'রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে- এমন ধরনের সামরিক বা বেসামরিক গোপন তথ্য ফাঁস' করা হবে অনুপযুক্ততা। সরকার বিব্রত হতে পারে এমন যেকোনো তথ্য এই ধারার আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার সুযোগ থাকবে। ৫.১.৭ ধারায় অনুপযুক্ততা ধরা হয়েছে সশস্ত্রবাহিনী অথবা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত দায়িত্বশীল অন্য কোনো বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ, বিদ্রূপ বা অবমাননা, অপরাধ নিবারণ ও নির্ণয়ে অথবা অপরাধীদের দণ্ডবিধানে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের হাস্যস্পদ করে তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করে- এমন দৃশ্য প্রদর্শন বা বক্তব্য প্রদান; প্রশ্ন হলো একজন সদস্যের দুর্নীতির খবর বা নাটকে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত দেখানো কি পুরো বাহিনীর অবমাননা হবে? সশস্ত্রবাহিনী অথবা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত দায়িত্বশীল অন্য কোনো বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ, বিদ্রূপ বা অবমাননা করে কোনো সংবাদ বা অনুষ্ঠান প্রচার বা লেখা প্রকাশিত হওয়ার কোনো নজির নেই। মিডিয়া বরাবরই এ ব্যাপারে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে।
এখানে শুধু ৫.১.১০ ও ৫.১.১১ ধারা দুটি সমর্থন করা যায়। এতে নিষেধ করা হয়েছে 'ধর্ষণ, ব্যভিচার, নারী ও শিশুর ওপর অপরাধমূলক আক্রমণ, নারী ও শিশুদের নিয়ে অবৈধ ব্যবসা, উত্ত্যক্তকরণ, পতিতাবৃত্তি এবং দালালি, কামুক বা অশোভন দেহভঙ্গি, নৈতিক মান অনুযায়ী গ্রাহ্য শয্যা দৃশ্যের বহির্গত কোনো দৃশ্য সংযোজন; শারীরিক নিগ্রহ বা মাত্রাতিরিক্ত প্রসব বেদনা প্রদর্শন, যৌন ব্যাধি, অতিমাত্রায় রক্তক্ষরণ, জখম ও ছেদন ইত্যাদি দৃশ্য, সত্যিকার ফাঁসিতে লটকানো বা বীভৎস হত্যাকাণ্ড, শ্বাসরোধ করে এবং আত্মহত্যার দৃশ্য প্রদর্শন।'
টিভি সাংবাদিকতায় এখনো সংবেদনহীনতার মাত্রা বেশি। বিশেষ করে দুর্যোগ রিপোর্টিংয়ের সময় তা ধরা পড়ে। সাধারণভাবে রিপোর্টারের খবর সংগ্রহের চেয়ে অন্যের বক্তব্য দিয়ে রিপোর্ট শেষ করার প্রবণতা দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে। নিষেধাজ্ঞার নীতিমালায় এই পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে।
নৈতিকতার প্রসঙ্গটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও সম্প্রচার নীতিমালায় এ নিয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি। বেসরকারি টেলিভিশনের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নীতি অনুসরণ করা হয়নি বলে সেসব 'রাজনৈতিক লাইসেন্স' হয়ে গেছে। রেডিওর বেলায়ও অনেকটা সে রকম হয়েছে। এতে সরকারের আস্থাভাজন ব্যক্তিরা লাইসেন্স পাওয়ায় সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ থাকছে না। এ কারণে গণমাধ্যম মৌলিক ভূমিকা পালনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নীতিমালায় এসব বিষয়ে কোনো বক্তব্য পেলাম না। পেইড নিউজ বা কেনা সংবাদ নিয়েও কোনো বক্তব্য নেই নীতিমালায়। সাম্প্রতিক সময়ে কেনা সংবাদ টিভি ও সংবাদপত্রে প্রচার ও প্রকাশে কালো সাংবাদিকতার ক্ষেত্র বাড়িয়ে দিচ্ছে। একই সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে কোনো সংবাদ না ছাপানোর ব্যাপারটিও পেইড নিউজ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য থাকা প্রয়োজন।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত একটি অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্বাচিত করবে। আমার মতে, এর গঠন প্রক্রিয়ায় নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। এর আগে গঠিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশন, আইন কমিশন যথাযথ দায়িত্ব পালনে সফল হয়নি। ফলে সম্প্রচার কমিশন সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রাখার বিষয়টি খুবই জরুরি। 'আজ্ঞাবহ কমিশন' সরকারকে খুশি করলেও তা সম্প্রচারমাধ্যমের উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
সার্বিক বিবেচনায় নীতিমালাটি নিয়ন্ত্রণমূলক। এটি বাদ দিয়ে সঞ্চালনমুখী নতুন নীতিমালা তৈরি হোক। সেই নীতিমালার মূল সুর হবে একটি স্বাধীন ও দায়িত্বশীল সম্প্রচারমাধ্যম গড়ে তোলা। সে দায়িত্ব সম্প্রচার কমিশন স্বাধীনভাবে পালন করুক। এই মুহূর্তে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হবে অবিলম্বে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অংশীজনদের অংশগ্রহণে কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা।
লেখক : সাংবাদিক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন